রেলে না-থেকেও রয়েছেন তিনি, দেখালেন মমতা
দ থেকে সদ্য ইস্তফা দিয়েছেন। তবু রেলের আঙিনায় তিনি যে ভীষণ ভাবেই রয়েছেন, আজ কালকা মেল দুর্ঘটনার পরে তা স্পষ্ট হয়ে উঠল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রেলমন্ত্রিত্বের অভিজ্ঞতার পুঁজি কাজে লাগিয়ে দুপুর থেকেই সক্রিয় হলেন ত্রাণের কাজে।
এবং নয়াদিল্লির রাজনৈতিক মহলের মতে, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতার এ হেন সক্রিয়তার কারণ, এই মুহূর্তে রেলমন্ত্রক কার্যত পূর্ণমন্ত্রীহীন। মমতা ছাড়ার পরে পদটি শূন্যই রয়েছে। দীনেশ ত্রিবেদী পরবর্তী রেলমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিসভার আনুষ্ঠানিক রদবদল এখনও হয়নি। মুকুল রায় রয়েছেন রেল প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। আর রেল মন্ত্রক আপাতত খোদ প্রধানমন্ত্রীর অধীনে, যিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ত।
ফলে আজ দুপুর থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি মুকুলবাবুর মাধ্যমে আপৎকালীন ত্রাণের বিভিন্ন ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত ছিল মুখ্যমন্ত্রীর অফিসই। রবিবার ছুটি বলে মমতা আজ মহাকরণে যাননি। তবে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র কালীঘাটের বাড়িতে বসেই ফোনে ফোনে উদ্ধারকাজে তদারকি শুরু করে দেন। দুর্ঘটনাগ্রস্ত কালকা মেলের অধিকাংশ যাত্রী পশ্চিমবঙ্গের, অনেকে আবার কলকাতার বাসিন্দা। রেলের পদস্থ আধিকারিকদের ফোন করে যাত্রীদের সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ-খবর নিতে থাকেন। মুকুলবাবুকে নির্দেশ দেন হাওড়া স্টেশনে যেতে। এত বড় দুর্ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া দরকার বলেও মন্তব্য করেন মমতা।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব দেন আহতদের দ্রুত চিকিৎসার উপরে। গুরুতর আহতদের ঘটনাস্থলের কাছাকাছি হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে রেল-আধিকারিকদের অনুরোধ করার পাশাপাশি অল্প আহতদের কলকাতায় পাঠানোর কথাও বলেন তিনি॥
অন্য দিকে রেল প্রতিমন্ত্রী মুকুলবাবু বলেন, “দুপুর থেকে দফায় দফায় আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হচ্ছে। রাজ্যের তরফে সর্বতো সহযোগিতার কথা তিনি তো বলেইছেন, উপরন্তু ত্রাণের বিষয়েও সমস্ত পরামর্শ দিচ্ছেন।”
মুকুলবাবু জানিয়েছেন, কানপুর ও ইলাহাবাদ থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “আমি নিজে হাওড়া স্টেশনে রয়েছি। রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান-সহ অফিসারদের সঙ্গে বার বার কথা হচ্ছে। এখান থেকে নজরদারি চলছে।” মমতার নির্দেশে নিহতদের জন্য পাঁচ লাখ, আহতদের জন্য এক লাখ, এবং সামান্য আহতদের জন্য পঁচিশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও চটজলদি করেছেন মুকুলবাবু।
নিজের রেলমন্ত্রিত্বকালে জ্ঞানেশ্বরী-সহ বেশ কিছু মারাত্মক দুর্ঘটনার মোকাবিলা করতে হয়েছিল মমতাকে। সে ক্ষেত্রে সর্বদা তাঁর নীতি ছিল, কালক্ষেপ না-করে যত দ্রুত সম্ভব ত্রাণের ব্যবস্থা করা।
এখন মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেও সেই কাজটাই করছেন মমতা। দুর্ঘটনাগ্রস্থ কালকা মেলের যাত্রীদের আত্মীয়-পরিজনকে নিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় হাওড়া থেকে একটি বিশেষ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওঁদের যাতে কোনও অসুবিধে না-হয়, তা দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মুকুলবাবুকে।
মমতা সন্ধ্যায় জানান, দিল্লি থেকেও একটি রিলিফ ট্রেন পাঠানো হচ্ছে। উদ্ধারকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে রেল-কর্তাদের কাছে খোঁজ-খবর নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত লাইন পরিষ্কারের ব্যবস্থা করার অনুরোধও জানান। মমতার কথায়, “এত বড় দুর্ঘটনা! আগে আটক যাত্রীদের উদ্ধার করতে হবে। তার পরে খুব তাড়াতাড়ি লাইন পরিষ্কার করা দরকার।”
Previous Story Desh Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.