|
|
|
|
কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্প |
শুরু হয়নি জমি অধিগ্রহণ, কাজ শুরু হতে ঢের দেরি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আগের বছরই প্রকল্প অনুমোদন করে অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এ বছর বর্ষা এসে গিয়েছে। কিন্তু কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাগুই বেসিন প্রকল্পের কাজ এখনও শুরুই হয়নি। সামনের বছর বর্ষার সময়েও প্রকল্প বেশি দূর এগোনোর আশা কম।
প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য জন্য প্রাথমিক ভাবে যে জমি প্রয়োজন, তা-ই এখনও অধিগ্রহণ করা হয়নি। সবে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে। একটি জমি-ম্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাগুই বেসিনের (কেকেবি) জন্য প্রায় ৫০০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন। কিন্তু তার অধিকাংশটাই রায়তি জমি। নদীর দু’দিকেই জমি রয়েছে। নদী-সংস্কারে সে জমি অবশ্যই প্রয়োজন। জমি অধিগ্রহণ না করা গেলে কোনও কাজই এগোবে না। জমির জট যাতে না তৈরি হয়, সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করেছে প্রশাসন। প্রশাসনের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলি সাহায্যেরই আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কবে থেকে কাজ শুরু হবে? এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, “প্রায় ২৫০টি মৌজা থেকে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। কোথায় কত জমি প্রয়োজন তা ঠিক করা হয়েছে। এ বার মালিকদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।” ওই কাজ শেষ হওয়ার পরে শুরু হবে অধিগ্রহণ-পর্ব। জমি হাতে এলে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
সেচ দফতরের তিনটি বিভাগ এই কাজ করবে। সবং এলাকার মূল কাজ ও জমি অধিগ্রহণ তদারকি করবে সেচ দফতরের একটি বিভাগ। সবংয়ে অফিস করাও হয়েছে। আবার অন্য অংশে কাজ করবে সেচ দফতরের কাঁথি ডিভিসন এবং কিছু কাজ করবে পূর্ব মেদিনীপুর ডিভিসন (যার অফিস তমলুকে)। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সবংয়ে প্রধান নদী ও খালের সংখ্যা পাঁচটি। কেলেঘাই, কপালেশ্বরী, বাগুই, দেউলি ও চণ্ডীয়া। এ ছাড়াও আরও কয়েকটি ছোট খাল রয়েছে। প্রথমে ওই সব ছোট ছোট খালের সংস্কার হবে। তৈরি করা হবে বাঁধ। তার পর বড় নদীর সংস্কার হবে। বাঁধ, স্লুইস গেট তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই কিছু টাকা এসেও গিয়েছে। নির্বাচনের আগেই সেই টাকা এসে গিয়েছিল বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনী বিধির কারণে কাজ শুরু করা যায়নি। নির্বাচনের পরে নতুন সরকার গঠন, মন্ত্রীর দফতর ঠিক করা--এ সব নিয়েও সময় গিয়েছে। কাজ আর এগোয়নি। এ বার যখন নতুন উদ্যমে ফের কাজ শুরুর চেষ্টা হচ্ছে, তখনই এসে পড়েছে বর্ষা। ফলে কাজের কাজ বিশেষ হচ্ছে না। তবে প্রথম দফার কাজের কিছু পরিকল্পনা তৈরি করেছে সেচ দফতর। তার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষার মধ্যেই যাতে জমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে অধিগ্রহণের দিকে কিছুটা এগোনো যায়, আপাতত সেই চেষ্টা করা হবে। তার পর হবে অধিগ্রহণ, জমির মালিককে অর্থ প্রদান, জমির অধিকার নেওয়ার কাজ। এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পেরিয়ে মূল কাজ শুরু হবে। যা সামনের বছরের আগে কোনও ভাবেই কার্যত সম্ভব নয়। তবে প্রশাসনের দাবি, যে ভাবে প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে সবংয়ে আর বন্যা হবে না। সম্পূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। এখন দেখার কবে বাস্তবায়িত হয় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই প্রকল্প। |
|
|
|
|
|