|
|
|
|
একটি ঘরেই পাঁচটি দফতর মেডিক্যালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এক দিকে কিছু ঘর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আশপাশে ঝোপঝাড়, আবর্জনা। ছাদ ভেঙে জল পড়ছে। সব মিলিয়ে যেন ‘ভূতুড়ে’ বাড়ি। কিছু ঘর আবার বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের দখলে। নোটিস দিয়েও সে সব ঘর দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। অন্য দিকে, একই ঘরে ঠাসাঠাসি করে পাঁচ-পাঁচটি বিভাগের কাজ চালাতে হচ্ছে। পরিকাঠামো নিয়ে পরিকল্পনার অভাব প্রকট মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
যা অভাবিত, তেমনটাই কিন্তু চলছে মেডিক্যাল কলেজে। একটি ঘরেই ঠাসাঠাসি করে জননী সুরক্ষা যোজনা, পিপি ইউনিট, প্রতিবন্ধী বোর্ড, নার্সিং এস্টাব্লিশমেন্ট, মেডিক্যাল ফিটনেস বোর্ডের কার্যালয়। ফলে কর্মী থেকে রোগী ও তাঁদের পরিজন, সবাই সমস্যায় পড়ছেন। মাঝেমধ্যে ঠাসাঠাসির ফলে বাক্বিতণ্ডাও হচ্ছে। তাতেও অবস্থার, বা বলা ভাল অব্যবস্থার, পরিবর্তন হচ্ছে না! অভিযোগ, কর্তৃপক্ষকে বহু বার জানানো সত্ত্বেও সুরাহা হয়নি। যদিও আশেপাশেই অনেক ঘর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এক-একটি বিভাগের কার্যালয়ের জন্য অন্তত একটি করে আলাদা আলাদা ঘর বরাদ্দ করা কঠিন নয় বলেই দাবি। তেমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। প্রয়োজনও। কিন্তু তা আর হচ্ছে কই!
সমস্যার কথা মেনে নিচ্ছেন সুপার রামনারায়ণ মাইতিও। তাঁর বক্তব্য, “সমস্যার কথা অজানা নয়। কিন্তু ঘর তেমন নেই। ফাঁকা ঘর মিললেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের কার্যালয়গুলির জন্য আলাদা আলাদা বরাদ্দ করা হবে।” তাঁর দাবি, “বিষয়টি আমাদের নজরেও রয়েছে।”
সুপারের দফতর যে ভবনের দোতলায়, তারই একতলার একটি ঘরেই কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই চলে আসছে বিভিন্ন বিভাগের কার্যালয়। মোট ৬টি আলমারি। দেওয়ালের পাশেই কাগজের স্তূপ। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রই। কিন্তু অযত্নে রাখা। ঘরে আর তেমন জায়গাই নেই যে গুছিয়ে রাখা যাবে। ৩টি টেবিল, ৮টি চেয়ার। ২টি টেবিলে আবার কম্পিউটার রাখা। এত সব থাকার ফলে এমনিতেই ঘরে নড়াচড়াই দুঃসাধ্য। সেখানেই কি না পাঁচ-পাঁচটি বিভাগের দফতর! রোগীকল্যাণ সমিতির আওতায় থাকা জননী সুরক্ষা যোজনার টাকা দেওয়া হয় এখান থেকেই। রোগীর পরিজনেদের ভিড় তাই লেগেই থাকে। কাজ সামলাতে হিমসিম খেতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্মীকে। কোন ফাইল কখন কোন বিভাগের টেবিলে চলে যাচ্ছে, নিজেই বুঝতে পারেন না কর্মীরাও। তাঁদেরই এক জনের কথায়, “কর্তৃপক্ষ বরাবরই ওই দেখছি, দেখব করেই চলেছেন। সুরাহা হচ্ছে না। একটা মাত্র ঘরে পাঁচ-পাঁচটি বিভাগের কার্যালয়এমনটা বোধহয় ভূ-ভারতে নেই!” অথচ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ঘরের সত্যিই খুব অভাব, এমন নয়। কয়েকটি ঘর তো বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছেই। পাশাপাশি অব্যবহৃত ঘরও বেশ কয়েকটি। পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা কয়েকটি ঘর সাফসুতরো করে, একটু সাজিয়ে-গুছিয়ে নিলেও চলে। কিন্তু সে আর হচ্ছে কই?
এরই মধ্যে একটা ভাল খবর, আগে যেখানে আইসোলেশন ওয়ার্ড ছিল, সেখানে পুরনো কাঠামো ভেঙে নার্সিং কলেজের নিজস্ব ভবন তৈরির উদ্যোগ শুরু হয়েছে। বিএসসি নার্সিং-এর পঠন-পাঠন আগেই চালু হয়েছিল। মেডিক্যাল কলেজেই চলত পড়ানো। হস্টেল অবশ্য হয়ে গিয়েছিল। কলেজ বাড়ি ছিল না। এ বার হবে বলেই আশ্বাস কর্তৃপক্ষের। |
|
|
|
|
|