|
|
|
|
বিদ্যুৎ পরিবহণে বিশ্বব্যাঙ্কের দ্বারস্থ ত্রিপুরা সরকার |
আশিস বসু • আগরতলা |
বিদ্যুৎ পরিবহণ ও বণ্টন ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে ১০০০ কোটি টাকা ঋণ নিতে উদ্যোগী হয়েছে দেশের একমাত্র কমিউনিস্ট শাসিত রাজ্য ত্রিপুরা। বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত না হলেও, আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মানিক দে বলেন, “বিশ্বব্যাঙ্কের দেওয়া বিভিন্ন শর্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার পূরণ করতে পারলে তবেই ঋণের টাকা পাওয়া যাবে। সমস্ত বিষয়টা এখন প্রাথমিক স্তরে রয়েছে।”
চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা আগরতলায় এসেছিলেন। সমস্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই বিদ্যুৎ পরিবহণ, বণ্টন ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। কয়েক বছর আগে উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন কাউন্সিলের অন্তর্গত সাতটি রাজ্যের তরফ থেকে এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিবহণ ও বণ্টন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানানো হয়। উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ের ভারপ্রাপ্ত, তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মণিশঙ্কর আইয়ারের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির প্রতিনিধিদের বৈঠকের প্রেক্ষিতে রাজ্যগুলি তাদের প্রকল্প-সমীক্ষা রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দেয়। এই রিপোর্টগুলির ভিত্তিতেই ভারত সরকার বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশ ছাড়া উত্তর-পূর্বের অন্য রাজ্যগুলির জন্য ঋণের আবেদন করে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদলটি এখন উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি সফর করছে। প্রকল্প রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে।
বিশ্বব্যাঙ্ক নিয়ে সিপিএমের একদা ছুঁৎমার্গ এখন আর নেই। তবু বিশ্বব্যাঙ্ক কেন? এই অস্বস্তিকর প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন সকলেই। তবে সরকারের এক শীর্ষ কর্তার সাফাই, রাজ্য কেন্দ্রের কাছে ঋণ চেয়েছে। কেন্দ্রই বিষয়টি ঠিক করে। রাজ্যের উন্নয়নই প্রধান বিবেচ্য। ত্রিপুরার বিদ্যুৎ ঘাটতি সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা তথা ভিন রাজ্য থেকে বিদ্যুৎ কিনেও সেই ঘাটতি পূরণ হচ্ছে না। বিদ্যুৎ নিগমের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর কুমারেশ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘চাহিদা মতো বিদ্যুৎ না পেয়ে প্রতি দিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১ টার ‘পিক আওয়ার্সে’ বিদ্যুৎ সরবরাহ কয়েক ঘণ্টা করে বন্ধ রাখতে হচ্ছে।” তবে ত্রিপুরা তাকিয়ে আছে প্রস্তাবিত পালাটানা গ্যাস-বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে। তার আগে পরিবহণ ও বণ্টন পরিকাঠামো তারা তৈরি করে ফেলতে চাইছে।
অসম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরাকে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া এই ঋণের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার ভাগ করে দেবে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী এক বছরের মধ্যে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ পরিবহণ ও বণ্টন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। কুমারেশবাবু জানান, ‘‘১১০০ কোটি টাকার প্রকল্পের ১০ শতাংশ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকার দেবে ৫ শতাংশ। আর বাকি ৮৫ শতাংশ আসবে বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণ হিসেবে।” কুমারেশবাবু জানান, ‘‘ঋণ নেওয়ার প্রথম ৫ বছর মোরেটরিয়ম পিরিয়ড। অর্থাৎ এই সময় ঋণ পরিশোধ করতে হবে না। পরের ১০ বছরে তা শোধ করতে হবে।’’ |
|
|
|
|
|