|
|
|
|
উন্নত কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মুর্শিদাবাদে |
অনল আবেদিন • রঘুনাথগঞ্জ |
উন্নত কৃষি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে না-পারলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের বহু মানুষকে অনাহারে দিন কাটাতে হবে বলে সতর্ক করে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। এই উন্নত প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিতে রাজ্যের মধ্যে প্রথম ‘কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ গড়ে তোলা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের আহিরণে। এই ঘোষণা করে প্রণববাবু বলেন, “এর জন্য প্রয়োজনীয় ৮ একর জমি পাওয়া গিয়েছে সেখানে। কত তাড়াতাড়ি কেন্দ্রটি চালু করা যায়, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। এটি হবে দেশের মধ্যে দশম কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। মুর্শিদাবাদ ছাড়াও বীরভূম, মালদহ-সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গের চাষিরা এর থেকে উপকৃত হবেন।” এটি আইটিসি-র সহযোগিতায় গড়ছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক। |
 |
মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। রঘুনাথগঞ্জে ব্যাঙ্কের উদ্বোধনে। নিজস্ব চিত্র। |
প্রণববাবু বলেন, “পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই যে পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজন হয়, তা তারা উৎপাদন করতে পারে না। ১২০ কোটি মানুষের দেশ ভারতবর্ষেও সেই একই অবস্থা। তাই উন্নত কৃষি প্রযুক্তির উপরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে যেভাবে উন্নত কৃষি প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে কৃষি ক্ষেত্রে সবুজ বিপ্লব ঘটিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা-সহ পূর্বাঞ্চলে তার কিছুই হয়নি। যখন ভারতের জনসংখ্যা ছিল ৬০ কোটি, তখন দেশে ৬ কোটি মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন হত। এখন জনসংখ্যা ১২০ কোটি, খাদ্য উৎপাদন ৪ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি মেট্রিক টনে। তবু সমস্যা মেটেনি।” তিনি বলেন, “কারণ যত দিন যাচ্ছে জমির পরিমাণ কমছে। কৃষি জমি ব্যবহার করে গড়ে উঠছে কল-কারখানা, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, রাস্তা। ফলে কম জমি থেকেই খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। আর এর জন্যই চাই উন্নত কৃষি প্রযুক্তি।”
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী শনিবার মুর্শিদাবাদের তালাই গ্রামে রাজ্যে পঞ্জাব ন্যাশনাল বাঙ্কের ৭১ তম শাখাটির উদ্বোধন করেন। সেই সঙ্গে এ দিনই উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির অস্থায়ী শাখারও উদ্বোধন করেন তিনি।
ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান কে আর কামাথ জানান, সারা দেশে ব্যাঙ্কের ৫৪০০-রও বেশি শাখা রয়েছে। এ পর্যন্ত ২৬৮৩.৮১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে ব্যাঙ্ক। এ বছর লাভ করেছে ৩৩.৯৯ কোটি টাকা। এ রাজ্যে ১২টি জেলায় ৭০টি ব্যাঙ্কের শাখা চালু রয়েছে।
কৃষির উন্নয়নে কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার কাজ শুরু হয়েছে ২০০৩ সালে। দেশের ৮টি রাজ্যে এই ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে ৯টি। পশ্চিমবঙ্গে এটাই প্রথম। এ পর্যন্ত ৮১৫২৯ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৮৪১৮ জন মহিলা। জানানো হয়েছে, তালাই গ্রামটিকে মডেল গ্রাম করে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। |
|
|
 |
|
|