|
|
|
|
বন্ধ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করার দাবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খয়রাশোল |
উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী (এএনএম) সেখানে না এসে বসেন স্থানীয় পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। আর তার জেরে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে খয়রাশোলের গেরুয়াপাহাড়ি গ্রামে রয়েছে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এর ফলে সদ্যোজাত থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের নিয়ে টিকাকরণের জন্য এলাকার বাসিন্দাদের যেতে হয় আট কিলোমিটার দূরের বাবুইজোড় পঞ্চায়েতে। এত দূরে যেতে হয় বলে ক্ষোভ জমছে গ্রামে। অবিলম্বে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু করে এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার দাবিতে শুক্রবার গ্রামবাসীরা আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন খয়রাশোল ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে। |
|
খয়রাশোলে দয়াল সেনগুপ্তের তোলা ছবি। |
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, বছর দুই আগে গেরুয়াপাহাড়ি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির নতুন ভবন তৈরি হয়েছিল। ভবনটি তৈরি হওয়ার মাস কয়েক আগে থেকে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এএনএম হিসাবে যোগ দেন বাবুইজোড় গ্রামের বাসিন্দা রূপা ঘোষ। তখন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি গেরুয়াপাহাড়ি গ্রামের এক বাসিন্দার বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলত। খয়রাশোল ব্লক থেকে প্রায় ২৫-২৬ কিলোমিটার দূরের এই গ্রামটি এমনিতেই ঝাড়খণ্ড সীমানা ঘেঁষা। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, যোগাযোগসব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়া এই গ্রামে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র হওয়ায় উপকৃত হয়েছিলেন গেরুয়াপাহাড়ি ও সংলগ্ন মালপাড়া, ডেমুরিয়া, পেঁচালিয়া, কুড়ুলিয়া, বিরোদি, বনসায়ের প্রভৃতি গ্রামের প্রসূতি, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বারা।
এলাকাবাসী সুলেখা বাগ, সীমা ঘোষ, কবিতা হাঁসদাদের অভিযোগ, “আচমকা রূপাদেবী গ্রামের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে সমস্যার শুরু। খুব কষ্ট হয় বাচ্চা কোলে করে অত দূরের পঞ্চায়েতে গিয়ে টিকা দেওয়াতে।” রূপাদেবীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক গৌতম ঘোষ বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে গ্রামবাসীদের কিছু সমস্যা হয়েছিল। ওঁকে বিরক্ত করা হয়েছে বলেও জানতে পেরেছি। এক বার ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চুরি হয়। তার পর থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে বাবুইজোড় পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করেছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান তাপস ঘোষ।” ওই স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে গ্রামের লোকেদের সমস্যা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তাপসবাবুও।
স্থানীয় বাসিন্দা মৃণালকান্তি ঘোষ, বিনোদ গোস্বামী, কাজল ভারতীরা অবশ্য বলেন, “দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকলেও রূপাদেবী আমাদের কাছে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ কখনও করেননি। আমরা জানলে নিজেদের মধ্যে বসে সেটা সমাধান করার চেষ্টা করতাম। আর সত্যিই যদি কেউ ওঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে, তা হলেও তার জন্য এতগুলো মানুষকে শাস্তি পেতে হবে কেন? কেনই বা গরিব দিনমজুর পরিবারের মহিলারা সারা দিনের কাজ সেরে শিশুদের টিকা দেওয়ার জন্য আট কিলোমিটার পথ যাবেন?” তাঁদের আরও ক্ষোভ, এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বলতে কার্যত কিছুই নেই। তাই হেঁটেই অধিকাংশ মা ও শিশুকে বাবুইজোড় পঞ্চায়েত অবধি যেতে হয়। দূরত্বের কারণে বহু শিশুর ঠিকমতো টিকাকরণও হচ্ছে না। উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা মেনে নিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও পঞ্চায়েত প্রধান। তাঁরা জানিয়েছেন, খয়রাশোলের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ওই স্বাস্থ্যকর্মী এবং গ্রামবাসীদের নিয়ে অবিলম্বে একটি বৈঠক করবেন, যাতে পুনরায় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু করা যায়। |
|
|
|
|
|