|
|
|
|
হিড়বাঁধে স্কুলের মাঠ সংস্কারে ‘দুর্নীতি’, এসডিও-কে নালিশ |
দেবব্রত দাস • হিড়বাঁধ |
বছরে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে একটি স্কুলের খেলার মাঠ সমতল করার কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে হিড়বাঁধ ব্লকের সিপিএম পরিচালিত মলিয়ান গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। নিম্নমানের কাজের পাশাপাশি কয়েক জন শ্রমিকের ‘জবকার্ড’ নিয়ে তাঁদের টিপসই জাল করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার খাতড়ার মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার কিছু শ্রমিক এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০-’১১ আর্থিক বছরে মলিয়ান পঞ্চায়েতের দেবেদিয়া গ্রাম সংসদ এলাকায় দেবেদিয়া জুনিয়র হাইস্কুলের সামনের খেলার মাঠটি সমতল করার পরিকল্পনা নেয় পঞ্চায়েত। গত বছর নভেম্বর ও ডিসেম্বরে প্রথম পর্যায়ে কাজটি হয়। ১০০ দিন প্রকল্পের আওতায় মাটি কাটা ও ভরাটের জন্য বরাদ্দ হয় এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা। চলতি বছর জানুয়ারিতে প্রথম দফার কাজ শেষ হয়েছে বলে পঞ্চায়েতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়। বরাদ্দ অর্থের পুরোটাই খরচ হয়েছে বলে খাতায়কলমে দেখানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের দেবেদিয়া বুথ কমিটির সভাপতি কল্যাণ পালিত, সোমনাথ শর্মাদের অভিযোগ, “ওই মাঠটি সমতল করার কাজে বরাদ্দ টাকার পুরোটা নয়, বরং একাংশ খরচ করা হয়েছে। পাশাপাশি নিম্নমানের কাজ হয়েছে। কাজ করেননি, এমন অনেক শ্রমিকের কাছ থেকে জবকার্ড নিয়ে সই জাল করে তাঁদের নামে টাকা তুলে বরাদ্দের একটা মোটা অংশ আত্মসাৎ করেছেন মলিয়ান পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান উত্তম কর্মকার। এমনকী ভুয়ো মাস্টাররোল করেও টাকা তোলা হয়েছে।” ওই প্রকল্পের মাস্টাররোলে নাম থাকা শ্রমিক, বগাবাইদ গ্রামের বাসিন্দা মধু কর্মকার, গীতা কর্মকার, মনসারাম কর্মকারদের অভিযোগ, “রিনিউ করার নাম করে আমাদের জবকার্ড নিয়ে গিয়েছিলেন প্রকল্পের সুপারভাইজার। আমাদের টিপসই জাল করে টাকা তোলা হয়। অথচ আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। পরে জবকার্ড ফেরত পেয়ে ওই কাজের কথা জেনেছি।”
শ্রমিকদের একাংশের এই অভিযোগকে সমর্থন করেছেন মলিয়ান পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান, বর্তমানে সিপিএমের পার্টি সদস্য পশুপতি ভুঁইয়াও। তিনি বলেন, “ওই মাঠ সংস্কারের কাজে কিছুটা দুর্নীতি হয়েছে বলে স্থানীয় ভাবে খবর পেয়েছি। বিষয়টি পঞ্চায়েত প্রধানকে জানানো হলেও তিনি আমাদের কথা কানে তোলেননি।” প্রধান উত্তম কর্মকার অবশ্য টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ওই মাঠ সংস্কারের কাজ ভালভাবেই হয়েছে। পুরো টাকার কাজ হয়েছে। কোথাও কোনও দুর্নীতি হয়নি। কারও জবকার্ড নিয়ে সই জাল করে টাকা তোলার অভিযোগও মিথ্যা।” তাঁর দাবি, রাজনৈতিক কারণে তৃণমূল শ্রমিকদের কয়েক জনকে দিয়ে ‘মিথ্যা’ অভিযোগ করিয়েছে। তদন্ত হলেই প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে। ওই প্রকল্পের সুপারভাইজার গুণধর সোরেনের দাবি, “যাঁরা কাজ করেছিলেন, তাঁদের নামই মাস্টাররোলে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আমি কারও জবকার্ড নিইনি। স্বচ্ছভাবেই কাজের তদারকি করেছি।”
খাতড়ার মহকুমাশাসক নিরঞ্জন কুমার বলেন, “ওই মাঠ সংস্কারের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। হিড়বাঁধের বিডিও-কে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|