দক্ষিন কলকাতা
পার্কিং
দু’লাইনের বিপদ
খাতায়-কলমে প্রায় কুড়ি ফুট চওড়া রাস্তা। কিন্তু কার্যত তার প্রস্থ যা দাঁড়িয়েছে তা দশ ফুটেরও কম। কারণ দুই সারির পার্কিং, দখল হওয়া ফুটপাথ থেকে নেমে পড়া পথচারী। এ হেন মোহিনীমোহন রোডে নিত্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের।
রাস্তার এক ধারে সারি সারি সাইকেল, মোটরসাইকেল, টানা রিকশা দাঁড় করানো। আর তারই পাশে চার চাকার গাড়ি। অর্থাৎ রাস্তার এক ধারে দু’টি সারিতে পার্কিং। আর যেটুকু রাস্তা পড়ে আছে তা দিয়ে গাড়ির যাওয়া-আসা চলছে। কিন্তু জায়গা এতটাই ছোট যে একটা গাড়ি আসছে দেখতে পেয়ে অপর দিকের গাড়িকে আগে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় পাশ দেওয়ার জন্য। ভবানীপুর থানার অন্তর্গত যদুবাবুর বাজার-সংলগ্ন এই রাস্তাটির পুরোটাই চলে গেছে পার্কিংয়ের দখলে।
আশুতোষ মুখার্জি রোড দিয়ে বাজার-সংলগ্ন রাস্তাটিতে ঢুকতেই নীল ইউনিফর্ম পরা এক যুবককে দেখা গেল পার্কিংয়ের তদারকি করতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যুবক বললেন, “আমি শুধু গাড়িগুলো পার্ক করাই, সময় দেখে টাকা নিই। ঘণ্টা পিছু সাত টাকা।” কিন্তু ক’টা গাড়ির পার্ক করার অনুমতি আছে? যুবক বললেন, “আমি জানি না।”
মোহিনীমোহন রোড মিশেছে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য সরণিতে। ফলে বহু গাড়িই মোহিনীমোহন রোড দিয়ে ঢুকে মদনমোহন মালব্য সরণি হয়ে ল্যান্সডাউন রোডে গিয়ে ওঠে। কিন্তু মোহিনীমোহন রোডের মুখে এই ‘ডাবল’ পার্কিং জোন গড়ে ওঠায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। সমস্যা হয় পথচলতি মানুষেরও। এই রাস্তার ফুটপাথ সরু হওয়ায় এবং অনেক ক্ষেত্রেই দোকানদারদের দখলে চলে যাওয়ায়, রাস্তা ধরেই হাঁটতে হয় সাধারণ মানুষকে। তার উপর একটু দূরেই রয়েছে ভ্যাট। অনেক সময়ই ভ্যাট ছাড়িয়ে বাজারের নোংরা রাস্তায় জমা হতে থাকে।
এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার এলাকায় শুধু ওই রাস্তাতেই নয়, চক্রবেড়িয়া সাউথ রোডেও বেআইনি পার্কিং হয়। পুরসভা কোথাও ডাবল পার্কিং-এর অনুমতি দেয় না। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’
এ ব্যাপারে মেয়র পারিষদ (পার্কিং) রাজীব দেব বললেন, ‘‘বেআইনি পার্কিং যে যে জায়গায় হয় তার তালিকা করে সংশ্লিষ্ট থানা, ট্রাফিক পুলিশকে বলে যৌথ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছি। আর যে সব অভিযোগ পেয়েছি সে সম্পর্কে এলাকার থানাকে জানিয়েছি।” ডিসি ট্রাফিক দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যদি নো পার্কিং-এর বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সত্ত্বেও গাড়ি পার্ক করা হয় তা হলে ট্রাফিক গার্ড থেকে কেস দিয়ে গাড়িগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়। তা ছাড়া ফ্রি পার্কিং এলাকাতেও ডাবল পার্কিং করা যায় না। আমরা রোজই এ রকম বহু গাড়িকে কেস দিই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

ছবি পিন্টু মণ্ডল

Previous Story

Kolkata

Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.