|
|
|
|
সেকেন্দ্রায় সিপিএম নেতাদের যোগ কংগ্রেসে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
সেকেন্দ্রায় সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক-সহ দলের চার সদস্য দলবদল করে কংগ্রেসে যোগ দিলেন। তাঁদের সঙ্গে সিপিএম থেকে কংগ্রেসে গিয়েছেন ৪৭০ জন। সিপিএমের জেলা স্তরের নেতাদের দাবি, ওই সদস্যদের ‘জোর করে’ কংগ্রেসে যোগ দিতে ‘বাধ্য’ করা হয়েছে। কংগ্রেস অবশ্য দাবি করেছে, কাউকে কোনও জোর করা হয়নি। যাঁরা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা স্বেচ্ছায় এসেছেন।
দলবদলের পরে কেউ বাড়ি ফিরলেন দেড় বছর পরে। কেউ ফিরলেন কয়েক মাস পরে। তাঁদের মধ্যে সেকেন্দ্রা লোকাল কমিটির সম্পাদক সাজিরুদ্দিন শেখ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ঘরছাড়া রয়েছি। আমি অসুস্থ। আমার বাইপাস সার্জারি হয়েছে। এ ভাবে গ্রামের বাইরে থাকা যায় না। শান্তিতে থাকার জন্যই গ্রামের লোকের কথা মেনে শান্তিতেই থাকতে চাই। তাই কংগ্রেসের পতাকা না মেনে উপায় কী?” ভাঙরপাড়ার বাসিন্দা প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুস সাত্তার শেখ, খালবোয়ালিয়ার মতিউর রহমান, খেজুরতলার কাজেম শেখ-সহ দলের নেতাদের একাংশ ঘরছাড়া হয়েছিলেন ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে। আব্দুস সাত্তার বলেন, “পরিবর্তনের হাওয়া বইছে গোটা গ্রামে। গ্রামে এখন একশো শতাংশ লোকই কংগ্রেস করে। আগে তাঁরাই সিপিএম করতেন। দীর্ঘদিন ধরে ঘরছাড়া, তাই আমিও পরিবর্তিত হলাম। এ বার থেকে কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে কাজ করব।” |
|
কংগ্রেসের পতাকা কাঁধে গ্রামে ফেরা। |
তবে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃণাল মজুমদার বলেন, “সেকেন্দ্রায় কেউ কাউকে জোর করে ঘরছাড়া করেছিল, এমন কোনও অভিযোগ করা হয়নি। নির্বাচনের পরে যে কোনও কারণেই হোক, ওই ব্যক্তিরা গ্রামের বাড়ি ঘর দোর ছেড়ে চলে যান। সেই থেকে বাড়ির পুরুষ কর্তারা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। কিন্তু বাড়ির মহিলারা বাড়িতেই থাকতেন। তাঁরা পুলিশের কাছে কখনও ঘরে ফেরার জন্যও আবেদন করেনি। পুলিশের সাহায্য যদি কেউ চান, তা হলে তাঁকে সব রকম সাহায্য দিয়ে গ্রামে ফেরাবে পুলিশ।” তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক ভাবে কে কোন দলে যোগ দিল, কেন দিল, তা তাঁদের ব্যাপার।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক নৃপেন চৌধুরী বলেন, “সেকেন্দ্রার সিপিএম কর্মীরা কেন দল ছেড়ে গিয়েছেন, তা তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন। দলের মধ্যে আগে বহু দুর্দিন এসেছে। কিন্তু কর্মীরা দল ছেড়ে যায়নি। রাজ্য জুড়ে এখন গাজোয়ারি সন্ত্রাস চলছে। সেকেন্দ্রায় তাই হয়েছে।” স্থানীয় কংগ্রেস নেতা প্রকাশ সাহার অবশ্য বক্তব্য, “আমরা কাউকে বাধ্য করিনি দলবদল করতে। কাউকে জোর করাও হয়নি। যাঁরা আমাদের দলে এসেছেন, তাঁরা স্বেচ্ছায় এসেছেন। কেউ কংগ্রেস করতে চাইলে তো তাঁদের আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি না।”
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য কিন্তু দাবি করেছেন, “গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে লাগাতার সন্ত্রাসের জন্যই দলের নেতা কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামছাড়া ছিলেন না। তাঁদের বাড়ি-ঘর-বাগান সব রয়েছে। সে সব লুঠপাট করে নেওয়া হয়েছে। তাই ওই নেতা কর্মীরা আত্মরক্ষার খাতিরেই দলত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এই অবস্থায় সেকেন্দ্রা লোকাল কমিটি ভেঙে দিয়ে তা মিঠিপুর লোকাল কমিটির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।” |
|
|
|
|
|