|
|
|
|
চিলখারি গণহত্যা |
চার মাওবাদীকে মৃত্যুদণ্ড দিল কোর্ট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
গিরিডির চিলখারি গ্রামে ‘গণহত্যা’-র ঘটনায় চার মাওবাদী জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করল আদালত। গিরিডির অতিরিক্ত জেলা জজ ইন্দ্রদেব মিশ্র আজ এই নির্দেশ দেন। ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবরের এই ঘটনায় গিরিডির দেওড়ি থানা এলাকার চিলখারি গ্রামে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মরান্ডির তরুণ পুত্র অনুপ মরান্ডি-সহ ১৯ জনকে গুলি করে মেরেছিল জঙ্গিরা। কয়েক জন শিশু-সহ আরও ১২ জন এই ঘটনায় জখম হন। বিচারক ওই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ আখ্যা দিয়েছেন। বাবুলাল মরান্ডি অবশ্য দোষী জঙ্গিদের মৃত্যুদণ্ড ‘চূড়ান্ত সমাধান নয়’ বলে মন্তব্য করেন।
বিচারক গত কালই এই চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। অভিযুক্ত বাকি ছ’জনকে অবশ্য বিচারক প্রমাণাভাবে মুক্তি দিয়েছেন। আজ যাদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে তারা হল: সিপিআই (মাওবাদী)-র সাংস্কৃতিক শাখা সংগঠনের নেতা জিতেন মরান্ডি এবং তার তিন সহযোগী---মনোজ রাজভড়, অনিল রাজভড় ও ছত্রপতি মণ্ডল। অভিযুক্তদের দোষ প্রমাণ করতে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। তবে জিতেনের স্ত্রী অপর্ণা মরান্ডি তাঁর স্বামীকে অহেতুক ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন। |
|
গিরিডির আদালতের বাইরে অপরাধীরা। বৃহস্পতিবার চন্দন পালের তোলা ছবি। |
বিহার-ঝাড়খণ্ড সীমানায় গিরিডির চিলখারি গ্রামে চার বছর আগে গ্রামবাসীদের মধ্যে একটি ফুটবল খেলা ও সাংস্কৃতিক আসরের আয়োজন করা হয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মরান্ডির ভাই নুনুলাল ওই ফুটবল ম্যাচের উদ্বোধন করেন। বাবুলালের ছেলে, ১৯ বছর বয়সী অনুপ মরান্ডিও ওই অনুষ্ঠানে রাত পর্যন্ত ছিলেন। হঠাৎই জঙ্গিরা অতর্কিতে মঞ্চে উঠে চার দিকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। নুনুলাল বেঁচে গেলেও বাবুলালের ছেলে ওই গুলিতে প্রাণ হারান। নুনুলালের নিরাপত্তারক্ষী পুরন কিস্কু এই ঘটনার দু’দিন বাদে ২৯ অক্টোবর দেওড়ি থানায় যে অভিযোগ দায়ের করেন, তাতে বলা হয়, জঙ্গিদের মধ্যে জিতেন মরান্ডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।
গিরিডির তিসরি ও দেওড়ি ব্লকের নেতা জিতেন মাওবাদীদের মধ্যে মানবাধিকার কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০০৭ সালে রাঁচিতে মাওবাদী সন্দেহে বন্দিদের মু্ক্তির দাবিতে সে রাজভবনে আর্জি জানায়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেই সে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছে। তার স্ত্রীও এ দিন এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার কথা বলেছেন।
অন্য দিকে, জামশেদপুরে বাবুলাল মরান্ডি বলেন, “আমি নিজের ছেলেকে হারিয়েছি ঠিকই, কিন্তু সমাজের বা দেশের বার বার এই ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। আমার মনে হয় না মৃত্যুদণ্ড এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে। মাওবাদীদের মূল স্রোতে নিয়ে আসার চেষ্টা করাটা আরও জরুরি। অনেকেই মূল স্রোতে ফিরতে চান। সরকারের সে-বিষয়ে আরও নজর দেওয়া উচিত।” |
|
|
|
|
|