|
|
|
|
জামশেদপুর উপনির্বাচন |
ভোটে জঙ্গি অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে উদ্বেগ |
ঋজু বসু • জামশেদপুর |
প্রতিবেশী রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গের সীমাবর্তী মাওবাদী-অধ্যুষিত এলাকাগুলি নিয়েই দুশ্চিন্তায় ঝাড়খণ্ড প্রশাসন। জামশেদপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন ঘিরে প্রচার তুঙ্গে উঠলেও পশ্চিমবঙ্গ সংলগ্ন বহড়াগোড়া, চাকুলিয়া, ধলভূমগড়, ঘাটশিলার মতো ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে জঙ্গিদের ভয়ে কার্যত ঢোকার সাহস পাচ্ছেন ভোটপ্রার্থীরা। ওড়িশা সীমাবর্তী পোটকা ব্লকটিও প্রশাসনকে ভাবাচ্ছে। যা পরিস্থিতি তাতে ঘাটশিলা, বহরাগোড়া ও পোটকায় ছ’টি বুথ অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জায়গায় সরানোর জন্য ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে পূর্ব সিংভূম জেলা প্রশাসন।
পূর্ব সিংভূমের কালেক্টর হিমানী পাণ্ডে আজ বলেন, “বহড়াগোড়ার মধুপুর, ঘাটশিলার বাসাডেরা ও ভুমরু এবং পোটকার সাতবখরা, কাশিবেড়া, কুণ্ডুয়ার মত জায়গাগুলিতে বুথ রাখা একেবারেই নিরাপদ নয়। এই বুথগুলি সরানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।” পূর্ব সিংভূমের এসএসপি অখিলেশ কুমার ঝা অবশ্য নিরাপত্তার স্বার্থে লোকসভা কেন্দ্রের অতি স্পর্শকাতর ও স্পর্শকাতর বুথগুলির অবস্থান নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া ব্লকগুলিই যে সব থেকে দুশ্চিন্তার কারণ তা তিনি স্বীকার করেছেন।
সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়ি লাগোয়া ধলভূমগড়ের রাউতাড়ায় মাওবাদী পোস্টার মেলার পরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই পোস্টারে মাওবাদীদের তরফে বলা হয়েছে: কংগ্রেস ও বিজেপি এখানে নিষিদ্ধ। তাদের পরিত্যাগ করুন। স্থা্নীয় সূত্রের খবর, শহর জামশেদপুরে প্রার্থীদের জমজমাট রোড-শো, ভিড়-ঠাসা সভা বা মোড়ে মোড়ে গজিয়ে ওঠা পার্টি অফিস দেখা গেলেও প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে এখনও ভোটের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে না। আজই বহড়াগোড়ার গুড়াবান্ধা থানা এলাকায় কংগ্রেস প্রার্থী বন্না গুপ্তের সভা করার কথা ছিল। কিন্তু ‘হিতৈষী’দের পরামর্শে বন্না তাঁর কর্মসূচি পাল্টে ফেলেন। প্রার্থী নিজে না-গিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীদেরই রাহাখরচ দিয়ে নিরাপদ জায়গায় ডেকে আনা হয়েছে। তাঁর প্রচার-টিমের এক সদস্যের কথায়, “ভিতরের গ্রামগুলিতে, বিশেষত দলমা পাহাড়ের পাদদেশে যাওয়াটাই ঝুঁকির। ল্যান্ডমাইনের ফাঁদ পাতা থাকতে পারে।” জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জামশেদপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দু’টি বিধানসভা ক্ষেত্র, ঘাটশিলা ও বহড়াগোড়ার বেশিরভাগ বুথ এলাকাই মাওবাদী-অধ্যুষিত। ঘাটশিলার ২৫২টি বুথের মধ্যে ১৪০টি অতি স্পর্শকাতর ও ৬৫টি বুথ স্পর্শকাতর। অর্থাৎ ৮২ শতাংশ বুথ নিয়েই প্রশাসনের উদ্বেগ রয়েছে। বহড়াগোড়ায় ২২৫টি বুথের মধ্যে ১০১টিই স্পর্শকাতর ও ৫৯টি অতি স্পর্শকাতর। তবে অন্যত্র বুথ সরানো হলে গ্রামবাসীরা সমস্যায় পড়বেন। |
|
|
|
|
|