|
|
|
|
মেদিনীপুর সংশোধনাগার |
দ্রুত ঘর খালির নির্দেশ সংগঠনকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আগেও এক দফা নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কারারক্ষী সংগঠনের দখলে থাকা ঘর ফাঁকা হয়নি। রাজ্যে পালাবদলের পর ফের এক দফা নোটিস দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে ঘর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। কারা দফতরের ডিআইজি (মেদিনীপুর) শোভন দীনের বক্তব্য, “নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। আগেও নোটিস দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেল চত্বর ও তার আশপাশে তিনটি ঘর কারারক্ষী সংগঠনগুলো দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ। ভিজিটর্স রুম রয়েছে দুই বামপন্থী সংগঠনের দখলে। আর জাতীয়তাবাদী এক সংগঠন পাম্প-হাউসে কার্যালয় খুলেছে! তিনটি সংগঠনকেই ঘর ছেড়ে দেওয়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে। জেল-চত্বরে কর্মীদের আবাসনও খালি করার তোড়জোড় চলছে। সবই নিরাপত্তার খাতিরে।
মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে প্রায় এক হাজার বন্দি রয়েছেন। কারও বাড়ি জেলাতেই, কেউ আবার বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার বাসিন্দা। জেলবন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে দূরদূরান্ত থেকেই পরিজনেরা আসেন। কিন্তু ভিজিটর্স রুম না থাকায় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। সংশোধনাগারের সামনের গাছতলাই তাঁদের ভরসা। জেল চত্বরে আগে ভিজিটর্স রুম ছিল। কিন্তু সেই ঘর আপাতত দুই বামপন্থী কর্মচারী সংগঠনের দখলে। একটিতে রয়েছে আরএসপি নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমবঙ্গ কারারক্ষী সমিতির কার্যালয়। অন্যটিতে সিপিএম নিয়ন্ত্রিত ‘কারারক্ষী সমিতি, পশ্চিমবঙ্গ’র কার্যালয়। এখন যেখানে পশ্চিমবঙ্গ কারারক্ষী সমিতির কার্যালয় রয়েছে, ভিজিটর্স রুম হওয়ার আগে সত্তরের দশকে সেখানেই ছিল রিজার্ভ ব্যারাক। নকশাল আন্দোলনের সময়ে সংশোধনাগারের নিরাপত্তা বেড়েছিল। বাইরে সেন্ট্রিদের থাকার জন্য একটি ঘর তৈরি করা হয়। এখন সেখানে রয়েছে সিপিএম নিয়ন্ত্রিত কারারক্ষী কর্মচারী সংগঠনের কার্যালয়। জবরদখলের অভিযোগ রয়েছে জাতীয়তাবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধেও। তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত ‘বঙ্গীয় কারারক্ষী সমিতি’ পাম্প-হাউসের ঘর দখল করে সংগঠনের কার্যালয় খুলেছে। তবে সংগঠনগুলোর দাবি, জবরদখল নয়, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই কার্যালয় খোলা হয়েছে। এ দিকে, এই সংশোধনাগারে বহু মাওবাদী বন্দি রয়েছেন। ফলে, নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে সেই ব্যবস্থাও প্রশ্নাতীত নয়। ওয়াচ-টাওয়ারে রক্ষী না থাকার সুযোগেই ক’দিন আগে সংশোধনাগারের পাঁচিলের পাশে ৫ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে দিনেদুপুরে। জেল চত্বরে নাশকতা হতে পারে, বছর খানেক আগে গোয়েন্দারা এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এর পরেই সংশোধনাগার ও সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়। জবরদখল সরাতে সক্রিয় হন কর্তৃপক্ষ। আবাসন খালি করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই উদ্যোগ কার্যকর হয়নি। এ বারও যে সহজে কার্যকর হবে না, তা পশ্চিমবঙ্গ কারারক্ষী সমিতির বক্তব্যেই স্পষ্ট। সংগঠনের নেতা নিরুপম খাঁড়া বলেন, “জেল থেকে নিরাপদ দূরত্বেই আমাদের সংগঠনের কার্যালয় রয়েছে। ফলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না!” তাঁর দাবি, “আগে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তার পর কোয়ার্টার খালি হবে। না হলে কর্মীরা যাবেন কোথায়? তেমন হলে আমরা ধর্নায় বসব।” জেল সুপার প্রহ্লাদ সিংহ কুমার অবশ্য বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখেই নোটিস দেওয়া হয়েছে। সব সংগঠনকেই নির্দেশ মানতে হবে। না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
|
|
|
|
|