মমতা দেখুন
চিকিৎসক নেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, প্রসব স্টেশনে
ডাক্তার নেই। তাই গর্ভযন্ত্রণা নিয়ে আসা প্রসূতিকে কাটোয়া হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দিয়েছিল অগ্রদ্বীপ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পথেই কাটোয়া স্টেশনের ওভারব্রিজে প্রসব হয়ে গেল।
শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমানের কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ গ্রামের দুর্গা বৈরাগ্যকে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি মঙ্গলকোটের শীতলগ্রামে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স জানান, সোমবার থেকে চিকিৎসক নেই। তিনি বর্ধমান শহরে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছেন। তাই প্রসব করানো সম্ভব নয়।
দুর্গার মাসি প্রতিমা বৈরাগ্যের কথায়, “নার্সের কথা শুনে ট্রেন ধরে কাটোয়ায় যাই। কিন্তু স্টেশন থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য ওভারব্রিজে উঠতেই প্রসব হয়ে যায়।” খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রেলের চিকিৎসক সুপ্রিয় ভাওয়াল। তিনি বলেন, “পুলিশ দিয়ে ওভারব্রিজের সিঁড়ির মুখ আটকে দেওয়া হয়। সেখানেই প্রাথমিক সুশ্রূষা করে মা ও শিশুকে কাটোয়া হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়।” কাটোয়া পুরসভা অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে তাদের হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে দুর্গা বৈরাগ্য। শুক্রবার। অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
কিন্তু হাসপাতালে আবার অন্য বিপত্তি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, বাইরে প্রসব হওয়ায় মা-শিশুকে প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো যাবে না। মাকে মহিলা ওয়ার্ডে এবং সদ্যোজাতকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকতে হবে। কেন এই বিধান, তার ব্যাখ্যা অবশ্য মেলেনি। বিষয়টি শুনে বিস্মিত রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা শুভময় দত্তচৌধুরী বলেন, “সদ্যোজাত তার মায়ের কাছেই থাকে। আলাদা থাকার প্রশ্ন কেন উঠছে, সেটাই বুঝতে পারছি না।” তাঁরই হস্তক্ষেপে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায় কাটোয়া হাসপাতালের সুপারকে ফোন করেন। তার পরে মা ও শিশু দু’জনকেই শিশু ওয়ার্ডে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চার শয্যার অগ্রদ্বীপ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত প্রসব হয়। সে ক্ষেত্রে কোনও বিকল্প ব্যবস্থা না করে সেখানকার চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানো হল কেন? কাটোয়ার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগে এই পরিস্থিতিতে অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসক পাঠিয়ে সামাল দেওয়া হত। এখন তা করার পরিস্থিতি নেই।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ব্যাখ্যা, “চিকিৎসক কম থাকাতেই এই সমস্যা।” আর স্বাস্থ্য অধিকর্তার বক্তব্য, “এই সমস্যা কাটতে সময় লাগবে। তবে সম্প্রতি পাঁচশো চিকিৎসক সরকারি কাজে যোগ দিয়েছেন। দেখি, কী করা যায়।”
দুর্গা বলেন, “বিপদ কেটে গিয়েছে। ভাবছি, ছেলের নাম রাখব মুকুল।”
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.