|
|
|
|
কাশ্মীর নিয়ে চাপ গায়ে না মেখেই আলোচনায় নিরুপমা |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
কাঁটা সেই কাশ্মীর।
ইসলামাবাদে আজ শুরু হল ভারত এবং পাকিস্তানের বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক। আর তার ঠিক আগে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি আরও এক বার জানালেন, কাশ্মীরের ‘সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ না আসা পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পূর্ণ রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতা করে যাবে তাঁর সরকার। |
|
ভারতের বিদেশ সচিব নিরুপমা রাও এবং পাকিস্তানের বিদেশ সচিব সলমন বশির। এএফপি |
এই নয় যে এই প্রথম পাকিস্তান এই কথা ঘোষণা করল। বস্তুত দেশ ভাগের পর থেকেই ইসলামাবাদ এই নীতি নিয়ে চলেছে। কিন্তু দীর্ঘ শীতলতার পরে দু’দেশের বিদেশসচিব শান্তি আলোচনায় বসছে। তার চেয়েও বড় কথা, শুধুমাত্র কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে এই বৈঠকের গোটা একটা অংশ পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে রাজি হয়েছে ভারত। এই পরিস্থিতিতে পাক প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা যে ভারতকে চাপে ফেলার কৌশল, তা বুঝতে সময় লাগে না।
ভারত কিন্তু এই চাপ গায়ে মাখছে না। বিদেশ মন্ত্রক মনে করছে, মরিয়া হয়েই পুরনো কাশ্মীর তাস খেলেছেন গিলানি। ঘরে বাইরে প্রবল চাপের মুখে তাঁর সরকার এখন অস্তিত্বের সঙ্কটে। রাজনৈতিক কর্তৃত্ব দুর্বল হয়ে আসছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছে সেনাবাহিনীর হাতে, সন্ত্রাসবাদীরা ক্রমশ সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালাচ্ছে। এমন একটি প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান যে কাশ্মীর সমস্যাকে ভারতের সামনে নিয়ে আসতে চাইবে, এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল ভারতের কাছে।
ইসলামাবাদে পৌঁছে বিদেশসচিব নিরুপমা রাও আজ বলেন, “আমি এখানে খোলা মন নিয়ে এসেছি। গঠনমূলক মানসিকতা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আস্থা এবং বিশ্বাস তৈরির চেষ্টা করা হবে এই বৈঠকে।” কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে আলাদা আলোচনায় রাজি হয়ে নয়াদিল্লি এটাই প্রমাণ করতে চাইছে, কোনও অপ্রিয় প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া তাদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু পাকিস্তানও যেন সেই মনোভাব নেয়। আজ না হোক, পরের কোনও বৈঠকে তারাও যেন জঙ্গি সমস্যা ও সন্ত্রাস-যোগ নিয়েও সরাসরি আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দেয়। আগামী মাসেই দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা। বিদেশসচিব জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চলতি বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি যেন পথ দেখাতে পারে, সেটাই তাঁর লক্ষ্য।
প্রথম দিনের আলোচনাতেই ভারতের আশু উদ্বেগের বিষয়গুলি অবশ্য আলোচনায় এনেছেন নিরুপমা রাও। তুলেছেন মুম্বই হামলার বিচারে অনর্থক দীর্ঘসূত্রিতার প্রসঙ্গ, পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে জঙ্গি-ঘাঁটিগুলি উচ্ছেদে প্রশাসনের গড়িমসির বিষয়, এমনকী জঙ্গিদের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনা ও গুপ্তচর বিভাগের অফিসারদের যোগাযোগের নানা তথ্যপ্রমাণ হাতে আসার বিষয়টিও। পাকিস্তানের পরমাণু ভাঁড়ার যাতে জঙ্গিদের হাতে না যায়, তা নিশ্চিত করার বিষয়েও আজ পাক বিদেশসচিব সলমন বশিরের সঙ্গে কথা বলেছেন রাও। |
|
|
|
|
|