|
|
|
|
ফের ভারী বর্ষণের বার্তা পেয়েই জল-যুদ্ধের প্রস্তুতি |
সঞ্জয় চক্রবর্তী |
প্রথম বর্ষার জমা জল পুরোপুরি না-নামতেই রবিবার ফের ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা এসেছে পুরসভায়। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় ৭০ থেকে ১২০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে বলে এ দিন পুর-কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। নতুন করে ভারী বৃষ্টির বার্তা আসায় এ দিন নিকাশি বিভাগ-সহ পুর-প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। হাতে থাকা নিকাশি পরিকাঠামোর সদ্ব্যবহার করে জমা জল দ্রুত নামানোর ব্যবস্থা করতে বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মেয়র জানান, সতর্কবার্তা পেয়ে সম্ভাব্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শহরের সমস্ত নর্দমা এবং গালিপিটের মুখ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শহরের সমস্ত গালিপিটের মুখ সাফাই করা হয়েছে বলে এ দিন দাবি করেন নিকাশি বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার অমিত রায়। আবর্জনা যাতে নিকাশিতে বাধা সৃষ্টি করতে না-পারে, তার জন্য ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন মেয়র পারিষদ (নিকাশি) রাজীব দেবও। মেয়র জানান, নিকাশি পাম্পিং স্টেশনগুলিকেও ২৪ ঘণ্টা সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। পেটের রোগ-সহ কিছু রোগের প্রাথমিক চিকিৎসার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে শহরের ১৫টি বরো অফিসে। শহরের সর্বত্র নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখার জন্যও সিইএসসি-কে বিশেষ ভাবে বলা হয়েছে বলে জানান শোভনবাবু।
তাঁর অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত শহরের ৫২টি জায়গায় মাঝেমধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বেহালার এয়ারপোর্ট রোড, সাহাপুর কলোনি, টালিগঞ্জের কুঁদঘাট, বাইপাসের ভিআইপি নগর এবং কসবার কিছু এলাকা। এ সব জায়গায় ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে নিকাশির পাশাপাশি ব্যাহত হয় পানীয় জল সরবরাহও। বেহালার কিছু জায়গায় গভীর নলকূপের পাম্প পর্যন্ত চালানো যায়নি।
শহরের ১৪১টি ওয়ার্ডের সমস্ত এলাকায় জমা জলের নিকাশি ব্যবস্থা এখনও সমান ভাবে গড়ে ওঠেনি। পুরসভার ৪৮টি পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে সব ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থা এখনও হয়নি। যে সব এলাকায় এখনও পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে নিকাশির ব্যবস্থা হয়নি, সেই সব এলাকা-সহ শহরের নিচু অঞ্চলের জমা জল দ্রুত নামাতে এ দিনের বৈঠকে ২০টি সাবমার্সিবল পাম্প কেনার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে পুরকর্তারা জানান।
মেয়র জানান, শহরের অধিকাংশ নিকাশি পাম্প ৪০-৫০ বছরের পুরনো। সেগুলির ক্ষমতা কমে গিয়েছে। আপাতত বালিগঞ্জ, পামারবাজার, উল্টোডাঙা, মানিকতলা, ধাপা পাম্পিং স্টেশনের ৩৫টি পাম্প বদলে উচ্চক্ষমতার পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্রও মিলেছে।
পুর-কমিশনার অর্ণব রায় জানান, শহরের সব নিকাশি খালের দ্রুত সংস্কারের আর্জি নিয়ে ২২ জুন সল্টলেকের জলসম্পদ ভবনে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে পুরসভার বৈঠক হবে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের হাতে থাকা বাঙুর ও দত্তবাগান নিকাশি পাম্পিং স্টেশন নিয়ে আজ, সোমবার বিভাগীয় মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পুরসভার বৈঠক। বৈঠকে ওই দুই পাম্পিং স্টেশনের দায়িত্ব পুরসভার হাতে দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে কথা হবে। |
|
|
 |
|
|