|
|
|
|
পুলিশের উপরে হামলা, পালাল ধৃত ও অভিযুক্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পাড়ুই ও মাড়গ্রাম |
অপরাধী ধরতে গিয়ে পুলিশ পড়ল জনতার হামলার মুখে। আর এই গণ্ডগোলের সুযোগে পালাল দুই দুষ্কৃতী। শনিবার গভীর রাতে জেলার দুই জায়গায় প্রায় একই কায়দায় ঘটল ‘অপরাধী-ছিনতাই’-এর ঘটনা।
পাড়ুইয়ের দুবশঙ্কাগ্রামে আগে ধরা পড়া এক দুষ্কৃতীকে সঙ্গে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু গ্রামেই আরও কিছু দুষ্কৃতী পুলিশকে ঘিরে ধরে হামলা চালিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল ওই তাকে। হামলায় জখম হলেন আট পুলিশ কর্মী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিপিএম-তৃণমূল রেষারেষিতে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল সিউড়ি ২ ব্লকের বনশঙ্কা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রাম। শনিবার সকালে ওই পঞ্চায়েতের সাত্তর গ্রাম থেকে সানাউল শেখ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশ। সে দিনই আম্বিয়া শেখ নামে আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি মাস্কেট। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই দু’জন তাদের জানায়, উদয় বাগদি নামে এক ব্যক্তি তাদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। গ্রেফতার করা হয় উদয়কে।
শনিবার গভীর রাতে তাকে সঙ্গে নিয়ে দুবশঙ্কা গ্রামের বাসিন্দা শেখ হাসিবের বাড়িতে আরও অস্ত্রের সন্ধানে তল্লাশিতে যায় পুলিশ। অভিযোগ, সেই সময়ই অতর্কিতে পুলিশকে চার দিক থেকে ঘিরে ফেলে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে কিছু লোক। এই সুযোগে পালিয়ে যায় উদয় বাগদি। তৃণমূলের দাবি, যতজনের কাছ থেকে অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে এবং যাদের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল তারা সবাই সিপিএমের লোক। তাদের আরও অভিযোগ, হামলাও চালিয়েছে সিপিএমই। তৃণমূলের সিউড়ি ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই অঞ্চলের অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। এত দিন সিপিএম তা আটকে রাখলেও এলাকা থেকে অস্ত্র উদ্ধার হাওয়া আমাদের বক্তব্যকে সত্যি প্রমাণ করল।” তাঁর দাবি, “এলাকায় এখনও বহু অস্ত্র রয়েছে। সেগুলি উদ্ধার করতে এলেও সিপিএম এভাবেই বাধা দেবে। পুলিশকে তার মোকাবিলা করতে হবে।” যদিও তৃণমূলের অভিযোগ অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের সিউড়ি জোনাল কমিটির দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা তৃণমূল ও পুলিশের সাজানো।”
জেলা পুলিশ সুপার নিশাদ পারভেজ বলেন, “পুলিশের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তারা একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থক। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামে পুলিশি টহল চলছে। উদ্ধার হয়েছে একটি নাইন এমএম পিস্তল ও একটি মাস্কেট।”
অন্য দিকে, শনিবার রাতেই রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির ডাঙাপাড়া গ্রামে একজন আসামীকে ধরতে যায় পুলিশ। সম্প্রতি, ওই গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ স্থানীয় কালুহা পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী, এক পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী ও পঞ্চায়েত সমিতির এক বাস্তুকারকে নিগৃহীত করে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন প্রধানের স্বামী আবদুর রব।
পুলিশ জানায়, জসিমউদ্দিন শেখ নামে এক অভিযুক্ত শনিবার রাতে ডাঙাপাড়ায় আছে বলে খবর পাওয়া যায়। তাকে ধরতে পুলিশ ওই গ্রামে যায়। গাড়িতে তুলতে গেলে জনতা অভিযুক্তকে পুলিশের হাত থেকে কার্যত ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। শুরু হয় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে এক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়। জনতার ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন একজন এএসআই-সহ দু’জন পুলিশ কর্মী। পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত হন কয়েকজন গ্রামবাসীও। জনতা পুলিশের গাড়িটিকে আটকে রাখে। পরে রামপুরহাটের এসডিপিও সুখেন্দু হীরার নেতৃত্বে রামপুরহাট থানা, তারাপীঠ ফাঁড়ি ও মাড়গ্রাম থানা থেকে পুলিশ গিয়ে গাড়ি ও পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করে। হামলায় অভিযুক্ত তিন জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। |
|
|
|
|
|