|
|
|
|
শৃঙ্খলারক্ষা ও উন্নয়নে কমিটি গড়ছে তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
উন্নয়ন ও শান্তি। রাজ্য সরকারের এই দুই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ‘পিছিয়ে পড়া’ এবং ‘মাওবাদী প্রভাবিত’ পশ্চিম মেদিনীপুরে শাসকদল তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব পদক্ষেপ করতে শুরু করল।
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহরের ফেডারেশন হলে দলের নবগঠিত কোর-কমিটির বৈঠকে শৃঙ্খলারক্ষা ও উন্নয়ন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কোর কমিটির সদস্যরাই হবেন এই দুই কমিটিরও সদস্য। তাঁরা ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি দীনেন রায় ও কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ। প্রদ্যোৎবাবু বলেন, “ভোটের পর থেকে তেমন কোনও সংঘর্ষ বা অশান্তির ঘটনা না-ঘটলেও ছোটখাটো কিছু অভিযোগ উঠেছে। তেমন কিছুও যাতে না-হয়, সেই লক্ষ্যেই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি করা হল। আর পিছিয়ে পড়া এই জেলার সার্বিক উন্নয়নের রূপরেখা সন্ধানেও একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। যে কমিটি সরকারের কাছে উন্নয়ন বিষয়ে সুপারিশ করবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের এত দিন লালদুর্গেও এ বার বিধানসভা ভোটে চমকপ্রদ সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। কিন্তু জেলায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা বেশ দুর্বল। নতুন অবস্থায় সংগঠন ঢেলে সাজাতে ইতিমধ্যেই জেলা কমিটি পুনর্গঠন করেছেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। সভাপতি বদলও হয়েছে। প্রণব বসুকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক কাজেই এত দিন বিশেষ ভাবে যুক্ত থাকা দীনেন রায়কে। ৩৬ সদস্যের কোর-কমিটি তৈরি হয়েছিল আগেই। সেই কমিটিকে দিয়েই জেলায় সংগঠন মজবুত করতে চাইছেন রাজ্য নেতৃত্ব। এ দিকে নির্বাচনের পর থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোটখাটো অশান্তির ঘটনা ঘটেই চলেছে। এক সময়ে জোর কদমে অস্ত্র-উদ্ধারও হয়েছে। সিপিএম নেতা-কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগও উঠেছে। বিভিন্ন পেশার মানুষ থেকে শুরু করে সাধারণ সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের জরিমানা করা, তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, সিপিএম নেতা-কর্মীদের এমনকী তাঁদের কর্মক্ষত্রে যেতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে নানা সময়ে অভিযোগ উঠেছে। এতে নতুন শাসকদলের ভাবমূর্তি কিছুটা মলিনও হচ্ছে। আর অশান্তি চললে জেলায় উন্নয়ন-কাজও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীদের রাশ টানতেই গড়া হচ্ছে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। আর সেই সঙ্গেই উন্নয়নের মাধ্যমে বঞ্চিত মানুষজনের ক্ষোভ দূর করাও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য জরুরি বলে মনে করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সে কারণেই গনা হচ্ছে উন্নয়ন কমিটিও।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোথাও কোনও অশান্তি বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে জানতে পারলেই দলীয় নেতারা সেখানে যাবেন। যেমন ক’দিন আগে ঝাড়গ্রামের চন্দ্রিতে সিপিএম সমর্থকদের উপরে হামলা, বাড়িঘর পোড়ানোর অভিযোগ ওঠার পরেও দীনেনবাবুর নেতৃত্বেই তৃণমূলের প্রতিনিধিরা সেখানে গিয়েছিলেন। নিজেরা আক্রান্ত না-হওয়া সত্ত্বেও এই উদ্যোগ প্রশংসতিও হয়েছে নানা মহলে। এই উদ্যোগ বজায় রাখতেই চাইছেন দীনেনবাবুরা। তাতে করে দলের গ্রহণযোগ্যতা এবং গণভিত্তি প্রসারিত হবে, সংগঠনও শক্তিশালী হবে বলে মনে করছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন উদ্যোগে তৃণমূল স্তর থেকে ধারাবাহিক ভাবে তথ্য ও পরামর্শ জোগানোর লক্ষ্যেই উন্নয়ন-কমিটিও গড়া হচ্ছে। |
|
|
|
|
|