বাজার নরক মাল্লাগুড়িতে
বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে লিচু পাতার স্তূপ। পচা আম, আপেল, পেয়ারা, আলু, পেঁয়াজ, বাঁধাকপি ছড়িয়ে ছিটিয়ে। নর্দমা উপচে পড়ছে নোংরা জলে। শুধু তাই নয়, নিকাশি নালার শুরু কোথায় আর শেষ কোথায় তা জানেন না অনেকেই। পচা মাছ এবং মাছ ঢাকার থার্মোকলে ছেয়ে রয়েছে বহু জায়গায়। এমনই পূঁতিগন্ধ পরিস্থিতি, দূষণে ছেয়ে রয়েছে শিলিগুড়ি শহরের মাল্লাগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি এলাকা। শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে রোজ বাজার সমিতি এলাকার আবর্জনা তোলা, সাফাই-এর কাজ করা হয়। তবে পুরসভা নয়, নিয়ন্ত্রিত বাজার কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বেআইনি নির্মাণ এবং পরিকল্পনা বিহীন নিকাশি ব্যবস্থার জন্যই বাজারের এহেন হাল বলে মনে করছেন মন্ত্রী থেকে প্রশাসনিক কর্তারা। দায়িত্ব নেওয়ার পর গত সপ্তাহেই শিলিগুড়ি এসেছিলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। বাজার সমিতি নিজে ঘুরে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী। এমনকি, কয়েক জায়গায় কাদা, নোংরা জল পেরিয়ে বাজারে ঘুরতে হয়েছে মন্ত্রীকে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, শিলিগুড়ি পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে নিয়ন্ত্রিত বাজারের নতুন চেয়ারম্যান শিলিগুড়ি মহকুমাশাসককে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “দুর্নীতি, অনিয়মের পাশাপাশি বাজারটির হাল খুব খারাপ। নোংরা আবর্জনা ছেয়ে থাকছে। নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক নেই। জলে ভরে থাকছে। কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায় তার জন্য চেয়ারম্যানকে স্থানীয় মন্ত্রী, পুরসভার সঙ্গে কথা বলতে বলেছি।” কৃষি বিপণন দফতর সূত্রের খবর, প্রতি মাসে বাজারের সাফাইয়ের জন্য নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি পুরসভাকে ৮০ হাজার টাকা দেয়। এ ছাড়া সম্পত্তি কর (প্রোপার্টি ট্যাক্স) বাবাদ ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেয়। ফল, সবজি, আলু-পেঁয়াজ, মাছ মিলিয়ে বাজারে ৫০০ উপর দোকান রয়েছে। শহরের ২৫০-৩০০ টন আবর্জনার অনেকটা অংশ বাজার এলাকা তৈরি হয়। পুরসভার কর্মীরা প্রতিদিন সকালে ৪-৫ দফায় ট্রাক নিয়ে বাজার পরিষ্কার করে। তবে বিভিন্ন কারণে যথেষ্ট নয়। গত বছরের পুজোর মরশুমে এবং চলতি বর্ষার আগেও পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের তরফে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিকে চিঠি দিয়ে বেশ কিছু পরিকাঠামোগত পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে সেগুলি এখনও কার্যকর না হওয়ায় দিনের পর দিন সমস্যা বাড়ছে বলেই পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য। পুরসভার তরফে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে যে বিষয়গুলি জানানো হয়, এর অন্যতম নিকাশি নালা। বাজারের বেশিরভাগ নিকাশি নালার শুরু এবং শেষ কোথায় তা জানা যায় না। সামনে জাতীয় সড়কের পাশে জলাশয়ের সঙ্গে সেগুলিকে জুড়ে দিতে বলা হলেও কাজ হয়নি। তাতেই নোংরা জল ভিতরে থেকে উপচে পড়ে। বহু জায়গায় টানা ৫০-১০০ মিটার নর্দমা দখল করে তার উপরে গুদাম বা ঘর তৈরি হয়েছে। এতে ওই নর্দমাগুলি রোজ সাফাই করা সম্ভব হয় না। অতিরিক্ত পার্কিং-এর টাকা না দেওয়ার জন্য পণ্যবাহী ট্রাকগুলি সকাল ভোর ৬টা’র পর একযোগে ভিতরে ঢুকে পড়ে। এমনকি, পাকিং ব্যবস্থা ঠিকঠাক না থাকায় পুরানো নোংরায় উপরেই দাঁড়িয়ে মাল ওঠানামানোর কাজ করা হয়। এতে বেলা গড়িয়ে যাওয়ায় পুরকর্মীরা চলে যাওয়ায় ময়লা, আবর্জনা জমে থাকে। এ ছাড়া রাস্তার উপরে মাল ঝাড়াই বাছাই করে সারাদিন নোংরা ফেলে রাখা এবং মাছের প্যাকিং হিসাবে থার্মোকল ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলায় সমস্যা বেড়েছে। এই অবস্থায় আগামী দিনে কর্মী, ট্রাকের যাতায়াতের সংখ্যা বাড়াতে গেলে পুরসভার পক্ষে ওই টাকায় কাজ করা সম্ভব নয় বলে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিকে জানানো হয়েছে। পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) সুজয় ঘটক বলেন, “ওখানে পরিকল্পনা বিহীনভাবে নিকাশি ব্যবস্থা চলছে। নোংরা ফেলা সুনির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত নেই। নর্দমা দখল হয়েছে। দুই বার চিঠি দিয়ে বাজার কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হয়েছে। ওঁরা এসব ঠিক না করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।’’
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.