|
|
|
|
প্লাস্টিক ও মেডিক্যাল বর্জ্যে রুদ্ধ চৌবাগা পাম্পিং |
অনুপ চট্টোপাধ্যায় |
বস্তা বস্তা ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ এবং ফেলে দেওয়া পলিথিন ব্যাগ। যার জেরে প্রবল ভাবে বাধা পাচ্ছে বৃষ্টির জল নিকাশির কাজ। ওই সমস্ত মেডিক্যাল বর্জ্য এক দিকে যেমন খালের গতি রুদ্ধ করছে, তেমনই পাম্পের ‘ইমপ্লায়ার ব্লেড’-এ জড়িয়ে গিয়ে বিকল করে দিচ্ছে পাম্পগুলিকেও। চৌবাগা পাম্পিং স্টেশনের চার-চারটি পাম্প এ ভাবেই খারাপ হয়ে গিয়েছে।
শুক্রবারের বৃষ্টিতে জল জমে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর, বাঘাযতীন, সন্তোষপুর ও কালিকাপুর-সহ বাইপাসের বিস্তীর্ণ এলাকায়। শনিবার ওই পাম্পিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, পলিথিনের জটে টি পি (টালিগঞ্জ-পঞ্চান্নগ্রাম) খালে জলের গতি প্রায় রুদ্ধ। সেচ দফতর খাল থেকে পলিথিন তোলার কাজ করছে।
কর্তব্যরত এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার জানালেন, ওই স্টেশনের ন’টি পাম্পের মধ্যে চারটি বন্ধ। যে পরিমাণ জল খালে থাকলে পাম্প চলতে পারে, তা না থাকায় এই হাল। এ বিষয়ে সেচ ও জলপথ দফতরের সচিব অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খালের দু’পারের মানুষ পলিথিন প্যাকেট থেকে শুরু করে নানা আবর্জনা জলে ফেলেন। তার উপরে বেশ কিছু নার্সিংহোমের ব্যবহৃত মেডিক্যাল বর্জ্যও বস্তা করে খালে ফেলা হয়।” কিন্তু এই আবর্জনা নিয়মিত সাফ হয় কি? অঞ্জনবাবু বলেন, “শুধু সাফ করলেই হবে না, সচেতন হতে হবে মানুষকেও। না হলে এ সমস্যা চলতেই থাকবে।” |
|
চৌবাগা পাম্পিং স্টেশনে বর্জ্য সাফাই। অর্কপ্রভ ঘোষ |
বাইপাস সংলগ্ন দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ শহরতলির নিকাশি জল টি পি খালে পড়ে। সেই জল আসে চৌবাগা পাম্পিং স্টেশনে। সেখানে তিনটি পাম্পিং স্টেশনে মোট ২৯টি পাম্প আছে। সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (মেকানিক্যাল) জানান, প্রতিটি পাম্প থেকে ৫০ কিউসেক, অর্থাৎ সেকেন্ডে ১৪১৭ লিটার জল বার হয়। শুক্রবার আড়াই ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় অধিকাংশ পাম্প চলেনি। তার উপরে পলিথিন জড়িয়ে বিকল হয় কিছু পাম্প। ফলে জমা জল বেরোতে দেরি হয়।
আর এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) জানান, পলিপ্যাক-সহ ছেঁড়া-ফাটা টায়ার-টিউব, বাড়ির আবর্জনা সবই পড়ে খালে। বর্জ্য ঠেকাতে পাম্পের সামনে লোহার জাল রয়েছে। কিন্তু তাতেও রক্ষা নেই। তিনি জানান, শনিবার খাল সাফ করতে গিয়ে দু’জন ঠিকাকর্মীর হাতে ইঞ্জেকশনের সূচ ফুটেছে। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সমর নস্কর বলেন, “প্রায়ই দেখি খালের ধারে বস্তায় ভরা ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ। অনেকেরই পায়ে ওই সূচ ফুটে যায়। কারও হুঁশ নেই।”
রাজ্যের সেচ ও জলপথমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, “এতকাল বিধি মেনে মেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্কাশনের কাজ হয়নি। খালের জলে বস্তা বস্তা মেডিক্যাল বর্জ্য মেলা তো সাংঘাতিক ব্যাপার। যাঁরা এ সব করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ছিল।” তিনি জানান, ২২ জুন জলসম্পদ ভবনে এ বিষয়ে সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে মেয়র-সহ সেচ ও পুর-অফিসারেরা থাকবেন। |
|
|
|
|
|