|
|
|
|
|
|
|
ক্লিক অর প্রেস |
মেঘ-বন্ধু |
|
ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে বন্দি থাকতে হবে না। দরকার নেই পেন ড্রাইভ বা সিডিরও।
কাজ করা থেকে তথ্য জমা রাখা, সবই হবে ক্লাউডে। জানাচ্ছেন সুরিত ডস |
আমার বন্ধু অবিনাশ সে দিন সমস্যায় পড়েছিল। বাড়িতে বসে অফিসের কাজ সেরেছে। পেন ড্রাইভে সেভও করেছে। কিন্তু সেটা অফিস নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিল। ফলে অফিসে বসে আবার সব কাজটা করতে হল। আর এক বার একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রেজেন্টেশন করতে গিয়ে দেখে যে কম্পিউটারে প্রেজেন্টেশন চালাবে তাতে লোয়ার ভার্সনের সফটওয়্যার রয়েছে।
শুধু অবিনাশ নন, আমাকে এবং আপনাদেরও মাঝেমধ্যে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এর থেকে মুক্তির উপায় ‘ক্লাউড কম্পিউটিং’। এ বার এ নিয়েই বলব। সোজা কথায় ক্লাউডে কোনও সফটওয়্যার কিনে ইনস্টল করতে হবে না। ভাড়া নিতে হবে। সমস্ত প্রসেসিং ও ফাইল সেভ হবে কেন্দ্রে। আপনাকে শুধু এই ব্যবস্থায় লগ-ইন করতে হবে।
ব্যবস্থাটিকে মোটামুটি দু’টি ভাগে ভাগ করা যায় ফ্রন্ট এন্ড ও ব্যাক এন্ড। ফ্রন্ট এন্ডে থাকবেন আমার, আপনার মতো ব্যবহারকারীরা ও কম্পিউটার। সেই কম্পিউটারে শুধু ওয়েব ব্রাউজারে প্রোগ্রাম থাকবে। এর সাহায্যে ক্লাউডে লগ-ইন করা যাবে। অনেকটা জি-মেল, ইয়াহু মেল বা হট-মেলের মতো। অন্য দিকে, ব্যাক এন্ড বা ক্লাউড, মূলত অসংখ্য সার্ভার এবং তথ্য জমা রাখার জায়গা নিয়ে তৈরি। নানা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সংস্থা একে নিয়ন্ত্রণ করবে। এই দুই ভাগের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য থাকবে নেটওয়ার্ক, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট।
অসংখ্য কম্পিউটারের মধ্যে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য ‘মিডিলওয়্যার’ ব্যবহার করা হয়। ব্যাক এন্ডে দেখাশোনার জন্য থাকবে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটর’| যে নিয়ম মেনে এই ব্যবস্থা কাজ করবে তাকে ‘প্রোটোকল’ বলা হয়। যেহেতু ব্যবস্থাটি অনেকে ব্যবহার করবেন তাই এর তথ্য জমা রাখার জায়গাও বিশাল। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তথ্য যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য ব্যাকআপের ব্যবস্থাও রয়েছে। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে ক্লাউড ব্যাকআপ থেকে তথ্য নিয়ে কাজ করবে। ক্লাউড কম্পিউটিং দু’ধরনের হতে পারে ‘সফটওয়্যার অ্যাজ সার্ভিস (স্যাস)’ এবং ‘প্ল্যাটফর্ম অ্যাজ সার্ভিস (প্যাস)’। |
|
অলঙ্করণ: দেবাশীষ দেব |
এ বার বলি সুবিধার কথা। ক্লাউডে সব ধরনের সফটওয়্যার রাখা সম্ভব। প্রত্যেকটি সফটওয়্যারের জন্য আলাদা সার্ভার থাকবে। ইন্টারনেট থাকলেই যে কোন জায়গায় বসে ক্লাউডে লগ-ইন করে আপনার প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারে কাজ করতে পারবেন। আপনাকে শুধু সময়মতো ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। এতে নকল সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রবণতাও কমবে। সফটওয়্যারের আপডেট হলে বা নতুন ভার্সন বেরোলে তা-ও ক্লাউডে পাওয়া যাবে। ফলে নতুন করে কিনে ইনস্টল বা আপডেট করতে হবে না। সফটওয়্যার সংস্থাগুলি কম খরচে সফটওয়্যার আপডেট, নতুন ভার্সন তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে পারবে। কাজ ক্লাউডে সেভ করতেও পারবেন। পরে যেখানে খুশি ক্লাউডে লগ-ইন করে কাজ করতে পারবেন। তথ্য পেন ড্রাইভ, সিডি, ডিভিডি বা এক্সটারনাল হার্ড ডিস্কে সেভ করে ঘুরতে হবে না।
এই ব্যবস্থায় হার্ডওয়্যারের খরচও কমবে। বেশি ক্ষমতার হার্ডওয়্যারের দরকার পড়বে না। কারণ, অধিকাংশ প্রসেসিং ক্লাউডে হবে। মনিটর, কি-বোর্ড, মাউস এবং মিডলওয়্যার চালানোর মতো ক্ষমতার প্রসেসর থাকলেই হল। বড় হার্ডডিস্কেরও দরকার নেই। সব ক্লাউডে সেভ হবে। তা ছাড়া এখানে অনেকগুলি কম্পিউটারের সাহায্যে কাজ হবে। একে বলে ‘গ্রিড কম্পিউটিং’। বিশেষ করে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের অনেক সময় বড় হিসেবের কাজ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রসেসিং খুব কাজে লাগে। এতে কাজ তাড়াতাড়িও হয়।
বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থার এই ব্যবস্থায় সুবিধা হবে। তাদের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যারের খরচ কমবে। সংস্থার জন্য কোনও সফটওয়্যার কিনতে হবে না, ভাড়া নিলেই চলবে। ব্যবস্থাটির রক্ষণাবেক্ষণের খরচও কম। ফলে আলাদা করে ‘আইটি সাপোর্ট টিম’ রাখার প্রয়োজন থাকবে না। অ্যাপল এখন ক্লাউডে গান জমা রেখে আই-ক্লাউডের মাধ্যমে স্ট্রিম করছে। অবশ্য সব ব্যবস্থার মতো এতে কিছু সমস্যাও রয়েছে। প্রধানত দু’ ধরনের সমস্যা হতে পারে। এই ব্যবস্থা নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেটের উপরে নির্ভরশীল। তাই নেটওয়ার্কে সমস্যা হলে কাজ করা যাবে না। আর নেটওয়ার্ক না পাওয়া গেলে ক্লাউডে লগ-ইন করাও সম্ভব নয়। তা ছাড়া যে তথ্য জমা থাকছে তার সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তবে যাঁরা ব্যবস্থাটিকে দেখাশোনা করবেন তাঁরা এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল। ফলে বিপদে সাহায্য পাওয়া যাবে।
|
কম্পিউটার সংক্রান্ত আপনার প্রশ্ন পাঠান:
askdoss@abpmail.com-এ
সাবজেক্ট লাইনে লিখুন abp kolkata |
|
|
|
|
|
|