|
|
|
|
মেয়রের বৈঠকে বচসা |
কেন জল পায় না সল্টলেক-দমদম, তদন্তের নির্দেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
কলকাতা পুরসভা পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করে চলেছে। তা সত্ত্বেও সল্টলেক ও দমদমে জল পৌঁছচ্ছে না কেন, সেই ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিলেন কেএমডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান তথা মহানগরীর মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সল্টলেকের উন্নয়ন ভবনে কলকাতা পুরসভা এবং কেএমডিএ-র আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু এবং বিধাননগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত।
এ দিন বৈঠকের শুরুতেই কেএমডিএ-র সিইও বিবেক ভরদ্বাজের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় শোভনবাবু, সুজিতবাবু ও সব্যসাচীবাবুর। সুজিতবাবু একটি নথি দেখিয়ে অভিযোগ করেন, ২০০৯ সাল থেকে কেএমডিএ কম জল দিচ্ছে। তার ফলে টালা-পলতার জল সল্টলেক ও দমদমে পৌঁছচ্ছে না। ওই বিধায়ক বলেন, “কেএমডিএ-র পাম্প থেকে সকালে দু’ঘণ্টার বদলে এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট, দুপুরে এক ঘণ্টার পরিবর্তে ৪৫ মিনিট এবং বিকোলে দু’ঘণ্টার বদলে মাত্র ৪৫ মিনিট জল আসছে। তৃণমূলের বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরেই সিপিএমের সরকার এটা শুরু করেছিল।” বিধায়কের অভিযোগ শুনেই কেএমডিএ-র সিইও-র কাছে বিষয়টি বিশদ ভাবে জানতে চান মেয়র। পরে তিনি বলেন, “যদি এটা হয়ে থাকে, তা হলে অন্যায় হয়েছে। সিপিএমের আমলে এটা শুরু হয়েছিল বলে অভিযোগ পেয়েছিলাম। এ দিন দক্ষিণ দমদম পুরসভা তথ্য দিয়ে সেটা দেখিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আমি সতর্ক করে দিয়েছি, এমন ঘটনা যেন আর না-ঘটে।” পাশাপাশি শোভনবাবু জানান, সেই সঙ্গে দেখা হবে, কলকাতা থেকে জল আসার পথে কোথাও কোনও রকম ‘লিকেজ’ হচ্ছে কি না।
মেয়র জানিয়ে দেন, সল্টলেক ও লেক টাউনে যে-দু’টি জলাধারে জল আসবে, সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ এ বার থেকে করতে হবে বিধাননগর এবং দক্ষিণ দমদম পুরসভাকে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন,“ জল মাপতে দ্রুত জলের মিটার বসিয়ে দেওয়া হবে।” বিধাননগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সব্যসাচীবাবু বলেন, “আমরা বহু দিন ধরে কেএমডিএ-র সিইও-কে বলে আসছি, জল কম আসছে। আমি নিজে জলের মিটার বসানোর জন্য সিইও-র সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিছু না কিছু সমস্যা তো রয়েছেই। নইলে জল কম আসবে কেন?” তবে কেএমডিএ-র সিইও বিবেকবাবুকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিকে, যখন অবৈধ নলকূপ ও গভীর নলকূপ ঠেকানোর তোড়জোড় চলছে, তখনই জানা গেল, খাস কলকাতায় পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন বহুতলে তিন হাজারেরও বেশি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর এই তথ্য ধরা পড়েছে পুর জল সরবরাহ দফতরের নলকূপ বিভাগে। অননুমোদিত গভীর নলকূপের পুর নথিভুক্তির প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা হচ্ছে বলে ঘোষণা করেছেন ওই বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মেয়র-পারিষদ তারক সিংহ। পুরসভার আয় বাড়াতেই এই উদ্যোগ বলে মনে করছেন পুর প্রশাসনের একাংশ।
তারকবাবু জানান, শহরে জল সরবরাহের জন্য পুরসভার নিজস্ব গভীর নলকূপের সংখ্যা ৩৯৯। এ ছাড়াও বহুতলগুলিতে রয়েছে পাঁচ হাজারেরও বেশি গভীর নলকূপ। বেসরকারি ভাবে তৈরি ওই সব গভীর নলকূপের মধ্যে ২১০০টির ক্ষেত্রে পুর অনুমোদন আছে। তাই সেগুলির মালিকদের কাছ থেকে রাজস্বও পাচ্ছে পুরসভা। কিন্তু বাকি তিন হাজারেরও বেশি বেসরকারি গভীর নলকূপের পুর অনুমোদন নেই। তাই সেগুলির থেকে কোনও রাজস্ব পাচ্ছে না পুরসভা। পুর অনুমোদন নিয়ে বকেয়া রাজস্ব মিটিয়ে দেওয়ার জন্য শহরের সব বেসরকারি গভীর নলকূপের মালিকের কাছে নোটিস পাঠানো হচ্ছে। |
|
|
|
|
|