|
|
|
|
ধস-পুনর্বাসনে এডিডিএ-কে ১৬০ কোটি দিল ইসিএল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
রানিগঞ্জ ও আসানসোলের খনি অঞ্চলে ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রায় ১৬০ কোটি টাকা এডিডিএকে দিয়েছে ইসিএল। সম্প্রতি ওই টাকার চেক এডিডিএ’র এক অফিসারের হাতে তুলে দেন ইসিএলের জিএম (অর্থ) সুজিত চট্টোপাধ্যায়। এডিডিএ-র সহকারী কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্বপনকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওই টাকা দিয়ে জমি কেনা হবে। সেই জমিতে হবে স্যাটেলাইট টাউনশিপ। ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের সেখানে তুলে আনা হবে। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, সালানপুরের বনজেমাহারির একটি ও বারাবনির গৌরান্ডির ১১টি মৌজা থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার একর জমি কেনা হবে। এ ছাড়া ৯৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে ধস কবলিত অঞ্চলে জনজরিপের কাজের জন্য। এডিডিএ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বছর দুই আগে এই কাজের জন্য প্রথম বার ৫ কোটি টাকা দিয়েছিল ইসিএল। |
|
ফাইল চিত্র। |
এডিডিএ’র তরফে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালের মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী রানিগঞ্জ, আসানসোল খনি এলাকার ৫টি অঞ্চল সামডিহি, বাঙালপাড়া, হরিশপুর, কেন্দা ও সাঁকতোড়িয়াকে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর মধ্যে সবথেকে বেশি বিপজ্জনক সালানপুরের সামডিহি অঞ্চল। এই এলাকায় প্রায় প্রতি দিনই মাটি ফুঁড়ে আগুন ও ধোঁয়া বেরোচ্ছে। মাটিতে বড় বড় ফাটল হচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকা ধসে যাচ্ছে। ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার বনজেমাহারি কোলিয়ারি সংলগ্ন এলাকার জমি বেশ কিছুটা বসে যায় বুধবারই। তৈরি হয় বড় ফাটল। কোলিয়ারির একটি ওয়ার্কশপের দেওয়ালেও বড় আকারের ফাটল ধরে। পরে ডোজার দিয়ে খনির ফাটলে মাটি ভরাট করতে হয়। অবৈধ খননের জন্যই ওই ধস বলে প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ করেন কোলিয়ারির এজেন্ট।
এ ডিডিএ-র সহকারী কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্বপনবাবু জানিয়েছেন, সামডিহি এলাকার জমি ও জনজরিপের কাজ হয়ে গিয়েছে। যাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে তাঁদের পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য ছবি তোলার কাজও শেষ। এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সামডিহির ১৩২টি পরিবার, কেন্দার ৮৪১, বাঙালপাড়ার ১৭৯, হরিশপুরের প্রায় পাঁচশো ও সাঁকতোড়িয়া গ্রামের প্রায় ২৩০০ পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। সাঁকতোড়িয়ার ধস কবলিত অঞ্চলের জমি ও জন জরিপের কাজ অবশ্য এখনও শেষ হয়নি।
এর ক’দিন আগেই পূর্ব রেলের গ্র্যান্ড কর্ড লাইন থেকে মাত্র ১৫ মিটার দূরে বড় ধস নামে আসানসোলের কালিপাহাড়িতে। সেখানেও অভিযোগের আঙুল ওঠে অবৈধ খননের দিকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রানিগঞ্জ আসানসোল খনি অঞ্চলের ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থের মামলা হয় ১৯৯৭ সালে। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ হারাধন রায়ের করা এই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট ইসিএলকে পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। এর প্রেক্ষিতে একটি মাস্টার প্ল্যান বানায় ইসিএল। পরিকল্পনাটি দু’বার পরিমার্জিত হয়। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ১০ বছরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রকল্পের খরচ ধরা হয় ২৬২৯ কোটি টাকা। ২০০৯ সালের জুন মাসে কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ অনুমোদন করে। তারই একটি অংশ সম্প্রতি এডিডিএকে দিয়েছে ইসিএল। |
|
|
|
|
|