|
|
|
|
এক নম্বরের মান রাখছে সেই অভিজ্ঞরাই |
দীপ দাশগুপ্ত |
ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের সেই ঐতিহ্য এখন হয়তো নেই। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের ঐতিহ্য তো আছে। সাবাইনা পার্কে সেটা রক্ষা করার দায়িত্ব ছিল ধোনির টিমের উপর। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর টিম তারা। সদ্য বিশ্বকাপ জিতে এসেছে। গর্বরক্ষার দিক থেকে এই টেস্টের গুরুত্ব কিছু কম ছিল না। |
|
সিরিজের শুরুতেই এল তৃপ্তির জয়। প্রধান কাণ্ডারী রাহুলের সঙ্গে অধিনায়ক ধোনি ও ইশান্ত। এ এফ পি |
৬৩ রানের এই জয়কে হয়তো গত ডিসেম্বরের ডারবান টেস্ট জয়ের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। নিজেদের দেশে স্টেইন-মর্কেল-কালিসদের দক্ষিণ আফ্রিকা আর ড্যারেন স্যামির ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিশ্চয়ই এক নয়। তবু এক দিন বাকি থাকতে সাবাইনা পার্কের টেস্ট জয়কে আমি উপরের দিকে রাখব দু’টো কারণে। এক, বিদেশে ধারাবাহিক ভাবে জেতার যে রেকর্ড আমরা তৈরি করতে পেরেছি, সেটাকে অসমান বাউন্সের পিচ এবং প্রথম দিন ব্যাটিং বিপর্যয় সত্ত্বেও ধরে রাখা গেল বলে। দ্বিতীয়ত, এখানে আমরা সিরিজের প্রথম টেস্টটা জিতলাম। সেই সৌরভ-রাইট জমানা থেকে আমরা বিদেশে জেতার অভ্যেস তৈরি করেছি। কিন্তু রেকর্ড ঘাঁটলে দেখা যাবে আমরা শুরুটা ভাল করতে পারি না। আশা করব, সেই ধারা পাল্টানোর শুরুটা হয়ে থাকল ওয়েস্ট ইন্ডিজে।
রাহুল দ্রাবিড়ের কথা বিশেষ ভাবে বলতেই হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সে ভাবে রান না পাওয়ার পর কত রকম কথা উঠছিল ওকে নিয়ে। এমনও শুনছিলাম যে, রাহুলের নাকি এ বার সমস্ত ধরনের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। এখন ভাবতে গেলে শিউরে উঠছি, দ্বিতীয় ইনিংসে ওর ১১২ রানের অনমনীয় ইনিংস না থাকলে এই টেস্টের ফলাফল কী হতে পারত! এটাও তো ভুলে গেলে চলবে না যে, প্রথম ইনিংসে অন্য দিক থেকে যখন পরপর উইকেট পড়ছে, তখনও রাহুল প্রথম প্রতিরোধের কাজটা শুরু করেছিল। এ রকম লো-স্কোরিং টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসের ওই ৪০টা রানও যে অতি মূল্যবান! |
|
চন্দ্রপল আউট। বোলার প্রবীণ কুমারকে নিয়ে রায়না-কোহলির উল্লাস। এ এফ পি |
‘অভিজ্ঞতা বনাম তারুণ্য’ জাতীয় বিতর্কও এ বার বন্ধ হওয়া দরকার। গত এক-দেড় বছরে লক্ষ্মণ বেশ কিছু অসাধারণ ইনিংস খেলে অবিশ্বাস্য সব টেস্ট জিতিয়েছে। সচিন গত দু’বছরে কেরিয়ারে সব থেকে বেশি রান করেছে। এখানে টিমের ঘোর দুঃসময়ে টেনে তুলল রাহুল। প্রথম ইনিংসে রায়না-হরভজনের দুঃসাহসিক পার্টনারশিপকে মাথায় রেখেও বলছি, ম্যান অফ দ্য ম্যাচ একদম ঠিক বাছা হয়েছে। টেস্টে তফাত গড়ে দেওয়া লোকের নাম রাহুল দ্রাবিড়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেল-এন্ডাররা আবার শেষের দিকে দারুণ লড়াই করল। কিন্তু তাতে ম্যাচটা সাময়িক নাটকীয় হল, ফলাফল পাল্টে দিতে পারল না। ক্যাপ্টেন ধোনির একটা অভ্যেস আছে ফাটকা খেলে জেতার। এ দিনও সেটা দেখা গেল। প্রায় বারো ওভার ধরে যখন শেষ উইকেটটা পড়ছে না তখন রায়নাকে এনে বাজি জিতল ধোনি।
আমার খালি মনে হচ্ছে, ইংল্যান্ড সফরের দল নির্বাচন খুব জমিয়ে দিল প্রবীণ কুমার। এই প্রথম ও টেস্ট খেলছে। আর প্রথম সুযোগেই দুই ইনিংস মিলিয়ে ছয় উইকেট। এ দিন চন্দ্রপল (৩০) আর ড্যারেন ব্র্যাভো (৪১) দু’টো আসল উইকেটই তুলল প্রবীণ। ইংল্যান্ডের ভারী আবহাওয়ায় এর পর টেস্ট দলে ওকে উপেক্ষা করা যাবে?
|
স্কোর |
ভারত
প্রথম ইনিংস ২৪৬।
দ্বিতীয় ইনিংস ২৫২।
|
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
প্রথম ইনিংস ১৭৩।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস (তৃতীয় দিন ১৩১-৩-এর পর) |
ব্র্যাভো বো প্রবীণ ৪১,
চন্দ্রপল ক রায়না বো প্রবীণ ৩০,
ন্যাশ এলবিডব্লিউ অমিত ৯,
বাও ক কোহলি বো হরভজন সিংহ ০,
স্যামি ক লক্ষ্মণ বো অমিত ২৫,
রামপল ক ধোনি বো ইশান্ত ৩৪,
এডওয়ার্ডস ন.আ. ১৫,
বিশু বো রায়না ২৬ অতিরিক্ত: ১৭, মোট: ২৬২। পতন: ৬২, ৬৩, ৮০, ১৪৮, ১৪৯, ১৫০, ১৮১, ১৮৮, ২২৩, ২৬২। বোলিং: প্রবীণ ১৬-৩-৪২-৩, ইশান্ত ১৭-৩-৮১-৩, অমিত ১৩-১-৬২-২,
হরভজন ১৬-৩-৫৪-১, রায়না ৬.২-১-৯-১। |
|
|
|
|
|
|