|
|
|
|
গদি নিয়ে চাপে কারজাই |
আফগানিস্তান থেকে সেনা সরাবে আমেরিকা |
সংবাদসংস্থা • ওয়াশিংটন |
ইরাকের পর এ বার আফগানিস্তান থেকেও সেনা ফেরাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বুধবার রাতে এক টেলিভিশন বক্তৃতায় তিনি জানান, ২০১২-র মধ্যে ৩৩ হাজার সেনা সে দেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হবে। সেনা প্রত্যাহারের ওই প্রক্রিয়া ২০১৪-র মধ্যে সম্পূর্ণ হবে বলে আশ্বাস দেয়িছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই ঘোষণার পরেই প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিও আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানোর কথা ঘোষণা করেন। আমেরিকা ও ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। তবে তালিবান জানিয়েছে, বিদেশি সেনা পুরোপুরি না সরানো পর্যন্ত রক্তপাত বন্ধ হবে না সে দেশে। |
|
বক্তৃতা করছেন বারাক ওবামা। বৃহস্পতিবার। এএফপি |
বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে প্রায় পনেরো মিনিটের একটি টেলিভিশন বক্তৃতায় আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করেন ওবামা। সেনা সরবে পর্যায়ক্রমে। একই সঙ্গে আফগান বাহিনীর হাতে পর্যায়ক্রমে তুলে দেওয়া হবে সে দেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব। তবে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ সাফল্য পেতে আমেরিকা যে প্রয়োজনে আফগানিস্তান, এমনকী পাকিস্তানে ঢুকে ফের হামলা চালাতে পারে, সে ইঙ্গিতও ছিল তাঁর বক্তব্যে।
আগামী বছর প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ফের লড়তে চলেছেন ওবামা। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশের অর্থনীতি, বেকারত্ব-সহ নানা সমস্যায় জেরবার তাঁর প্রশাসন। কংগ্রেসের একটি বড় অংশ প্রতি বছর ১১ হাজার কোটি ডলার খরচ করে আফগানিস্তানে সেনা রাখার তীব্র বিরোধী। বিশেষত যে আফগানিস্তানে গত দশ বছরে দেড় হাজারেরও বেশি মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন। লাদেন হত্যার পর এই বিরোধিতা বেড়েছে। এখন হোয়াইট হাউসে নিজের আরও ৪ বছর সুরক্ষিত করতেই ওবামা সেনা প্রত্যাহারের মতো ‘জনপ্রিয়’ পদক্ষেপ করলেন বলে মার্কিন রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
২০১২-র মধ্যে ৩৩ হাজার সেনা আফগানিস্তান থেকে ফিরে আসার পরেও ৬৮ হাজার মার্কিন সেনা কিন্তু সে দেশে থেকেই যাবে। তা ছাড়া, ব্রিটেন ও জার্মানি এখনও সেনা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেনি। ফলে সব মিলিয়ে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঠিক কী হতে যাচ্ছে, তা খুব স্পষ্ট নয়। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্রের কথায়, আফগানিস্তান পুনর্গঠনের দায়িত্ব থেকে হঠাৎ করে পিছু হটলে, এই অঞ্চলের সমস্যা আরও বাড়বে। ভারতের মতো দেশের আবার চিন্তা, ন্যাটোর অনুপস্থিতিতে তালিবান ফের প্রভাব বিস্তার করবে সে দেশে।
আফগানিস্তান নিয়ে এই চাপানউতোরের মধ্যেই সে দেশে দেখা দিয়েছে সাংবিধানিক সঙ্কটের আশঙ্কা। গত সেপ্টেম্বরের নির্বাচন ঘিরে বিস্তর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল। কারজাই ও তাঁর দল নির্বাচনে ব্যাপক রিগিং করে ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই নির্বাচনে অনেকগুলি আসনে বিরোধীদের জয়ী বলে ঘোষণা করেছে আজ আফগানিস্তানের এক আদালত। মামলার রায় সরাসরি দেখানো হয়েছে জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে। কারজাই সরকারের একটি সূত্রের মতে, এ ভাবে চললে দুই-তৃতীয়াংশ আসনেই হেরে যাবে কারজাইয়ের দল। |
|
|
|
|
|