|
|
|
|
নিজের বাড়িতেই উদ্ধার বধূর দেহ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
নাইলনের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগা অবস্থায় নিজের বাড়ির রান্নাঘর থেকে এক গৃহবধূর দেহ উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাটের বিষ্ণুপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবেরিয়া শিবতলা গ্রামে। মৃতার নাম মিলি ঘোষ (৪০)। পুলিশ জানিয়েছে, রান্নাঘরের মাটিতে পড়ে ছিল দেহটি। ওই বধূর আলমারি লণ্ডভণ্ড অবস্থায় ছিল। তবে কিছু খোয়া যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বাড়িতে ঢুকে মিলিদেবীকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর একটা নাগাদ মিলিদেবীর ছেলে টুকাই কাজ সেরে বাড়িতে ঢুকে প্রথমে তাঁর মাকে রান্নাঘরে গলায় ফাঁস লাগা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পাশেই কিছু সব্জি কাটা ছিল। কিছুটা রান্নাও করা ছিল। তিনি প্রথমে স্থানীয় লোকেদের ডাকেন। এর পরেই খবর যায় পুলিশে। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই বধূকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পুলিশ জেনেছে, মিলিদেবীর স্বামী জয়দেব ঘোষ জেসপ-এর কর্মী। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার সকালেও তিনি অফিসে গিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। টুকাই লাউহাটি এলাকায় একটি দোকানে কাজ করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের অবস্থা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, সেখানে ঢুকে তছনছ করেছে দুষ্কৃতীরা। মিলিদেবীদের শোয়ার ঘরের আলমারি খোলা ছিল। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, আলমারি ভাঙা হয়নি। খোলা হয়েছে চাবি দিয়েই। বাড়িতে সোনা, নগদ টাকা, মোবাইল ফোনের মতো বিভিন্ন দামি জিনিস থাকলেও সে সবের কিছুই চুরি যায়নি।
বিকেলের দিকে পুলিশ-কুকুর নিয়ে ফের ঘটনাস্থলে যান পদস্থ কর্তারা। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িটির প্রধান দরজা ভাঙা হয়নি। অর্থাৎ, মিলিদেবী নিজেই হয়তো দরজা খুলে দিয়েছিলেন। যার থেকে পুলিশের সন্দেহ, দুষ্কৃতীরা ওই বধূর পরিচিত ছিল। তাই এই খুন ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশের অনুমান, মিলিদেবীকে খুন করার জন্যই এসেছিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশের নজর অন্য দিকে ঘোরানোর জন্য ওই বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে আলমারি তছনছ করে যায় তারা। মিলিদেবীর স্বামী, ছেলে, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে খুনের পিছনে কী কারণ থাকতে পারে, তা বোঝা যাচ্ছে না।
মিলিদেবীর বাড়ির রাস্তাতেই থাকেন তাঁদের গ্রামের প্রধান। আশপাশেও রয়েছে অনেক বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সদ্য মিলিদেবীদের বাড়ি দোতলা হয়েছে। কিছু দিন আগেও ওই বাড়িতে রাজমিস্ত্রিরা কাজ করছিলেন। মিলিদেবীর এক প্রতিবেশী জানান, টুকাইয়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন তাঁরা। বাড়িতে ঢুকে দেখেন, রান্নাঘরে গলায় ফাঁস লাগা অবস্থায় মিলিদেবীর নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। ওই বধূর গলায় নাইলনের দড়ি চেপে বসায় গভীর ক্ষত হয়ে গিয়েছিল। মিলিদেবীর এক প্রতিবেশী বলেন, “শান্ত ও নিরীহ গোছের মেয়ে ছিল মিলি। কী করে এ সব হয়ে গেল ভাবতেই পারছি না।” |
|
|
|
|
|