|
|
|
|
ঘোর অস্বস্তি কংগ্রেসে |
নয়ডায় ধর্ষণ নিয়ে রাহুলের ‘তত্ত্ব’ উড়িয়েই দিল কমিশন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মায়াবতী সরকারের বিরুদ্ধে রাহুল গাঁধীর অভিযোগ কার্যত খারিজ করে দিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মায়াবতী প্রশাসনকে স্বস্তি দিয়ে কমিশন আজ জানিয়েছে, কৃষক আন্দোলনের সময়ে ভাট্টা পারসল গ্রামে আদৌ কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি।
কমিশনের এ হেন রিপোর্টে কংগ্রেস নেতৃত্ব স্বভাবতই যথেষ্ট ধাক্কা খেয়েছেন। কারণ, জমি অধিগ্রহণ ঘিরে গত মাসে উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডা সংলগ্ন ভাট্টা পারসল গ্রাম যখন উত্তাল, তখন আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন খোদ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাহুল গাঁধী। লক্ষ্য ছিল, আগামী বছরের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীকে বেকায়দায় ফেলা। |
|
রাহুল অভিযোগ করেছিলেন, আন্দোলন চলাকালীন মায়াবতী প্রশাসন বহু কৃষককে হত্যা করেছে, গ্রামের মহিলাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। এমনকী, ভাট্টা-পারসলের মাটির স্তুপে নিহতদের হাড়গোড় আকছার পাওয়া যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন রাহুল। তাঁর সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভানেত্রী রীতা বহুগুণা জোশীও।
কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ বার জানিয়ে দিয়েছে, ভাট্টা পারসলে সেই সময়ে কোনও ধর্ষণ হয়নি। এবং কৃষক-মৃত্যু |
|
নিয়ে রাহুলের দেওয়া পরিসংখ্যানও ঠিক নয়। এ বিষয়ে কমিশনের তরফে একটি ৮০০ পাতার অন্তর্বর্তী রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। কমিশন আরও জানিয়েছে, লখিমপুর খেরি থানায় গত সপ্তাহে যে নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, সেখানেও ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি।
ভাট্টা পারসল নিয়ে কমিশনের এই রিপোর্টে কংগ্রেস যারপরনাই বিব্রত। ইউপিএ সরকারের মধ্যেও প্রবল প্রতিক্রিয়া। কারণ, এই প্রথম সরকার মনোনীত কোনও সংস্থার প্রতিনিধিরা সরাসরি রাহুল গাঁধীর বিপরীত অবস্থান নিলেন। মুশকিল হল, মানবাধিকার কমিশন সাংবিধানিক ক্ষমতাসম্পন্ন স্বশাসিত সংস্থা। সরকার যেমন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে না, তেমন মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টও খারিজ করে দেওয়া সম্ভব নয়। রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও তা মানতে হবে।
আজ তাই কেন্দ্রের তরফে সেই ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচারমন্ত্রী অম্বিকা সোনি বলেছেন, কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে সরকারের সংশয় আছে। তাঁর কথায়, “অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরাও ওখানে গিয়েছিলেন। তাঁরা ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির প্রমাণ পেয়েছেন। দেখতে হবে, কোথা থেকে এই রিপোর্ট এসেছে।” মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত পদ্ধতি নিয়ে সরকারের সংশয়ের কথা জানিয়ে অম্বিকা বলেন, “ধর্ষণের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে মহিলারা অনেক ক্ষেত্রে মুখ খুলতে দ্বিধা বোধ করেন। জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা তদন্ত করে এসে ধর্ষণের কথা জানিয়েছিলেন। একটা মাত্র রিপোর্টে তো সব অভিযোগ নস্যাৎ হয়ে যায় না!”
অর্থাৎ সরকার বা দল যে রাহুল গাঁধীর তত্ত্ব উড়িয়ে দিচ্ছে না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন অম্বিকা। অন্য দিকে মানবাধিকার কমিশন নিজ অবস্থানে অটল। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কে জি বালকৃষ্ণনের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে কেন্দ্র এখন সক্রিয়। পাল্টা হিসেবে তিনি সরকার তথা কংগ্রেস নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলার চেষ্টা করছেন কি না, তা বোঝা প্রয়োজন বলে কংগ্রেস-সূত্রে জানানো হয়েছে।
|
|
|
|
|
|