মেধা থাকলে টাকার অভাব হবে না
মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নম্বর ভাল হলে ঝকঝকে একটা কেরিয়ার গড়ার স্বপ্নটা আরও জোরালো হয়। কিন্তু ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিজ্ঞানের কোনও শাখায় পড়ার খরচ স্কুলের থেকে অনেক বেশি। কলেজ ফি, ল্যাবরেটরি বা প্রজেক্ট-এর খরচ, মোটা মোটা পাঠ্যপুস্তক বা বিদেশি রেফারেন্স বই কিনে আরও কয়েক বছর ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ টানার সামর্থ্য অনেক পরিবারের থাকে না। কিন্তু যোগ্যতা থাকলে, সঙ্গতির অভাবের জন্য থেমে যাওয়ার কারণ নেই। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কলারশিপের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। নিম্নবিত্ত, তফসিলি জাতি-জনজাতি বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়া, স্বপ্ন দেখতে বাধা নেই কারও।
ডাক্তারি পড়ার জন্য এশিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন স্বল্পবিত্ত পরিবারের ছাত্রদের ‘উদয়ের পথে’ স্কলারশিপ দেয়। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মেডিক্যাল বিভাগের প্রস্তুতির জন্য দুই বছরের বৃত্তি দেওয়া হয়। তার জন্য ২০১১-র মাধ্যমিক পরীক্ষায় অন্তত ৮৫% নম্বর পেতে হবে। এমবিবিএস পড়ার জন্য সাড়ে চার বছর বৃত্তি দেওয়া হয়। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রথম ১০০০ জন আবেদন করতে পারে। মার্কশিটের ফোটোকপি, পারিবারিক আয়ের প্রমাণপত্র ও বিদ্যালয় অধ্যক্ষের সুপারিশ আবশ্যিক। এ ছাড়া ‘আমি কেন উদয়ের পথে বৃত্তির যোগ্য’ এই বিষয়ে ভাষায় ২৫০ শব্দের রচনাও জমা দিতে হবে। যোগাযোগ- রবীন্দ্রনাথ টেগোর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেস, ১২৪ মুকুন্দপুর, ইএম বাইপাস, কলকাতা-৯৯। ফোন ৯০০৭০৯৪৮৬০/ ২৪৩৬-৪০০০।
নিম্নবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘মেরিট কাম মিনস’ স্কলারশিপ দেয়। যে সব ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল মাদ্রাসা পরীক্ষায় অন্তত ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে এবং যাদের পরিবারের বার্ষিক উপার্জন ৮০ হাজার টাকার মধ্যে, তারাই আবেদন করতে পারে। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতক স্তরে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত অনুদান পাওয়া যায়। ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্রদের জন্যেও আর্থিক সহায়তার বন্দোবস্ত রয়েছে। বিশদে জানতে বিধান নগরে বিকাশ ভবনের শিক্ষা দফতরের স্কলারশিপ বিভাগে যোগাযোগ করা যাবে। ফোন: ২৩২১-৭১৫৫। ওয়েবসাইট: www.higherednwb.net
মাধ্যমিকে অঙ্ক ও বিজ্ঞান শাখায় যারা অন্তত ৭৫% পেয়ে বিজ্ঞান নিয়ে একাদশ বা দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছে, তারা ‘কিশোর বৈজ্ঞানিক প্রোৎসাহ যোজনা’য় অংশগ্রহণ করতে পারে। এই প্রকল্পে বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল শাখায় স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। স্কলারশিপটি প্রতিযোগিতামূলক। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্ররা ফেলোশিপ বাবদ মাসে চার হাজার টাকা ও বছরে কন্টিজেন্সি গ্রান্ট বাবদ ১৬ হাজার টাকা পাবে। ১৫ জুলাই থেকে অনলাইনে ফর্ম পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইট: www.kvpy.org.in
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি, ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার মেধাবী ছাত্রদের ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন স্কলারশিপ দেয়। তফসিলি জাতি ও জনজাতি, প্রতিবন্ধী ও মেয়েদের জন্য বিশেষ বৃত্তি প্রকল্প রয়েছে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিকে ৬৫% নম্বর ও তফসিলি জাতি বা জনজাতি ভুক্ত পড়ুয়ারা ৬০% নম্বর পেলেই আবেদন করতে পারে। এ বছর কর্তৃপক্ষ প্রায় ২,৬০০ ছাত্রছাত্রীকে স্কলারশিপ দেবেন। বিজ্ঞপ্তি বেরোয় অগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে। ওয়েবসাইট: www.iocl.com
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স প্রতি বছর ভারতীয় পড়ুয়াদের ইয়ুথ স্কলারশিপ দেয়। মাধ্যমিকে ৮৫% নম্বর পেলে ও ইংরেজি প্রথম ভাষা হলে আবেদন করা যায়। নির্বাচিত ছাত্ররা ফুল স্কলারশিপ পেয়ে সিঙ্গাপুরের সেরা জুনিয়র কলেজে ও পরে সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগও পাবে। ২০১২ শিক্ষাবর্ষে আবেদন করার শেষ তারিখ ১৫ জুলাই। ওয়েবসাইট: www.siascholarship.com
প্রায় প্রতিটি ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে দুঃস্থ ছাত্রদের জন্য টিউশন ফি মকুব, বইপত্র কেনার জন্য অনুদান এবং আরও অন্যান্য ছাড় পাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে (http://www.becs.ac.in/) ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে মোট ছাত্রসংখ্যার ১০%-কে বৃত্তির জন্য বেছে নেওয়া হয়। তাদের টিউশন ফি পুরো বা অধের্ক মকুব করে দেওয়া হয়। প্রাক্তনীদের সংগঠনগুলি এই বিষয়ে অনেক সাহায্য করে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (http://www.jaduniv.edu.in/) প্রায় ২৫% ছাত্রের টিউশন ফি কমিয়ে দেওয়া হয় ও অনেকেরই অবৈতনিক পঠনের ব্যবস্থা করা হয়। স্নাতকোত্তর স্তরে মেয়েদের জন্য রয়েছে ইন্দিরা গাঁধী স্কলারশিপ। এ ছাড়া রয়েছে রাজীব গাঁধী স্কলারশিপ ফর এস সি অ্যান্ড এস টি স্টুডেন্টস।
বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও বেশ কিছু স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। যারা বাণিজ্য বিভাগে পড়তে চায়, তারা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার ‘ইয়াং স্কলারস অ্যাওয়ার্ড স্কিম’-এ অংশ নিতে পারে। এই প্রকল্পে সারা দেশ থেকে প্রায় ১৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে বাছাই করা হয়। তারা ব্যাঙ্কের বিশেষ প্রজেক্ট-এ অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। স্নাতক স্তরে পাঠরত ছাত্রছাত্রীরাই লিখিত পরীক্ষায় বসার সুযোগ পায়। বাংলা মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আছে। ওয়েবসাইট: www.rbi.org.in/youngscholars.aspx
বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান বা ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার বিভিন্ন স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। ওয়েবসাইট: www.ncert.nic.in
আর্থিক সাধ্য অল্প হলেও হতাশ হবার কারণ নেই। তোমার মেধা ও পরিশ্রমই পুঁজি হয়ে দাঁড়াবে।
Previous Item Prostuti Next Item


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.