|
|
|
|
বেহাল রাস্তা, গাড়ি না চালানোর হুমকি |
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় • রামপুরহাট |
প্রায় দশ বছর হল রাস্তা সংস্কারে হাত পড়েনি। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় গাড়ি চালাতে মাঝে মধ্যে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে চালকদের। তাই অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছে রামপুরহাট মহকুমা বাসমালিক সমিতি। বাস কর্মীরাদের পাশাপাশি সমস্যায় পড়েছেন এলাকার বাসিন্দা থেকে পথচলতি মানুষ সকলেই। তাঁরাও রাস্তা সংস্কারের দাবি তুলেছেন।
রাস্তা বেহালের জন্য সম্প্রতি মহকুমার চাতরা, হিয়াতনগর, জাজিগ্রাম, রুদ্রনগর রুটে চলাচলকারী বাসের কর্মীরা লিখিত ভাবে বাস মালিক সমিতির কাছে আবেদন করেছেন, রাস্তা সংস্কার না হলে ভবিষ্যতে তাঁরা বাস চালাবেন না। জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক জামিরুল ইসলাম জানান, শুধু চাতরা, জাজিগ্রাম, হিয়াতনগর, রুদ্রনগর রুট নয়, মহকুমার ১৫টি রুটে রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। শুধু তাই নয়, পানাগড়-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের অবস্থাও দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা বাস চালানো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন। তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে বুধবার মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।” |
|
বেহাল তেজহাটি থেকে সরধা যাওয়া রাস্তা। |
মহকুমাশাসক বিধান রায় বলেন, “রাস্তা সংস্কারের জন্য তাঁদের বিভাগীয় আধিকারিকদের জানাতে বলেছি।” জামিরুল ইসলামের দাবি, “আমরা রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে ইতিপূর্বে পূর্ত দফতর, পূর্ত দফতর(সড়ক), জাতীয় সড়কের বিভাগীয় আধিকারিকের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। কিন্তু তাঁরা এখনও পর্যন্ত খুব একটা সুরাহা করে উঠতে পারেননি। মহকুমাশাসকের কথা মতো ফের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের লিখিত ভাবে জানাব।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুরারই থানার চাতরা-জাজিগ্রাম ১৯ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রাস্তার খানাখন্দে জল জমে গিয়েছে। তাই ওই রুটে চলাচলকারী ১০টি বাস কর্মীরা এই অবস্থায় বাস চালাতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। একই অবস্থা মুরারই থানার পলশা থেকে হরিশপুর পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার পাকা সড়কের। সেখানে পাকা রাস্তার অস্তিত্ব কিছুই নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক জামিরুল ইসলাম। |
|
পিচ উঠে বিপজ্জনক অবস্থায় চামটি বাগানের কাছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। |
তাঁর ক্ষোভ, “ওই দু’টি রাস্তার পাশাপাশি মাড়গ্রাম থানার রামপুরহাট-দুনিগ্রাম, রামপুরহাট-চাঁদপাড়া, রামপুরহাটের রামপুরহাট-বৈধড়া, নলহাটি-জাজিগ্রাম রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ার জন্য বাস কর্মীদের পাশাপাশি সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষও।” এ তো গেল পূর্ত দফতরের (সড়ক) রামপুরহাট মহকুমার অধীনে থাকা রাস্তাগুলি। সাঁইথিয়ার বেসিক মোড় থেকে বুধিগ্রাম পর্যন্ত পাকা সড়কের অবস্থাও খারাপ।
স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ মণি, অসীম চট্টোপাধ্যায়, আসাদুজ্জামানদের ক্ষোভ, “রামপুরহাটের তেজহাটি-সরধা, বড়পাহাড়ি মোড় থেকে নারায়ণপুর, মল্লারপুর থেকে নাকপুর চেকপোস্ট, নলহাটির মেহেগ্রামের কিছু অংশ, নলহাটি থেকে হরিদাশপুর যাওয়ার রাস্তায় অল্প বৃষ্টিতে হাঁটু সমান জল হয়। ওই সব রাস্তার বেশির ভাগ অংশে পাথর বলে কিছু নেই। রাস্তা বেহালের জন্য মাঝে মধ্যে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।” রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে পূর্ত দফতরের (সড়ক) জেলা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জাহ্নবী সরকার বলেন, “রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অনুমোদন পাওয়া যায়নি।” পূর্ত দফতরের রামপুরহাট মহকুমার সহকারী বাস্তুকার প্রিয়ঙ্কর মাজি বলেন, “বেশ কিছু রাস্তা চওড়া করার প্রস্তাব কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বৃষ্টির জন্য কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে রাস্তার খারাপ অংশগুলি মেরামতি করা হবে।” পানাগড়-মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের (মহম্মদবাজার-মোরগ্রাম পর্যন্ত) সরকারী বাস্তুকার অমলজ্যোতি রায় বলেন, “ইতিমধ্যে জাতীয় সড়কের খারাপ জায়গাগুলি মেরামতি করার কাজ শুরু হয়েছে। বর্ষা ঢুকে যাওয়ায় সংস্কার করতে সমস্যা হচ্ছে। আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি অনুযায়ী রাস্তা মেরামতির কাজ করা হবে।”
|
ছবি: সব্যসাচী ইসলাম। |
|
|
|
|
|