|
|
|
|
সূচক বাড়ল ৫১৩ |
সংবাদসংস্থা • মুম্বই |
এক লাফে ৫০০ পয়েন্টেরও বেশি উত্থানের দৌলতে ফের ১৮ হাজারের ঘরে ঢুকে পড়ল সেনসেক্স। এক দিকে, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি। আর অন্য দিকে, গ্রিসের আর্থিক সঙ্কটমুক্তি নিয়ে অবশেষে আশার আলো। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত এই দু’য়ের হাত ধরেই শুক্রবার উত্থানের মুখ দেখেছে ইউরোপ ও এশিয়ার অধিকাংশ দেশের শেয়ার বাজার। এবং এই একই কারণে চাঙ্গা হয়েছে ভারতের বাজারও। তবে দীর্ঘ মেয়াদে বাজারের শক্তি কতটা বজায় থাকবে, তা মূলত মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস এবং আর্থিক বৃদ্ধির গতি তরান্বিত হওয়ার উপরেই নির্ভর করবে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত। বিশেষত যেখানে আজই ডিজেল, কেরোসিন ও রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিগোষ্ঠী। কারণ, ডিজেলের এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব অন্তত স্বল্প মেয়াদে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কিছুটা বাড়াবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। ১৭ হাজারের ঘরের ‘তলানি’তে নেমে আসার পর গতকালই প্রায় ১৭৭ পয়েন্ট উত্থানের মাধ্যমে সামান্য হলেও ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল ভারতের বাজার। সেই ধারা বজায় রেখেই এ দিন ৫১৩.১৯ পয়েন্ট উঠেছে সেনসেক্স। গত ১ মার্চের পর এক দিনের উত্থানের বিচারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। থেমেছে ১৮,২৪০.৬৮ অঙ্কে। ১৫১.২৫ উঠে ৫,৪৭১.২৫ অঙ্কে পৌঁছেছে সূচক নিফটি-ও।
আন্তর্জাতিক শক্তি এজেন্সি (আইইএ) আরও ৬ কোটি ব্যারেল অশোধিত তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, বিশ্ব বাজারে তার দাম কমেছে বেশ কিছুটা। যা নিঃসন্দেহে বিশ্ব অর্থনীতির পক্ষে বড় সুখবর। এই খবর চাঙ্গা করেছে ভারতের বাজারকে।
লগ্নিকারীদের স্বস্তি জুগিয়েছে গ্রিসের আর্থিক সঙ্কট মেটার বিষয়ে ইউরোপীয় দেশগুলির আলোচনায় ঐকমত্যও। ঋণের দায়ে দেউলিয়া ঘোষণার পথে হাঁটা গ্রিসকে সঙ্কট থেকে উদ্ধারের পথ কী হবে, তা নিয়ে ফলপ্রসূ হয়েছে আলোচনা। রফাসূত্র অনুযায়ী, গ্রিসকে সহায়তা দিতে রাজি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও কিছু বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। উল্টো দিকে, আগামী পাঁচ বছর মিতব্যয়িতার পথে হেঁটে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গ্রিসও। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারকে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী জানান, হাল ফেরাতে এই সময়ের মধ্যে আমূল অর্থনৈতিক সংস্কারের পথে হাঁটবেন তাঁরা।
মূলত এই দুই কারণেই এ দিন ঊর্ধ্বমুখী ছিল চিন, হংকং, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া-সহ এশিয়ার অধিকাংশ দেশের শেয়ার বাজার। চাঙ্গা ছিল ইউরোপের বাজারও। যা প্রভাব ফেলেছে ভারতের বাজারের উত্থানে। যে কারণে, সেনসেক্সে সর্বাধিক গুরুত্ব সম্পন্ন রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর এ দিন পড়া সত্ত্বেও ৫০০ পয়েন্টের বেশি এই উত্থানকে ‘ভাল লক্ষণ’ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অবশ্য দীর্ঘ মেয়াদে বাজারের এই চাঙ্গা ভাব কতটা থাকবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে। তাঁদের মতে, গত ১৫ মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ১০ বার সুদ বাড়ানোর পর এখনও আকাশছোঁয়া সার্বিক মুদ্রাস্ফীতির হার। এমনকী গতকালই প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ৯.১৩%। এই পরিস্থিতি যুঝতে তাই স্বাভাবিক ভাবেই ফের সুদ বৃদ্ধির পথ খোলা রাখছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। অথচ সুদ বাড়ার ফলে ইতিমধ্যেই শ্লথ হয়েছে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার। কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে আর্থিক বৃদ্ধির গতিও। তাই তাঁদের মতে, এই পরিস্থিতিতে মুদ্রাস্ফীতিতে রাশ টানতে কেন্দ্র কতটা সফল হবে (বিশেষত এ দিন ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির পর), সেটিই হবে বাজারের ঊর্ধ্বগতি বজায় থাকার শর্ত। |
|
|
|
|
|