|
|
|
|
বর্ষার কাদা রাস্তায় নাজেহাল পুলিশও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
বছরের পর বছর যায়, পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় না। গ্রামের মাটির রাস্তা পাকা হয় না। আর সেই রাস্তা সেই কাদায় ভরা। রাতের টহলদারি কিংবা দুষ্কৃতীদের পিছু ধাওয়া করা, সবেতেই নাকাল করছে বৃষ্টি ভরা কাদা মাটি। তার উপরে আকাশে মেঘ জমলেই লোডশেডিং। বহু গ্রামে বিদ্যুৎ পর্যন্ত আসেনি। সব মিলিয়ে নাজেহাল তেহট্ট মহকুমার পুলিশ-প্রশাসন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা বছরের মধ্যে শীত আর বর্ষা এই দু’টো সময়েই বেশি সতর্ক থাকতে হয় পুলিশকে। পরিসংখ্যান বলছে, এই সময়েই ছোটখাটো অপরাধের সংখ্যা বেড়ে যায়। নদিয়া জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার কথায়, এই সময়ে মানুষ একটু তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে পড়েন। বাড়ি থেকে সকালে বেরোনও দেরি করে। ফলে একটি রাত হলেই বা ভোরের দিকে রাস্তা বা বাজারে তেমন লোক থাকেন না। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগায় দুষ্কৃতীরা। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রাকৃতিক অসুবিধাও। যেমন, শীতকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া থাকে চরাচর। তখন রাস্তা থেকে মাঠে নেমে গেলেই কুয়াশার আড়ালে পালানো সোজা। বর্ষাকালে দুষ্কৃতীরা কাদা মাখা পিছল রাস্তার সুযোগ নেয়। তাই একটু বেশি সতর্কই থাকতে হয়।
কিন্তু তাতেও বেহাল নিকাশি ও বেহাল রাস্তার কাছে পদে পদে হোঁচট খেতে হচ্ছে। পুলিশের গাড়ি অনেক গ্রামের রাস্তাতেই ঢোকে না। পায়ে হেঁটে পুলিশ দুষ্কৃতীর বাড়ি যেতে যেতে সে পালিয়ে যায় অনায়াসে। তেহট্টের মহকুমা পূুলিশ আধিকারিক রাহুল গোস্বামী বলেন, ‘‘বর্ষার সময় চুরি ছিনতাই বেড়ে যায়। আমরাও সতর্ক থাকি। কিন্তু বেহাল রাস্তা বা নিকাশির কারণে আমাদের অসুবিধাতেও পড়তে হয়।”
তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, “মহকুমা এলাকার রাস্তাঘাটের অনেক উন্নতি হয়েছে। যে সব রাস্তার অবস্থা ভাল নয়, বা যেখানকার নিকাশি খারাপ, সে সব এলাকায় পঞ্চায়েতগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সে সব মেরামত করতে।”
কিন্তু সমস্যা রয়েছে থানার টেলিফোনেও। করিমপুরের বাসিন্দা অরবিন্দ শিকদার বলেন, “আমার বাড়িতে সম্প্রতি চুরি হয়েছিল। কিন্তু থানাতে বারবার টেলিফোন করেও লাভ হয়নি। টেলিফোন খারাপ। তারপরে নিজে গিয়ে থানাতে খবর দিয়েছি।” স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, থানার টেলিফোন খারাপ থাকলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তো সঙ্গে সঙ্গে খবরই দেওয়া যাবে না। দুষ্কৃতীরা হাসতে হাসতে পালিয়ে যাবে। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাহুলবাবুর বলেন, “টেলিফোন দফতরে আমরা বহুবার জানিয়েছি। সাময়িক ভাবে ঠিক হয়, আবার খারাপ হয়ে যায়।” মহকুমাশাসক অচিন্ত্যবাবুও বলেন, “টেলিফোন পরিষেবা যাতে অকেজো না হয়ে পড়ে, সে জন্য জেলা টেলিকম দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি।”
কিন্তু তার পরেও রয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমস্যা। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের তেহট্টের ডিভিশনাল ম্যানেজার দ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য বলেন, “টানা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় না। বর্ষার সময় বা ঝড় উঠলে সাময়িক গোলযোগ হয়। তবে আমরা তা তাড়াতাড়ি সারিয়ে ফেলি।” |
|
|
|
|
|