|
|
|
|
‘চুরি’, পিটিয়ে চুল কেটে নিল জনতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
পুলিশে আস্থা রাখার বদলে আইন হাতে তুলে নিল জনতা।
ঘটনাস্থল বর্ধমান শহরের পুরাতনচক বটতলা। ঘরে ঢুকে মোবাইল ও টাকা চুরির অভিযোগে বৃহস্পতিবার সেখানেই দুই মহিলাকে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয় বলে অভিযোগ। খাবলে কেটে নেওয়া হয়েছে চুলও। পুলিশ দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু রাত পর্যন্ত নিগ্রহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম প্রতিমা ওরফে স্বপ্না ও টুম্পা মুখোপাধ্যায়। তাঁরা নিজেদের ‘মা-মেয়ে’ বলে পরিচয় দিয়েছেন। বাড়ি শহরের দুবরাজদিঘি ডাঙাপাড়ায়। আগেও তাঁর চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। দুপুরে পুরাতনচক বটতলায় আব্দুল মানিকের বাড়ির সদর দরজা দিয়ে তাঁরা ঢুকে পড়েন এবং বারান্দার টেবিলে রাখা দু’টি মোবাইল ও কিছু টাকা তুলে নিয়ে চুপিসাড়ে পালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
বর্ধমান থানার আইসি শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “স্বপ্না ও টুম্পাকে আগেও চুরির দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ দিন ওরা মোবাইল ও ১০০ টাকা চুরি করে। মা কথা বলছিলেন, সেই ফাঁকে মেয়ে গিয়ে চুরি করে।” স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়ির মহিলারা টুম্পাকে চুরি করতে দেখে ফেলেছিলেন। তাঁরা চিৎকার শুরু করায় এলাকার কিছু লোক দু’জনকে ধাওয়া করে স্থানীয় মহারানি অধিরানি বালিকা বিদ্যালয়ের কাছে ধরে ফেলেন।
|
|
নিজস্ব চিত্র। |
এর পরেই জনতা দু’জনকে মাটিতে ফেলে পেটাতে শুরু করে। এক দফা মারধরের পরে তাঁদের পুরাতনচকে নিয়ে গিয়ে ফের গণপ্রহার শুরু হয়। প্রতিমার মাথা থেকে চুল কেটে নেওয়া হয়। তবে বিশ্বনাথ পোদ্দার নামে যে স্থানীয় বাসিন্দা দু’জনকে প্রথম ধরেছিলেন, তাঁর বক্তব্য, “মারধর শুরু হওয়ায় আমি চলে যাই। তার আগে বারবার সকলকে বলি, ‘মারধর করবেন না, পুলিশের হাতে তুলে দিন।’ কিন্তু কেউ আমার কথা শোনেনি।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দু’জনের কাছ থেকে চুরি যাওয়া একটি মোবাইল ও কিছু টাকা উদ্ধার হয়েছে। অন্য মোবাইলটি রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন বলে দুই মহিলা জানিয়েছেন। কিন্তু এ ভাবে নিজেদের হাতে আইন তুলে নিলেন কেন? কেনই বা রাস্তায় ফেলে পেটালেন দুই মহিলাকে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জনের জবাব, “পুলিশে দিয়ে কী লাভ? পুলিশ তো ওদের আটকে রাখতে পারবে না। তাই আমরাই সাজা দিয়েছি।”
বর্ধমানের আইসি বলেন, “যে ভাবে দু’জনকে মারধর করে বয়স্কা মহিলার মাথার চুল কেটে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। কারা এই কাজে জড়িত ছিল, খোঁজ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হবে।”
এর আগে জেলার বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু গণপ্রহারের ক্ষেত্রে কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি পুলিশ। এ বার সেই ‘নিয়ম’ পাল্টাবে? |
|
|
|
|
|