ইসলামাবাদে বিদেশসচিব পর্যায়ের আসন্ন বৈঠকে কাশ্মীর প্রশ্নে চাপ বাড়াতে চাইছে পাকিস্তান। আগামী ২৩ তারিখ পাক সফরে যাচ্ছেন বিদেশসচিব নিরুপমা রাও। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, পাক বিদেশসচিব সলমন বশিরের সঙ্গে আলোচনায় নিরুপমা কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থান ফের স্পষ্ট করবেন। কৌশলগত ভাবে জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যার সমাধান নিয়ে ভারত কোনও তাড়াহুড়ো করতে চায় না। বরঞ্চ সীমান্তের দু’দিকের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোটাই প্রধান লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের।
বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, “আমরা পাক নেতৃত্বকে জানাব, নিয়ন্ত্রণরেখার দু’পারের কাশ্মীরের মধ্যে যোগাযোগ আরও বাড়াতে বেশ কিছু নতুন আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ করা হোক।” এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ২১টি পণ্যের ব্যবসা হয়। ভারতীয় কর্তাদের বক্তব্য, এই বাণিজ্য আরও বাড়ানো হোক, যাতে কাশ্মীরের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য ভাল হয়। তা ছাড়া দুই কাশ্মীরের মধ্যে ‘পারিবারিক যোগাযোগ’ বাড়িয়ে নিয়ন্ত্রণরেখাকে অপ্রাসঙ্গিক করার দিকেও জোর দেবে ভারত।
তবে পাকিস্তান কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা শুরু করলে ভারতও মুম্বই-সন্ত্রাস নিয়ে সুর চড়া করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সাউথ ব্লক। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, “পাকিস্তান যা যা চেয়েছিল, সমস্ত তথ্য ও নথি আমরা তাদের হাতে তুলে দিয়েছি। তারা বিচার বিভাগীয় কমিশন পাঠাতে চেয়েছে কাসভকে জেরা করতে। আমরা আপত্তি করিনি। কিন্তু এ কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, মুম্বই-সন্ত্রাস নিয়ে সে দেশে যে ভাবে বিচার চলছে, তা অত্যন্ত শ্লথ। কোনও সন্তোষজনক ফলাফল এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। আমরা পাক বিদেশসচিবের সঙ্গে আলোচনায় অত্যন্ত ন্যায্য ভাবে দাবি তুলব যে, দ্রুত বিচার শেষ করে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হোক।”
এমন একটি সময়ে ভারত এবং পাকিস্তানের বৈঠক হবে, যখন পাকিস্তান নিজে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। করাচির নৌ-সেনা ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে তালিবান। ভারতের আশঙ্কা, নিরাপদ নয় সে দেশের পরমাণু অস্ত্র ভাঁড়ারও। এই পরিস্থিতিতে বিদেশসচিব পর্যায়ে পরমাণু নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হবে বলে আজ জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ করা যায় কিনা, সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
সোমালি জলদস্যুর মোকাবিলা করতে গিয়ে সম্প্রতি দু’দেশের যে বিবাদ তৈরি হয়েছে, তারও স্পষ্ট ফয়সালা চাইছে দিল্লি। গত কাল ইসলামাবাদ অভিযোগ তুলেছিল যে, সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়া জাহাজ এম ভি সুয়েজকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসার সময় পাক রণতরীকে ধাক্কা মেরেছে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। ভারতের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলা হয়েছে যে, পাক রণতরী ভারত-বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে আসছিল। জলপথে এই ধরনের আগ্রাসী মনোভাব দু’দেশের আস্থা বাড়ানোর প্রশ্নে নেতিবাচক ভূমিকা নেবে বলেই পাকিস্তানকে জানাতে চায় দিল্লি। |