বন্যপ্রাণ-৩ বিভাগের ৩৩০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জলপাইগুড়ি জেলার আলিপুরদুয়ার মহকুমায়। অথচ ওই বনবিভাগের ডিভিশন অফিস কোচবিহারে। এই পরিস্থিতিতে নজরদারির সমস্যা এড়াতে কোচবিহারের ডিএফও ওমপ্রকাশকে সপ্তাহে ২ দিন করে মাদারিহাটে সহকারী ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেনের অফিসে বসার নির্দেশ দিলেন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। সম্প্রতি বন বিভাগের জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের ইস্ট তোর্সা রেঞ্জে চোরাশিকারীদের তাড়া করে বনকর্মীরা রাইফেল ও কাতুর্জ আটক করেন। ওই ঘটনার পরে বিভিন্ন মহল থেকে ডিএফও অফিস কেন কোচবিহারে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বনমন্ত্রী বলেন, “ডিএফও অফিস ইচ্ছে হলেই সরানো যায় না। নানা পরিকাঠামোগত সমস্যা থাকে। তবে কোচবিহারের ডিএফও যাতে সপ্তাহে ২ দিন করে মাদারিহাটে সহকারী ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেনের দফতরে অথবা নীলপাড়া রেঞ্জ অফিসে বসেন সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
ডিভিশন অফিস কোচবিহারে হওয়ায় নজরদারিতে সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন কোচবিহারের ডিএফও ওমপ্রকাশও। তিনি বলেন, “পুরো ডিভিশনটাই আলিপুরদুয়ার মহকুমায় পড়েছে। কোচবিহার থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় বনাঞ্চল পরিদর্শনে সমস্যা হয়।” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে বন দফতরের বন্যপ্রাণ বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দফতর এটি। এক শৃঙ্খ গন্ডার ছাড়াও হাতি, বাইসন-সহ নানা জন্তু রয়েছে। নজরদারির জন্য জঙ্গলে যেতে বনকর্তাদের যেমন সমস্যা হচ্ছে তেমনই বিভিন্ন বিট এবং রেঞ্জ অফিসারদের কোচবিহারে আসার প্রয়োজন হলে জঙ্গলে নজরদারি ব্যহত হচ্ছে। জ্বালানি খরচও বাড়ছে। চিলাপাতা ইকো ট্যুরিজম সোসাইটির সম্পাদক গণেশ শা বলেন, “ডিভিশন অফিস কোচবিহারে হওয়ায় বন সুরক্ষা কমিটির বৈঠকও নিয়মিত হয় না। বনবস্তির উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে।”
এ দিন বনমন্ত্রী কোচবিহারে ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের কোচবিহার জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে অস্থায়ী বনকর্মীদের স্থায়ী চাকরি নিয়ে আলোচনা হয়। ইউনিয়নের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় বন দফতরের ৫৮০ জন অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে পূর্বতন বাম সরকার টালবাহানা করেছে। বন্য প্রাণির হামলায় মৃত কর্মীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়নি। বাম সরকারের ঘনিষ্ঠ বিট এবং রেঞ্জ অফিসাররা একই জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন। সংগঠনের কোচবিহারের জেলা সম্পাদক স্মরজিৎ সরকার বলেন, “অস্থায়ী কর্মীদের চাকরির সমস্যা ছাড়াও নানা বিষয়ে মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। উনি সমস্যা মেটাতে আশ্বাস দিয়েছেন।” বনমন্ত্রী বলেন, “কলকাতায় গিয়ে ফাইলপত্র দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |