২০ শয্যায় ৬৬ শিশু |
নিজস্ব সংবাদদাতা• রঘুনাথগঞ্জ |
জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে আরও এক জন শিশুর মৃত্যু হওয়ায় গত তিন দিনে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০ জন। ভর্তি থাকা ৪ শিশুর অবস্থা সঙ্কটজনক। এদিকে হাসপাতালের শিশু বিভাগে ২০টি বেড থাকলেও ৬৬ জন শিশু রোগী ভর্তি রয়েছে। কোনও কোনও বেডে তিন জন শিশু রয়েছে। বাকিদের স্যাঁতসেতে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে একটি মাত্র ঘর নিয়ে চলা শিশু বিভাগে এই মুহূর্তে পা ফেলার জায়গা নেই। তার মধ্যেই শিশু বিভাগে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেড়াল। |
|
বহরমপুর হাসপাতালে পড়ে রয়েছে অব্যবহৃত যন্ত্রপাতি |
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনে জঙ্গিপুর হাসপাতালে ৫৪৩ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে মারা গিয়েছে ৪৫ জন। জুলাই মাসের গত ১০ দিনে শিশু ভর্তির সংখ্যা ১৭২ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। সুপার শাশ্বত মণ্ডল বলেন, “স্বাভাবিক অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় গড়ে ১.৫ জন শিশুর। স্বাভাবিক ভাবেই গত দু-দিনে ৯ জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা কিছুটা অস্বাভাবিক তো বটেই।” তবা তাঁর সাফাই, “হাসপাতালে যে ৯ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাদের সকলেরই জন্ম বাড়িতে। মৃতদের মধ্যে ৭ জনের বয়স ১ দিন থেকে ৪ দিন। ২ জনের বয়স বছর দেড়েক। সদ্যজাতদের সকলেরই জন্ম বাড়িতে বা নার্সিহোমে। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ায় তাদের পাঠানো হয় হাসপাতালে। এদের মধ্যে ৪ জনকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। |
|
জঙ্গিপুরে একই শয্যায় রাখা হয়েছে তিনটি শিশুকে। |
কিন্তু শিশুদের আত্মীয়রা তাতে রাজি হননি।” সুপার বলেন, “সংক্রমণ, শ্বাসকষ্টজনিত ও অপুষ্টির কারণেই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের কোনও গাফিলতির প্রমাণ মেলেনি।” হাসপাতালে ৪ জন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। সুপার বলেন, “চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত হয়েছে শিশু বিভাগকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়ে পৃথক ওয়ার্ড হিসেবে রাখতে হবে। ২৪ ঘন্টার জন্য মেডিক্যাল টিম থাকবে ওই ওয়ার্ডে এবং সংক্রমণ ঠেকাতে শিশু বিভাগে অতিরিক্ত লোকজনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করার। ইতিমধ্যেই তা চালু করা হয়েছে।”
শনিবার রাতে শেষ যে শিশুটি মারা গিয়েছে, তার বাড়ি সামশেরগঞ্জের লস্করপুর গ্রামে। শুক্রবার বিকেলে তার জন্ম হয় ধুলিয়ানের একটি নার্সিংহোমে। শনিবার বিকেলে তাকে আনা হয় জঙ্গিপুর হাসপাতালে। |
নিজস্ব চিত্র। |
|