|
|
|
|
প্রকল্প এলাকায় মোতায়েন ৫০০ পুলিশ, যৌথ নজরদারির আবেদন টাটাদের |
লুঠপাটের নালিশ, ডিএমের রিপোর্ট চায় কোর্ট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সিঙ্গুরের টাটা প্রকল্প এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জানতে হুগলির জেলাশাসকের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। আজ, শুক্রবার সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৌমিত্র পাল।
বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির শুরুতেই টাটা মোটরসের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার সিঙ্গুরের জমি দখল নেওয়ার পর থেকেই টাটাদের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লুঠও হচ্ছে। প্রশাসন সম্পত্তি রক্ষার দিকে নজর দিচ্ছে না। সমরাদিত্যবাবু বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সিঙ্গুরের কারখানা এলাকার ছবি বিচারপতিকে দেখান।
সমরাদিত্যবাবু আদালতকে বলেন, রাজ্য সরকার ওই জমি দখল নেওয়ার পরে টাটাদের নিয়োগ করা নিরাপত্তা রক্ষীদের পুলিশ তাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন তার দায়িত্ব পালন করেনি। প্রশাসনের চোখের সামনেই কারখানা এলাকা থেকে অবাধে চুরি ও লুঠ চলেছে। তিনি টাটা ও প্রশাসনের যৌথ নজরদারির আবেদনও করেন।
রাজ্য সরকারের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র পাল্টা বলেন, কোনও সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বা ছবি আদালতে গ্রাহ্য নয়। হলফনামা দিয়ে অভিযোগ জানাতে হবে। তিনি এ-ও জানান, ৫০০-র বেশি পুলিশ সিঙ্গুর প্রকল্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। হুগলি জেলার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জেলার পুলিশ সুপার ইতিমধ্যেই একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। কল্যাণবাবু সেই রিপোর্টটি এ দিন হাইকোর্টে জমা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ওই এলাকায় ৫১০ জন পুলিশ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করছেন। ওখান থেকে নিয়ে যাওয়া কিছু জিনিস পুলিশ উদ্ধারও করতে পেরেছে। সম্পত্তি রক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। |
|
কারখানা লাগোয়া এলাকায় পুলিশের শিবির তৈরির তৎপরতা। বৃহস্পতিবার রাজীব বসুর তোলা ছবি। |
যে আইনের জোরে টাটাদের সরিয়ে দিয়ে সিঙ্গুরে জমি দখল নেওয়া হয়েছে, তা অসাংবিধানিক বলে সমরাদিত্যবাবু এ দিন অভিযোগ করেন। এমনকী যে পদ্ধতিতে জমি দখল নেওয়া হয়েছে, তা বেশ সন্দেহজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর মতে, বিল পাশ হওয়ার পর টাটাদের কোনও নোটিস না দিয়ে জমি দখল করাটাও অসাংবিধানিক। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিঙ্গুরে পরিত্যক্ত ন্যানো কারখানার প্রধান ফটকে যে নোটিস টাঙানো হয়েছে, তাতে টাটা মোটরসের মুম্বই অফিসের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে।
সমরাদিত্যবাবু বলেন, উচ্ছেদের নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে কোনও ব্যক্তির সমস্ত জিনিসপত্র দখল করে নেওয়া যায় না। সিঙ্গুর আইনের একটি ধারায় বলা হয়েছে, বলপূর্বক দখল করা যাবে। এই জাতীয় ধারা কোনও আইনে রাখা যায় না বলে দাবি করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে অনিন্দ্যবাবু বলেন, জমি দখল নেওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ওই জমিতে যে সম্পত্তি রয়েছে, তা-ও দখল করে নেওয়া যায়। তাঁর মন্তব্য, সওয়ালের সময় টাটারা জমি দখল নেওয়া হয়েছে বলছে। অথচ মামলার আবেদনে বলেছে যে, জমি তাদের দখলে রয়েছে।
জেলাশাসকের রিপোর্ট জমা পড়ার পরে আজ, শুক্রবার ফের সিঙ্গুর মামলার শুনানি হবে। |
|
|
|
|
|