|
|
|
|
পাল্টা নালিশ পুরসভার |
বকেয়া না-পেয়ে রাজ্যের শুল্ক আটকাল সিইএসসি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলকাতা পুরসভা এবং ট্রাম কোম্পানি-সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা সময়মতো বিদ্যুৎ বিল মেটাচ্ছে না বলে
বারবার অভিযোগ করেছেন সিইএসসি-কর্তৃপক্ষ। প্রতিকার না-পেয়ে এ বার রাজ্যে সরকারের প্রাপ্য ‘ইলেকট্রিসিটি ডিউটি’ বা বিদ্যুৎ-শুল্ক আটকে দিল সিইএসসি। এই খাতে কয়েক মাসে সিইএসসি-র কাছে রাজ্য সরকারের পাওনা হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা।
এই প্রথম সেই টাকা মিটিয়ে দিল না সিইএসসি।
সিইএসসি-র অভিযোগ, বারবার তাগাদা দিয়েও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বকেয়া ১৭০ কোটি টাকা পাওয়া যায়নি। গত কয়েক মাসে তা বাড়তে বাড়তে রেকর্ড অঙ্কে পৌঁছে গিয়েছে। সিইএসসি-কর্তৃপক্ষ সরকারকে জানিয়েছে, ওই প্রাপ্য না-পেলে তাঁরাও ‘ডিউটি’র টাকা মেটাতে পারবেন না। তাঁদের হিসেব অনুযায়ী দেনা-পাওনার খতিয়ান নিলে সিইএসসি রাজ্যের কাছে আরও ৯৫ কোটি টাকা পাবে। সম্প্রতি সিইএসসি পাওনা টাকা আদায়ের জন্য চিঠি লিখেছে পুর ও নগরোন্নয়ন, আবাসন, জনস্বাস্থ্য কারিগরি এবং পরিবহণ দফতরের কাছে।
সিইএসসি-র কর্তাদের বক্তব্য, বকেয়া টাকা এখনই দেওয়ার ব্যবস্থা না-করলে শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাই সঙ্কটে পড়বে। কারণ, সিইএসসি-কে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা কিনতে হয় নগদ টাকায়। কয়লার বিল বাকি পড়লে সরবরাহ কমিয়ে দেয় কোল ইন্ডিয়া। ঋণের সুদ প্রতি মাসে শোধ না-করলে ব্যাঙ্ক মামলা করার হুমকি দেয়। অন্য দিকে, সিইএসসি-র একমাত্র আয় হয় বিদ্যুতের বিল থেকে। তাই ওই বকেয়া না-পেলে বিপাকে পড়বে তারা।
সরকারি হিসেবে দেখা গিয়েছে, কেউ বিদ্যুতের বিল জমা দিচ্ছে না টানা তিন বছর ধরে, কেউ বা তিন মাস। পুর দফতর জানাচ্ছে, শুধু কলকাতা পুরসভারই ৯৪ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বাকি। হাওড়া পুরসভার বাকি ৩০ কোটি টাকার। অন্যান্য পুরসভা যোগ করলে বকেয়া আরও ৩৫ কোটি টাকা। পরিবহণ দফতরের খবর, কলকাতা ট্রামওয়েজ কোম্পানি ন’কোটি টাকার বিল ফেলে রেখেছে। এ ছাড়া জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বকেয়া আড়াই কোটি টাকা। আবাসন দফতরের কাছেও প্রায় দেড় কোটি টাকা পাবে সিইএসসি।
সিইএসসি-র বকেয়া পাওনা ফেলে রাখার ব্যাপারে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দীর্ঘ কাল ধরেই সিইএসসি-র পাওনা টাকা মেটায় সরকার। বাম পুর বোর্ড ওই দায় আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে নতুন রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে সবিস্তার তথ্য পেশ করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
পাশাপাশি, এ দিন সিইএসসি-র কাছেও পুরসভার দীর্ঘদিনের বকেয়া পাওনার পাল্টা তথ্য পেশ করেছেন পুরকর্তারা। পুরকর্তাদের অভিযোগ, তাঁদের জমি ব্যবহার করে দীর্ঘ কাল ধরে ব্যবসা করছে সিইএসসি। শহরের ১৪১টি ওয়ার্ডে সিইএসসি কয়েকশো ট্রান্সফর্মার বসিয়েছে। কিন্তু ওই জমি ব্যবহারে জন্য পুরসভাকে এ-যাবৎ কোনও ভাড়া দেওয়া হয়নি। মেয়র বলেন, “শহরে সিইএসসি কত ট্রান্সফর্মার বসিয়েছে, তা হিসেব করে পুর আইন মোতাবেক জমি ব্যবহারের ভাড়া মেটানোর জন্য চিঠি পাঠানো হচ্ছে। প্রাথমিক হিসেবে শহরের জমি ব্যবহার করে ট্রান্সফর্মার বসানোর জন্য সিইএসসি-র কাছে পুরসভার বকেয়া পাওনার পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকা।” |
|
|
|
|
|