|
|
|
|
‘কাজিরাঙা’কে চিঠি হিতেনের |
অভয়ারণ্যগুলিতে অসম অনুপাত স্ত্রী-পুরুষ গন্ডারের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলের পুরুষ গণ্ডারের সঙ্গিনীর অভাব ঘোচাতে অসম সরকারের দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্য বন দফতর। রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন নিজেই ওই ব্যাপারে তৎপর হয়েছেন। ইতিমধ্যেই দফতরের পদস্থ কর্তাদের অসম বন প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। চলতি মাসেই বিষয়টি নিয়ে অসম সরকারের কাছে লিখিত প্রস্তাব পাঠানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বনমন্ত্রীর নির্দেশেই। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে অসম সরকারের কাছে কাজিরাঙা অভয়ারণ্য থেকে স্ত্রী গণ্ডার পাঠানোর অনুরোধ আগামী সপ্তাহে পৌঁছে যাবে। বিনিময়ে রাজ্য বন দফতর অসমে পুরুষ গণ্ডার পাঠাতে রাজি। অসম সরকারের সন্মতি মিললে রাজ্য বন দফতর সেন্ট্রাল জু অথরিটির কাছে বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে অনুমতি চাইবে।
রাজ্যের বনমন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে স্ত্রী গণ্ডারের তুলনায় পুরুষ গণ্ডারের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। সঙ্গিনী বাছাই নিয়ে পুরুষ গণ্ডারদের মধ্যে লড়াইয়ের ঘটনা ঘটছে। এমনকী বাগে আনতে না-পারলে পুরুষ গণ্ডারের হামলায় স্ত্রী গণ্ডারের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এই সমস্যা মেটাতেই আমরা কাজিরাঙা থেকে কয়েকটি স্ত্রী গণ্ডার আনতে অসম সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। খুব শীঘ্র চিঠি পাঠাব।” উত্তরবঙ্গে জলদাপাড়া ও গরুমারা অভয়ারণ্যে মূলত গণ্ডারের আবাস রয়েছে। এর বাইরে বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চলে রয়েছে আরও ২টি গণ্ডার। জলদাপাড়ায় ১৫৫টি গণ্ডারের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা দ্বিগুণ। গরুমারায় ৩৪ গণ্ডারের মধ্যে ১৭টিই পুরুষ। ৪টি শাবক রয়েছে। ফলে সঙ্গিনী দখল নিয়ে লড়াই দুটি জঙ্গলে নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঙ্গিনী বাগে আনতে হামলার ঘটনাও ঘটছে। গত সপ্তাহে জলঢাকা নদীর পাড়ে বনকর্মীরা একটি স্ত্রী গণ্ডারের দেহ উদ্ধার করেন। পুরুষ গণ্ডারের হামলায় সেটির মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পরে জঙ্গলে স্ত্রী গণ্ডারের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে বন দফতরে তৎপরতা শুরু হয়। বনমন্ত্রী বলেন, “অসমের তরফে সবুজ সঙ্কেত পেলে সেন্ট্রাল জু অথরিটিকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে অনুমতি চাইব।” বনকর্মীদেরও ধারণ, এই উদ্যোগ সফল হলে জঙ্গলে শান্তি ফেরানো সহজ হবে। বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও ওমপ্রকাশ বলেন, “জলদাপাড়ায় এখন স্ত্রী গণ্ডার পিছু পুরুষ রয়েছে ২টি। কয়েক মাস আগে এখানেও পুরুষের হামলায় স্ত্রী গণ্ডার মারা যায়। স্ত্রী গণ্ডারের সংখ্যা বাড়লে এই ধরনের সমস্যা মিটবে।” বন্য প্রাণ বিভাগের জলপাইগুড়ির ডিএফও সুমিতা ঘটক বলেন, “পুরুষ গণ্ডারের হামলা জলদাপাড়ায় আগে ঘটেছে। এক পরিবারে প্রজনন রুখতে অসমের গণ্ডার আনার পরিকল্পনা ভাল হবে বলে মনে হয়।” |
|
|
|
|
|