রুগ্ণ স্বাস্থ্য/১
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ, অবরোধ
চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ নার্স এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন রোগীর আত্মীয়রা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকী তাঁরা স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া রাস্তাও দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করেন তাঁরা। শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে, নানুরের কীর্ণাহার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাতে স্থানীয় জুবুটিয়া গ্রামে ছেলের বিয়ে দিয়ে বরযাত্রীদের নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মুর্শিদাবাদের কুরুন্নরুণ গ্রামের বাসিন্দা মধুসূদন হাজরা। আচমকা বাসের মধ্যেই নিয়ে পড়ে গেলে বুকে এবং কোমরে আঘাত পান তিনি। বরযাত্রী এবং বাড়ির লোকেরা তাঁকে নিয়ে যান কীর্ণাহার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তাঁদের অভিযোগ, অনেক ডাকাডাকির পরে এক নার্স ইন্দ্রানী মজুমদার এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ভীষ্মদেব হাজরা তাঁদের সাফ জানিয়ে দেন, চিকিৎসক ছুটিতে আছেন। তাই এখানে কোনও চিকিৎসা হবে না। ওই কথা শোনা মাত্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন বরযাত্রীর দল। ইন্দ্রনীদেবী এবং ভীষ্মদেব হাজরাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি ঘরে রাতভর আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
এর পরেই রবিবার সকাল থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে সিউড়ি-কাটোয়া সড়কও অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের সঙ্গে সামীল হন স্থানীয় বাসিন্দা ও বাসকর্মীরাও। পরে কীর্ণাহার চৌরাস্তা মোড়ে পথ অবরোধ শুরু করেন।
নানুরে অবরোধের ছবিটি তুলেছেন সোমনাথ মুস্তাফি।
এর ফলে সিউড়ি-কাটোয়া, বোলপুর-কীর্ণাহার-সহ বিভিন্ন রুটের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মধুসূদনবাবুর বৌমা সাবিত্রী হাজরা এবং ওই গ্রামেরই বাসিন্দা রাজেন্দ্র পালদের ক্ষোভ, “রোগীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতেই নার্স এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সাফ জানিয়ে দেন, চিকিৎসক ছুটিতে আছেন। তাই এখানে কোনও চিকিৎসা হবে না। রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন। আমরা ওই কথাগুলি তাঁদের লিখে দিতে বললে তাঁরা অস্বীকার করেন। তখন গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।”
বাস চালক সমীরণ মুখোপাধ্যায়, এলাকার বাসিন্দা চাঁদকুমার পাল বলেন, “এক সময় ১০ শয্যার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা মিলত। এখন সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে কাজ করে চিকিৎসকেরা চলে যান। বাধ্য হয়ে চিকিৎসার জন্য আমাদের ৩০-৩৫ কিলোমিটার দূরে ছুটতে হয়।” ইন্দ্রানীদেবী এবং ভীষ্মদেব হাজরা বলেন, “চিকিৎসক না থাকায় আমাদের প্রায়ই এই ভাবে রোগীর বাড়ির লোকজনের ক্ষোভের শিকার হতে হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোন লাভ হয়নি।” সংশ্লিষ্ট নানুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রিজিয়া সিদ্দিকী ফারুকী বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২ জন চিকিৎসক থাকার কথা। তাঁদের মধ্যে শনিবার সুদীপ ভট্টাচার্য নামে এক চিকিৎসক দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু তিনি আমাকে কিছু না জানিয়েই কর্তব্যরত অবস্থায় তিনি চলে গিয়েছেন। অন্য জনও ছুটি না নিয়ে গিয়েছেন। সুদীপবাবুকে ফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। এমন কী তাঁর বোলপুরের বাড়িতে গাড়ি পাঠানো সত্ত্বেও তিনি আসেননি।” তিনি জানান, এই অবস্থায়, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সাময়িক ভাবে এক জন চিকিৎসককে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার কথা বিস্তারিত ভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর পরে নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বার বার সুদীপবাবুর ফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.