দলিত নাবালিকাটির ‘অপরাধ’, ধর্ষণে বাধা দিয়েছিল সে। তাই তার দু’টি চোখই নষ্ট করে দিল দুই দুষ্কৃতী।
অন্য একটি ঘটনায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে এক দলিত মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল।
লখিমপুরে থানায় এক কিশোরীকে ‘ধর্ষণ’ এবং হত্যার ঘটনার পরপরই এই দুটি ঘটনায় অস্বস্তি বাড়ল মায়াবতী সরকারের। বিশেষত শনিবার এই দু’টি ঘটনারই শিকার মেয়ে দু’টিই দলিত। ফলে ‘দলিতদের মসিহা’ মায়াবতীর বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও বাড়িয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের বক্তব্য, এর পর সরকারের আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই।
মায়াবতীর বক্তব্য, “আইনশৃঙ্খলার কোনও অবনতি ঘটেনি। বিরোধীদের চাপের কাছে হেরে যাব না। আমি মাঠে নেমে রাজনীতি শিখেছি। উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতিতে আসিনি।” তাঁর কটাক্ষ স্পষ্টতই রাহুল গাঁধীর দিকে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে তথ্যসচিব বলেছেন, বিরোধীরা এমন ভাব দেখাচ্ছে, যেন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। ব্যাপারটা তা নয়। প্রশাসন দু’টি ক্ষেত্রেই যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে কনৌজের গুরসাইগঞ্জ থানা এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যায় গাদওয়া বুজুরগ গ্রামে কাজে বেরিয়েছিল ১৪ বছরের ওই কিশোরী। কনৌজের পুলিশ সুপার রাজেন্দ্র সিংহ বলেন, “সেখানে দিলীপ ও নিরঞ্জন যাদব নামে দু’জন তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিশোরী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা তাকে ব্যাপক মারধর করে। তার পর ছুরি তার বাঁ-চোখে ঢুকিয়ে দেয়।” অভিযুক্তরা দু’জনেই কিশোরীর গ্রামের বাসিন্দা। নিরঞ্জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দিলীপ পলাতক। কিশোরীর বাবা-মায়ের অভিযোগ, প্রথমে পুলিশ তাদের অভিযোগ নিতে চায়নি। রাজেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, কতর্ব্যের গাফিলতির অভিযোগে থানার সাব-ইনস্পেক্টর শিবশঙ্কর সিংহ ও কনস্টেবল ফকরুদ্দিনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জখম কিশোরীটিকে কনৌজে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কানপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার বাঁ চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ডান চোখটিও ৮০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট মনোজ সিংহল জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ওই কিশোরীকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় ঘটনাটিও ঘটেছে শনিবার রাতেই। বস্তি থানার রানিপুর বেলাদি গ্রামে ১৮ বছরের এর দলিত তরুণীকে মাথায় বন্দুকর নলের সামনে রেখে শক্তি সিংহ নামে এক যুবক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি রীতা বহুগুণা জোশী বলেন, “মায়াবতীর লজ্জা হওয়া উচিত। এক
জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মানুষ তাঁর কাছ থেকে আরও বেশি কিছু আশা করেন। কিন্তু তিনি পুলিশকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।” দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ
যাদব। রাজ্যের তথ্য সচিব পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, কিশোরীকে যারা ছুরি মেরেছে, তারা সমাজবাদী পার্টির সদস্য। |