|
|
|
|
আড়াই বছরেই ভেঙে পড়ল গার্ডওয়াল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বিষ্ণুপুর |
নিম্নচাপের বৃষ্টিতে চেকড্যামের গার্ডওয়াল ছাপিয়ে জল ঢুকেছিল গ্রামে। এ বার রোদ উঠতেই ধসে পড়ল সেই গার্ডওয়াল। এর ফলে বর্ষায় বানভাসি হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন বিষ্ণুপুর ব্লকের বনকাটি গ্রামের বাসিন্দারা।
গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, আড়াই বছরের মধ্যে একটি গার্ডওয়াল কেন ভেঙে পড়বে। গ্রামবাসী নিমাই ঘোষ, তারক প্রতিহারদের অভিযোগ, “গার্ডওয়াল তৈরিতে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। সিমেন্ট কম মেশানো হয়েছে। সে জন্যই এত কম দিনে গার্ডওয়াল ধসে পড়ল। আমাদের আশঙ্কা, অল্প বৃষ্টিতেই ভেসে যাবে গোটা গ্রাম।” প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছিল ঝরিয়া-বনকাটি খালের এই গার্ডওয়ালটি। কাজ দেখাশোনার জন্য একটি বেনিফিশিয়ারি কমিটি করে দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট মড়ার গ্রাম পঞ্চায়েত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সিপিএম নিয়ন্ত্রিত পঞ্চায়েত ওই বেনিফিশিয়ারি কমিটিতে দলীয় কর্মীদের ঢুকিয়ে টাকা নয়ছয় করায় অল্পদিনেই ভেঙে পড়েছে গার্ডওয়াল। তাঁরা গার্ডওয়াল দ্রুত মেরামতির দাবি তুলেছেন।
ওই বেনিফিশিয়ারি কমিটির গ্রাম-সদস্য শ্যামসুন্দর ঘোষের দাবি, “কমিটিতে আমার নাম থাকলেও কখনও কোনও মিটিংয়ে ডাকা হয়নি। সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধানের নির্দেশে কাজের দেখাশোনা করতেন দলেরই কিছু লোকজন। ফলে প্রকল্পের কাজে বহু অনিয়ম হয়েছে।” বিষ্ণুপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মথুর কাপড়ি বলেন, “নির্মাণকাজ চলার সময় এবং পরেও বিভিন্ন সময়ে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা মড়ার পঞ্চায়েত অফিসে একাধিকবার স্মারকলিপি দিয়েছি। প্রধান কোনও ব্যবস্থাই নেননি।” তাঁর অভিযোগ, বহু টাকা নয়ছয় হয়েছে চেকড্যামের এই গার্ডওয়াল নির্মাণের পিছনে। |
|
ছবি: শুভ্র মিত্র। |
প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালের ১৫ মে। শেষ হয় ২০০৮ সালের ১৮ জানুয়ারি। মোট বরাদ্দ অর্থ ১৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ৬৪৩ টাকা। বিষ্ণুপুরের বিডিও সুদীপ্ত সাঁতরা বলেন, “কাজের বিনিময়ে খাদ্য প্রকল্পের আওতায় এই গার্ডওয়ালের কাজ করানো হয়েছিল। প্রকল্পের জন্য একটি বেনিফিশিয়ারি কমিটিও হয়েছিল। কিুন্তু এত অল্প সময়ে গার্ডওয়ালটি কী করে ধসে গেল, বুঝতে পারছি না।” তিনি জানান, কাজ দেখাশোনার জন্য প্রধানকে ওই কমিটি গড়তে বলা হয়েছিল। কেন তা ভাঙল, সে ব্যাপারে প্রধানের কাছেই বিস্তারিত জানতে চাওয়া হবে। এ দিনই ওই গার্ডওয়াল পরিদর্শনে যান সুদীপ্তবাবু। তাঁর কথায়, “পরিস্থিতি বেশ খারাপ। আপাতত বালির বস্তা ফেলে গার্ডওয়াল বাঁচানোর চেষ্টা করা হবে। বর্ষার পরে নতুন করে গার্ডওয়াল তৈরি করে দেওয়া হবে।” অনিয়ম হয়েছে কি না, তা-ও তিনি বিশদে খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন বিডিও। পঞ্চায়েত প্রধান সন্দীপ ঘোষ অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “ওই প্রকল্পে কোনও দুর্নীতির জন্য গার্ডওয়াল ভেঙে পড়েছে কি না, জানি না। এ বিষয়ে যা বলার বিডিও-ই বলবেন।”
|
|
|
|
|
|