|
|
|
|
থানা ব্যারাক আলোহীন চাকুলিয়ায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে গত এক মাস থেকে অন্ধকারে রাত কাটছে উত্তর দিনাজপুর জেলার চাকুলিয়া থানার পুলিশ কর্মীদের। বিকল হয়েছে বাল্ব, টিউব, পাখা, ভ্যাপার লাইট। সন্ধ্যার পরে ভরসা এখন টর্চের আলো। ‘শর্ট সার্কিটের’ ভয়ে ব্যারাকে পা টিপে চলতে হয় তাঁদের। শুধু কী তাই! ‘চাকুলিয়া থানা’ লেখা ভিনাইল বোর্ডের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় থানা সংলগ্ন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে রাতে দুর্ঘটনা ঘটলে ভিন রাজ্যের গাড়ির চালক ও যাত্রীরা থানা খুঁজে পায় না। ‘হাই ভোল্টেজ’ ও ‘শর্ট সার্কিটের’ জেরে প্রায়ই পুলিশ ব্যারাক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। নষ্ট হচ্ছে পাখা, বাল্ব, টিউব। ইতিমধ্যে কয়েকজন পুলিশ কর্মী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জখমও হয়েছেন। পাম্প মেশিন না চলায় জলকষ্টে ভুগতে হচ্ছে কর্মীদের। উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মিলনকান্ত দাস বলেন, “চাকুলিয়া থানার সমস্যার কথা শুনেছি। পূর্ত দফতর ও পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার পূর্ত দফতরে (বিদ্যুৎ বিভাগ) কর্মীরা থানার বিদ্যুৎ লাইন মেরামতের কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি। জ্বলেনি ভিনাইল বোর্ডের আলো। থানা চত্বরের ভ্যাপার ল্যাম্পগুলিও বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। থানার পুলিশ কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, ওই পরিস্থিতিতে অসহ্য গরম থেকে বাঁচার জন্য তাঁদের ঘরের বাইরে রাত কাটাতে হচ্ছে। চাকুলিয়া থানা বিহার সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। সেখানে রয়েছেন ৪০ জন পুলিশ কর্মী। ডিউটি রুম, সেরেস্তা, লকআপ, মালখানা এবং ওসির চেম্বার মিলিয়ে থানার নীচের তলায় ১০টি ঘর আছে। উপর তলায় পুলিশ কর্মীদের ব্যারাক। আবাসনের ব্যবস্থা না থাকায় পুলিশ কর্মীরা ওই ব্যারাকে থাকেন। প্রায় এক মাস আগে থানার বিভিন্ন ভবন সংস্কারের কাজ শুরু করে পূর্ত দফতর। সেই থেকে শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। পুলিশ কর্মীরা জানান, থানা চত্বরের ভ্যাপার ল্যাম্পগুলি বিকল হওয়ায় সন্ধ্যার পরে থানাকে ভুতুরে বাড়ির মতো মনে হয়। নিজেরাই নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন। তাই সাবধানে থাকতে হচ্ছে। থানার ভিতরেও ইচ্ছে মতে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাতায়াত সম্ভব হয় না। কোথাও শর্ট সার্কিট হয়ে আছে কিনা জেনে তবেই চলতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পাম্প চালানো সম্ভব হয় না। থানার পিছনে নলকূপ থেকে জল সংগ্রহ করে ব্যরাকে বয়ে আনতে হয়। এমনকী ব্যাটারি চার্জের উপায় না-থাকায় কর্মীদের মোবাইল ফোনও কাজ করে না। থানার দু’পাশে বড় দুটি মাঠ রয়েছে। থানা থেকে ৭০ মিটার দূরে চাকুলিয়া সদর। ওই রাস্তার দু’পাশ এবং মাঠের চারদিক ঝোপজঙ্গলে ভরে গিয়েছে। থানায় আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যার পরে ওই এলাকা যে বিহারের দুষ্কৃতীদের দখলে চলে যায় তা নিয়ে পুলিশ কর্মীদের সন্দেহ নেই। এমনকী তাঁদের আশঙ্কা দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে থানা হামলার মুখে পড়তে পারে। থানার ওসি গৌতম রায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমস্যা নিয়ে মুখ খোলেননি। তিনি বলেন, “লাইন মেরামতের কাজ চলছে।” |
|
|
|
|
|