যাত্রী সেজে উঠে লুঠপাট বাসে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
যাত্রী সেজে বাসে উঠে যথেচ্ছ লুঠপাট চালাল এক দল দুষ্কৃতী। বহরমপুর থেকে দুর্গাপুরগামী দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাসে শনিবার রাতে কাঁকসার কাছে এই ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতীদের ভোজালির আঘাতে জখম হন এক যাত্রীও। লুঠপাট চালিয়ে দুষ্কৃতীরা মাঝ রাস্তায় নেমে যায়। এর পরেই বাসযাত্রীরা কাঁকসা থানায় যান। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি।
শনিবার বিকেলে বহরমপুর থেকে দুর্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হয় বাসটি। যাত্রীরা জানান, সিউড়ি থেকে অনেক যাত্রী বাসে ওঠেন। তাঁদের মধ্যে ছিল ৮-৯ জন যুবক। পানাগড়-মোড়গ্রাম রাজ্য সড়ক ধরে ইলামবাজার পেরিয়ে বাসটি কাঁকসা থানার এগারো মাইলে পৌঁছতেই ওই যুবকেরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে উঠে দাঁড়ায়। যাত্রীদের তারা সব জিনিসপত্র দিয়ে দিতে বলে। যাত্রীরা জানান, ওই দুষ্কৃতীদের হাতে ভোজালি ছিল। তাদের এক জন বাসের চালক তাপস মিশ্রকে সরিয়ে দিয়ে ধীর গতিতে বাসটি চালাতে থাকে। অন্য দুষ্কৃতীরা ব্যাপক লুঠপাট চালায়। যাত্রীদের টাকা, মোবাইল ফোন, গয়না কেড়ে নেয়। নিয়ামতপুরের বাসিন্দা সামুদ আলম বাধা দিতে গেলে তাঁকে ভোজালির কোপ মারে দুষ্কৃতীরা। বাসের যাত্রী, বেনাচিতির বাসিন্দা মৌ মল্লিকের অভিযোগ, “আমার সব সোনার গয়না কেড়ে নিয়েছে। ভয়ে ছেলেকে জাপটে ধরে বসেছিলাম।” বাসের কর্মী সুশান্ত রায়ের অভিযোগ, “টিকিট বিক্রি বাবদ কয়েক হাজার টাকা ছিল। দুষ্কৃতীরা সেটাও নিয়ে নিয়েছে।”
মাঝ রাস্তায় দুষ্কৃতীরা নেমে যেতে যাত্রীরা বাস নিয়ে কাঁকসা থানায় যান। পুলিশকে তাঁরা ঘটনার কথা জানান। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, এর পরে পুলিশ তাঁদেরই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। শ্যামল মণ্ডল নামে এক যাত্রীর দাবি, “পুলিশের জেরার ধরন দেখে মনে হচ্ছিল, আমরাই কোনও দুষ্কর্ম করেছি। ততক্ষণে দুষ্কৃতীদের খোঁজ করলে হয়তো কোনও সূত্র পেলেও পাওয়া যেত।” এ দিকে জখম সামুদ আলমকে চিকিৎসার জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
কাঁকসা থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই রাস্তায় সন্ধ্যার পর থেকে একটি টহলদার জিপ থাকে। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেটি অজয় নদের সেতু পর্যন্ত যায় না। মাঝ রাস্তা থেকেই ফিরে চলে আসে। কাঁকসা থানার পুলিশ অবশ্য যাত্রী বা বাসিন্দাদের অভিযোগ মানতে চায়নি। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই রাস্তায় যাতে পুলিশি টহল জোরদার হয়, তার নির্দেশ দেওয়া হবে।” |