|
|
|
|
পুলিশি ঘেরাটোপে সিঙ্গুরের কারখানা, ইট নিয়ে ধৃত যুবক |
গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় • সিঙ্গুর |
আদালতে যখন আইনি লড়াই চলছে, সিঙ্গুরে টাটাদের প্রকল্প এলাকায় সম্পত্তির নিরাপত্তার ব্যাপারে আরও সতর্ক হল প্রশাসন। এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, শুক্রবার তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তার আগেই গোটা বিষয়টি ঢেলে সাজিয়ে নিল পুলিশ-প্রশাসন।
শ’য়ে শ’য়ে উর্দিধারী পুলিশের উপস্থিতি, পুলিশ ক্যাম্প, কর্তাদের ঘনঘন আনাগোনা বৃহস্পতিবার দিনভর কারখানা চত্বরে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। বুধবার অভিযোগ উঠেছিল, ডামাডোলের সুযোগে মালপত্র চুরি হচ্ছে । এ দিন ইট চুরির অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রামবাসীরা যাতে কোনও কারণেই প্রকল্প এলাকার ভিতরে না যান, তার জন্য সকাল থেকে গ্রামে-গ্রামে মাইকে প্রচারও চালায় পুলিশ। কারখানার ছ’টি শেডে কী মালপত্র রয়েছে, সিঙ্গুর ব্লক অফিসের কর্মীরা তার তালিকাও তৈরি করেছেন।
এ দিন কারখানার বিভিন্ন শেড ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশই খালি। একটি শেডে ন্যানো গাড়ির ৯টি খোল পড়ে। অপর প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কিছু যন্ত্রাংশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নোটিস ঝুলিয়ে কারখানার ‘দখল’ নেওয়ার পরেই সংস্থার নিরাপত্তারক্ষীদের সরিয়ে পুলিশ মোতায়েন করেছিল হুগলি জেলা প্রশাসন। ফলে, স্থাবর-অস্থাবর যাবতীয় সম্পত্তির দেখভালের দায়িত্ব তাদের উপরে বর্তেছে। এই পরিস্থিতিতে চুরির অভিযোগ উঠলে তা শুধু রাজ্য সরকারের পক্ষে অস্বস্তিকর নয়, আইনি লড়াইয়ের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে প্রশাসনের আশঙ্কা। |
|
টাটার কারখানা পাহারা দেওয়ার জন্য কারখানার ভিতরেই তৈরি হয়েছে
পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প। বৃহস্পতিবার সিঙ্গুরে রাজীব বসুর তোলা ছবি। |
তবে টাটা মোটরসের নিজস্ব রক্ষীরা সরে যাওয়ার পরেই যে চুরি শুরু হয়েছে, তা কিন্তু নয়। যাতায়াত ও গরু চলাচলের সুবিধার জন্য টাটাদের প্রকল্প এলাকার পাঁচিলের বহু জায়গা ভেঙে আগেই ‘রাস্তা’ তৈরি হয়েছে। রক্ষীদের চোখ এড়িয়ে সেই পথে মাঝে-মধ্যে নানা সামগ্রী পাচার হচ্ছিল। এ নিয়ে অভিযোগও তুলছিল টাটা গোষ্ঠী। এ দিন গোটা সিঙ্গুর যখন হাইকোর্টে মামলার গতিপ্রকৃতি জানতে উদ্বিগ্ন, গ্রামবাসীদের কাউকে প্রকল্প এলাকার ত্রিসীমানায় দেখা যায়নি। গরু চরাতেও আসেননি কেউ। শুধু বিশ্বনাথ সীট নামে বাজেমিলিয়ার এক যুবককে প্রকল্প এলাকা থেকে ইট নিয়ে যেতে দেখে পুলিশ গ্রেফতার করে।
হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তার জন্য রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের বাহিনী ছাড়াও দুুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও বর্ধমান থেকে প্রায় ৬০০ পুলিশকর্মী আনা হয়েছে। দোবাঁধি, মনসাতলা-সহ কারখানার বিভিন্ন প্রান্তে তৈরি হয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। যেখানে পাঁচিল ভাঙা রয়েছে, সেই সব জায়গা অবিলম্বে টিন দিয়ে ‘সিল’ করে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হুগলির জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন এবং পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী এ দিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন। পুলিশ সুপার বলেন, “নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচুর পুলিশ ক্যাম্প হয়েছে, আরও হবে।” |
|
|
|
|
|