|
|
|
|
ভোটেই শুধু প্রতিশ্রুতি, মিটছে না জলের সঙ্কট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাঁকুড়া |
গরমের তীব্র দাবদহ। তার মধ্যে পানীয় জলের সঙ্কটে নাকাল বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দারা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট চলছে। কোথাও পাইপ লাইনের ‘ট্যাপ’ থেকে সরু জল পড়ছে। এর মধ্যে নোংরা দুগর্ন্ধযুক্ত জল আসার অভিযোগও রয়েছে। পানীয় জলের সঙ্কট নিয়ে অভিযোগ তুলে খোদ পুরপ্রধানের ওয়ার্ডের বাসিন্দারা মাস দেড়েক আগে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
পুরপ্রধান তৃণমূলের শম্পা দরিপার নিজের ওয়ার্ড ১০ নম্বর। ওই ওয়ার্ডের পশ্চিম অরবিন্দনগর এলাকায় মাটির নীচে কয়েক ফুট গর্ত করে নলবাহী জল তুলতে হয় বাসিন্দাদের। এমনই অভিযোগ তুলে পশ্চিম অরবিন্দনগর নাগরিক কমিটি পুরপ্রধানকে স্মারকলিপি দিয়েছে। |
|
এভাবেই জল নিতে হয় বাসিন্দাদের। ছবি: অভিজিৎ সিংহ। |
স্থানীয় বাসিন্দা অজিত কর, বীরেন সরকারদের অভিযোগ, “নলবাহী জল এলাকায় খুব কম বেগে আসে। সেই জন্য ২-৩ ফুট নিচে গর্ত করে সেখানকার ‘ট্যাপ’ থেকে সারা বছর জল সংগ্রহ করতে হয়।” এলাকার বাসিন্দা বেলা মুখোপাধ্যায়, চায়না রায়, পুষ্পিতা সিংহ মহাপাত্রদের অভিযোগ, “গর্ত থেকে জল তোলার সময় পড়ে গিয়ে আমরা আঘাত পেয়েছি। এ ভাবে জল তোলা খুবই বিপজ্জনক। পুর কর্তৃপক্ষ সব জানে। তবুও বছরের পর বছর আমাদের এই সমস্যায় থাকতে হচ্ছে।” বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে ওই এলাকায় জলের গতি বাড়াতে হবে। শহরের নতুনচটি, যোগেশপল্লী, কাঠজুড়িডাঙা প্রভৃতি এলাকাতেও জল নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। অন্য দিকে, পাটপুর, ইদগামহল্লায় সম্প্রতি জল সরবরাহ অনিয়মিত হওয়ার অভিযোগ তুলে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান, রাস্তা অবরোধও করেছিলেন।
এই শহরে পানীয় জলের আকাল নতুন কিছু নয়। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, “পুরসভা, বিধানসভা বা লোকসভা-নির্বাচন যাই হোক না কেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে শহরের বাসিন্দারা একটাই প্রতিশ্রুতি পান ‘পানীয় জলের সঙ্কট মোচন’। কেউ বলেছিলেন, দামোদর নদ থেকে পাইপলাইন বসিয়ে জল এনে এই শহরের জল সমস্যা মেটাবেন। কেউ বা বলেছিলেন, জল সমস্যা মেটানোর জন্য শহরের মাষ্টারপ্ল্যান তৈরি করা হবে। কিন্তু, ভোট আসে ভোট যায়, সমস্যা আর মেটে না। পরবর্তী নির্বাচনের যথারীতি সেই একই বিষয় থেকে যায়।”
এ বছর গ্রীষ্মের মধ্যে মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। তাই এখন জলের আকালের তীব্রতা কিছুটা কম। কিন্তু, জলের সমস্যা মেটানোর জন্য এখনও কেন বৃষ্টির ওপরেই ভরসা করতে হয় বাঁকুড়া পুরসভাকে, প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। শহরের দুই পাশের গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদের জল আটকে কেন জল সমস্যা মেটানোর জন্য স্থায়ী কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে না?
পুরপ্রধানের দাবি, “দ্বারকেশ্বর ও গন্ধেশ্বরী নদীর চরের নীচ থেকে জল তুলে তা বাড়ি বাড়ি, অলিতে গলিতে পাইপলাইনে পাঠানো হয়। বৃষ্টি না হলে নদীগুলির নীচে জলের স্তরও নেমে যায়। তাই গ্রীষ্মে জলের সমস্যা বাড়ে।” তিনি জানান, গত বছরের অনাবৃষ্টি এ বারের জল সঙ্কটের অন্যতম বড় কারণ। তাও পুরসভা বিভিন্ন এলাকায় সাধ্যমতো জল সরবরাহ করার চেষ্টা করছে। |
|
|
|
|
|