‘সাইকেল চোর’ অপবাদে যুবকের চুল কাটল জনতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
‘চোর’ অপবাদে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে মারধরের পরে চুল কেটে নেওয়া হল এক যুবকের। যদিও পুলিশের অনুমান, তিনি আদৌ চোর নন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি।
আসানসোলের এসবি গড়াই রোডের ঘটনা। সাইকেল চোর সন্দেহে এখানেই এক যুবককে রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে এলাকার কিছু যুবক। কেটে নেওয়া হয় চুলও। ঘণ্টা দুয়েক চলে ওই ‘উচিত শিক্ষাদান’ পর্ব। পরে পুলিশ এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইতিমধ্যেই দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। |
|
তখন চলছে নির্যাতন। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ ওই যুবক একটি বহুতলে ঢুকে একটি সাইকেল চুরি করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়ে যায় সে। হঠাৎ এলাকার কিছু যুবক তাঁকে ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে বেঁধে মারধর শুরু করে। এলাকার মানুষের আপত্তিতেও কান দেয়নি তারা। যদিও প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, ওই যুবক সাইকেল চুরি করেননি। এলাকার কিছু যুবকের সঙ্গে কোনও ব্যাপারে তাঁর বচসা হয়। ঘটনাটি তারই পরিণতি। এছাড়া ওই যুবকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। চিকিৎসার পরে ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নিখিল ভদ্র বলেন, “এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ এক ব্যক্তিকে সাইকেল চোর সন্দেহে পাকড়াও করে এলাকার কিছু যুবক। এর পরেই তারা ওই যুবককে ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে বেঁধে মারধর শুরু করে। এলাকার অনেকেই এর প্রতিবাদ জানান। তাতে কান না দিয়ে এলাকার কিছু যুবক এই ঘটনা ঘটায়। ঘণ্টা দুয়েক পরে পুলিশ এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন আবার বলেন, “ওকে উচিত শিক্ষা দিয়েছি। পুলিশ তো ওদের আটকে রাখতে পারবে না। তাই আমরাই সাজা দিয়েছি।”
আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পরে ওই যুবককে বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তার কাছ থেকেও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। পরে ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। ডিএসপি (সদর) চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, “এ ভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যায় না। যারা এ কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|