বিষয়: ভারতীয় রেল
ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম ট্রেন চলেছিল বম্বে (এখন মুম্বই) থেকে ঠানে, ২১ মাইল। মুম্বইয়ের সঙ্গে ঠানে, কল্যাণ এবং ঠালঘাট ও ভোরঘাট-এর রেল সংযোগ তৈরি করার কথা প্রথম ভেবেছিলেন জর্জ ক্লার্ক। বম্বে সরকারের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ক্লার্ক ১৮৪৩ সালে ভান্ডুপ গিয়েছিলেন। তখনই এই রেলপথের পরিকল্পনা তাঁর মাথায় আসে। বম্বে-ঠানে রেল চলাচলের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল। ১৪টি কামরা ৪০০ বিশেষ ভাবে আমন্ত্রিত যাত্রী নিয়ে বেলা সাড়ে তিনটেয় বোরি বন্দর থেকে রওনা দেয়। বহু মানুষ সমবেত হয়ে জয়ধ্বনি দিয়েছিল সে দিন, একুশটি তোপধ্বনিও যুক্ত হয়েছিল তার সঙ্গে।
লাইফলাইন এক্সপ্রেস বা জীবনরেখা এক্সপ্রেস একটি চলমান রেল হাসপাতাল। এই ট্রেনের
শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত কামরাগুলি বিশেষ ভাবে তৈরি। প্রতিটি ট্রেনে দু’টি করে সার্জিক্যাল
অপারেশন থিয়েটার আছে। রয়েছে তিনটি অপারেটিং টেবিল, একটা জীবাণুমুক্ত করার ঘর,
রোগীদের জন্য কিছু ওয়ার্ড, অন-বোর্ড পাওয়ার জেনারেটর, একটা প্যান্ট্রি কার, ওষুধপত্র
রাখার জায়গা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জায়গা। এটি চালু হয়েছিল ১৯৯১ সালের ১৬ জুলাই।
জানো কি
১৮৫৪ সালের ১৫ অগস্ট। হাওড়া স্টেশন ছেড়ে প্রথম যাত্রিবাহী ট্রেন রওনা দিল হুগলির দিকে। দূরত্ব ২৪ মাইল। এর সঙ্গেই সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য খুলে গেল ‘ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’র প্রথম বিভাগ। এটাই ছিল উপমহাদেশের পূর্ব ভাগে রেল চলাচলের আনুষ্ঠানিক সূচনা।

অখিলচন্দ্র সেন ১৯০৯ সালে সাহেবগঞ্জের রেলওয়ের বিভাগীয় দফতরে একটি চিঠি লিখেছিলেন। এটা এখন সাজানো আছে নয়াদিল্লির রেলওয়ে মিউজিয়মে। চিঠিটার এক ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। কেন জানো? কারণ এর থেকেই ট্রেনে শৌচাগার চালু হয়।

ভারতীয় রেলওয়ের দেড়শো বছর পূর্তিতে কাকে ম্যাসকট বানানো হয় জানো? কার্টুন হাতি ‘ভোলু’কে।

গাঁধীজি দেশের নানান প্রান্তে যাওয়ার জন্য তৃতীয় শ্রেণির কামরা ব্যবহার করতেন। মৃত্যুর পর সেই তৃতীয় শ্রেণির কামরাতেই তাঁর অস্থিভস্ম এলাহাবাদের ত্রিবেণীতে নিয়ে যাওয়া হয় সৎকারের জন্য। কামরার নম্বর ২৯৪৯। দিনটা ১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।

১৯৮২ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে চালু হয় ‘প্যালেস অন হুইলস’। ১৪টি কামরা। প্রতিটির নামকরণ করা হয়েছিল পূর্বতন রাজপুত রাজ্যগুলির নামে আলওয়ার, ভরতপুর, বিকানীর, বুঁদি, ঢোলপুর, ডোঙ্গরগড়, জয়সলমীর, জয়পুর, ঝালওয়ার, জোধপুর, কিষাণগড়, কোটা, শিরোহী এবং উদয়পুর। কামরার অন্দরসজ্জাও সেই রাজকীয় অতীতের সঙ্গে সম্পূর্ণ মানানসই।

১৯৬৯ সালের ১১ মার্চ। ভারতের যাত্রিবাহী রেল পরিষেবার ইতিহাসে খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। নয়াদিল্লি থেকে হাওড়ার উদ্দেশে রওনা দিল প্রথম রাজধানী এক্সপ্রেস। সম্পূর্ণ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। ফলে ভারতীয় রেলওয়ের ঘণ্টা-প্রতি ১০০ কিলোমিটার গতির বাধা গেল ভেঙে। গতি আর স্বাচ্ছন্দ্যের দিক দিয়ে এ ছিল এক নতুন যুগের সূচনা। প্রথম দিকে রাজধানীর কোচসংখ্যা ছিল ন’টি দু’টি জেনারেটর কার কাম ব্রেক ভ্যান, একটি শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত প্যান্ট্রি কার এবং ছ’টি শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার।

ভারতের প্রথম ভূগর্ভস্থ রেলব্যবস্থা কলকাতা মেট্রো বা ক্যালকাটা মেট্রো। কলকাতায় মেট্রো চলাচল শুরু হয় ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে। তবে পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সম্পূর্ণ পথ (দমদম থেকে টালিগঞ্জ) চলাচল শুরু হয় ১৯৯৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর এটি ভারতীয় রেলওয়ের সতেরোতম অঞ্চলে (জোন) পরিণত হয়েছে।

সংস্কৃত, হিন্দি এবং আরও কিছু ভারতীয় ভাষা অনুযায়ী ‘শতাব্দী’ শব্দটির অর্থ এক শতক। ১৯৮৮ সালে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু’র জন্মশতবর্ষে প্রথম শতাব্দী ট্রেন চালু হয়।

‘প্রেসিডেনশিয়াল সেলুন’ কোনও সাধারণ ট্রেন নয়। এটি মাত্র দু’টি কামরা (৯০০০ এবং ৯০০১ নম্বর) নিয়ে তৈরি। এক সময় ভারতের রাষ্ট্রপতির ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত থাকত এই সেলুন। ১৯৫৬ সালে কোচ দু’টি নির্মিত হয়েছিল। নয়াদিল্লি স্টেশনে এগুলি রাখা থাকে। ষাট এবং সত্তরের দশকের শুরুতে ভারতীয় রাষ্ট্রপতিদের অনেকেই নিয়মিত ভাবে এই প্রেসিডেন্সিয়াল সেলুন ব্যবহার করতেন। সেলুনটি ঠিক এই ভাবে শেষ বারের মতো ব্যবহার হয়েছিল ২০০৩ সালের ৩০ মে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম এতে চড়ে হরনৌত থেকে পটনা যান।

‘দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন’ যৌথ ভাবে স্থাপন করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং দিল্লি সরকার, ১৯৯৫ সালে। ১৯৯৮ সালে নির্মাণ শুরু হয়। ‘রেড লাইন’-এর প্রথম অংশটি খুলে দেওয়া হয় ২০০২ সালে। ২০০৪ সালে চালু হয় ‘ইয়েলো লাইন’, ২০০৫ সালে ‘ব্লু লাইন’ এবং ২০০৯ সালে এর শাখা লাইনটি খুলে দেওয়া হয়। ২০১০ সালে চালু হয়েছে ‘গ্রিন’ এবং ‘ভায়োলেট লাইন’।

আজ প্রায় এক কোটিরও বেশি মানুষ প্রতি দিন ভারতীয় রেলে যাতায়াত করেন। এর মধ্যে আশি লক্ষ মানুষ কেবল মুম্বইয়ের শহরতলিতে যাতায়াত করেন। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, ১৮৬৭ সালের এপ্রিলে মুম্বইয়েই প্রথম শহরতলির রেল পরিষেবা চালু হয়। তখন ছিল বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের যুগ। গ্রান্ট রোড আর বেসিন রোডের মধ্যে দু’দিকেই একটি করে ট্রেন চলত। ১৮৭০ সালে এটি চার্চগেট পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়।
বলো তো
‘ট্রেন টু পাকিস্তান’ উপন্যাসটি কার লেখা?
ভারতে সবচেয়ে পুরনো বাষ্পচালিত রেল ইঞ্জিনটির নাম কী?
ইউনেস্কো একে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’-এর স্বীকৃতি দিয়েছে। এর আগে আর একটিমাত্র রেল ব্যবস্থাই এই সম্মান পেয়েছে। কোন রেল ব্যবস্থা?
স্বাধীন ভারতে প্রথম রেল বাজেট কে পেশ করেন?
ভারতের প্রথম ওয়াই-ফাই যুক্ত ট্রেনটির নাম কী?
উত্তর
১) খুশবন্ত সিংহ ২) দ্য ফেয়ারি কুইন ৩) দ্য দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে
৪) জন মাথাই ৫) দ্য গোল্ডেন চ্যারিয়ট
Previous Item Prostuti Next Item


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.