বৃষ্টির দেখা নেই, তীব্র জলসঙ্কট হুড়ার গ্রামে
গ্রামের বাসিন্দারের স্মৃতিতে এখনও টাটকা রয়েছে গত বারের ঘটনা। পানীয় জলের আকাল চলছিল হুড়া ব্লকের মাগুড়িয়া গ্রামে। এ বছরও একই চিত্র দেখা গিয়েছে। শুকোতে শুকোতে প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে পুকুরের জল। ঘোলা এবং সবুজ হয়ে যাওয়া জলেই কোনও রকমে চলছে স্নান, কাপড়কাচা, বাসনধোয়া। সেই পুকুরেই স্নান করছে গবাদি পশুরা। শুধু তাই নয়, ওই পুকুরের জলই পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করেন মাগুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের বধূ ঊষা সহিস, আশালতা মাহাতোদের কথায়, “জলের বড্ড কষ্ট। পানীয় জল তো দূরের কথা, স্নানের জলও নেই। এই নোংরা জলে কাজ চালাতে হচ্ছে।”
কমবেশি আট হাজার মানুষের বাস। সহিসপাড়া, দাসপাড়া, আনসারিপাড়া, মাহাতোপাড়া, ব্রাহ্মণপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি পাড়া নিয়ে এই গ্রাম। গোটা গ্রামে কিয়াগড়িয়া, জলধরা, চারকুনিয়া, কমলিয়া বাঁধ-সহ একাধিক ছোটবড় পুকুরও রয়েছে। গ্রামবাসী বীরু সহিস, বিমল সহিসরা বলেন, “পুকুর থাকলে কী হবে! গত বছর বৃষ্টি হয়নি। তার আগের বছরও সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। ফলে এ বার জলের তীব্র হাহাকার দেখা দিয়েছে।” তাঁরা জানান, এক হাঁড়ি ও এক বালতি পানীয় জল সংগ্রহের জন্য হয় রাস্তার ধারে নলকূপ, না হলে গ্রাম থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে ঝর্না রয়েছে, সেখানে যেতে হয়। গৃহবধূ আশালতা মাহাতোর কথায়, “ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নলকূপে ভিড় লেগে যায়। সকাল সকাল গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হয়, নইলে জল মিলবে না।”
এই জলেই চলে সব কাজ। ছবি: প্রদীপ মাহাতো
গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ মাহাতো বলেন, “গ্রামে কয়েকটি নলকূপ আছে। কিন্তু তাতে সব সময় জল পাওয়া যায় না। নলকূপ থেকে জল না মিললে সেই ঝর্নায় যেতে হয়। এই রোদে দূর থেকে জল আনা কষ্টের!”
পানীয় জলের আকালের ফলে গত বছর হঠাৎই আন্ত্রিক, মহামারির আকার নেয় গ্রামে। আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক গ্রামবাসীকে হুড়া গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতর মেডিক্যাল টিম পাঠাতে বাধ্য হয়েছিল গ্রামে। আন্ত্রিকের উৎস খুঁজতে গিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা দেখেছিলেন, পুকুরের নোংরা জলে বাসন, কাপড় ধোওয়াই আন্ত্রিক ছড়ানোর প্রধান কারণ। প্রদীপবাবু বলেন, “এ বারও সেই একই ছবি।” গ্রামে তীব্র জলাভাবের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মাগুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের বাসুদেব মণ্ডল। তিনি বলেন, “শুধু ওই গ্রামে নয়, গোটা এলাকাতেই একই সমস্যা। বিডিও-র নির্দেশ মতো আমরা কুয়ো সংস্কারে হাত দিয়েছি, যাতে বৃষ্টির জল ধরে রাখা যায়।” হুড়ার বিডিও বিশ্বনাথ রক্ষিত বলেন, “আমি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের জল সমস্যার বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিতে বলেছি। আমি ওই গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আসব।”
Previous Story Purulia Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.