টানাপোড়েনে বন্ধ সংস্কার, ঝুঁকির পথ চলা কালনায়
ক্ষতিপূরণের দাবিতে মাস চারেক আগে কালনার হরিশঙ্করপুর-নিভুজি বাজার রাস্তার সম্প্রসারণের কাজে বাধা দিয়েছিলেন স্থানীয় চাষিরা। তাঁদের দাবি, প্রায় তিন দশক আগে রাস্তা তৈরির জন্য জমি দান করেছিলেন তাঁরা। তবে এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের কানাকড়িও মেলেনি। তাঁরা দাবি জানিয়েছিলেন, রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করতে হলে প্রথমে মেটাতে হবে ক্ষতিপূরণের টাকা। চাষিদের বিক্ষোভের জেরে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিতে ব্যধ্য হয় পূর্ত দফতরের সড়ক বিভাগ। এর পরে বেশ কয়েকটি বৈঠক ও আলোচনা সভা হয়। তবে সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। ফলে রাস্তার সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ আপাতত বন্ধ। বেহাল রাস্তায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই চলছে যাতায়াত। সম্প্রতি রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেন বেলডাঙা গ্রামের বাসিন্দারা।
হরিশঙ্করপুর-নিভুজি বাজার রাস্তাটি যুক্ত হয়েছে মেমারি ও বর্ধমান রোডের সঙ্গে। এগারো কিলোমিটারের এই রাস্তার দু’পাশে জনবসতি বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই যানবাহনের চাপও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। ফলে রাস্তাটি মজবুত করে, সম্প্রসারণ করার উদ্যোগ শুরু হয়। বরাদ্দ করা হয় ৩ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা। সিদ্ধান্ত হয়, প্রথমে রাস্তার দু’পাশে মাটি ফেলে ভরাট করা হবে। ৩.৮ মিটার চওড়া রাস্তা সম্প্রসারণ করে ৫.৫ মিটার সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে রাস্তার দু’পাশে মাটি ফেলার কাজ শুরুও করে দেয় ঠিকাদার সংস্থা। তবে স্থানীয় বেলেডাঙা, বাগনাপাড়া, শিয়ালডাঙা, উপলতি মৌজার চাষিরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে কাজে বাধা দেয়। পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা বিষয়টি নিয়ে চাষিদের সঙ্গে বৈঠক করলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। বাধ্য হয়েই বন্ধ করে দিতে হয়েছে রাস্তার কাজ।
সেই রাস্তা। কালনার উপলতি গ্রামের কাছে ছবিটি তুলেছেন কেদারনাথ ভট্টাচার্য।
এ দিকে, সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্ষার শুরুতেই রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বাস চলাচলও। বেহাল রাস্তায় চলতে গিয়ে যন্ত্রাংশ ভাঙছে মোটর ভ্যান, অটো, মোটর সাইকেলের মত ছোট যানের। এমন কী পায়ে হেঁটে চলাচল করতেও সমস্যায় পড়ছেন পথচারীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বৃষ্টি হলে সমস্যা আরও বাড়ছে। লরি চালক বিষ্ণু সিংহ বলেন, “যত দিন যাচ্ছে এই রাস্তার হাল তত খারাপ হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে মনে হয় এই বুঝি লরির চাকা বসে গেল।” কালনা-মেমারি রোডের একটি বেসরকারি বাসের এক খালাসি তপন মাঝি বলেন, “রাস্তায় এক বার লরির চাকা বসে গেলে যতক্ষণ না ক্রেন নিয়ে এসে তা তোলা হচ্ছে, ততক্ষণ এক দিকের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।” রাস্তার জন্য জমি দিয়েছিলেন উপলতি গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় পান। তিনি বললেন, “আমরা তো একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস চেয়েছিলাম। তা তো আজ পর্যন্ত পেলামই না, উপরন্তু রাস্তার দশা আরও খারাপ হল।”
সম্প্রতি কালনার মহকুমাশাসকের দফতরে জেলাশাসক ওঙ্কারসিংহ মিনা একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে নিভুজিবাজার থেকে হরিশঙ্করপুর রাস্তার সমস্যার বিষয়ে আলোচনাও হয়। পূর্ত দফতরের (সড়ক) কালনা শাখার সহ বাস্তুকার সুনীতি বিশ্বাস বলেন, “যে ঠিকাদার সংস্থা রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করছিল, মাঝ পথে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তবে ওই সংস্থা ফের কাজ শুরু করতে রাজি হয়েছে। আমরা ওই চাষিদের বোঝানোর চেষ্টা করছি রাস্তার কাজের সঙ্গেই ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।” কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচী জানান, রাস্তার কাজ শুরু করতে পূর্ত দফতর, কালনা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিডিও, বিভিন্ন পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠক করার ভাবনা রয়েছে।
Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.