এ বার পাঁশকুড়ায় সিপিএম নেতার বাড়ির পিছনে অস্ত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
পশ্চিমের অস্ত্র উদ্ধারের রেশ এসে পড়েছে পূর্বেও। রবিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার এক সিপিএম নেতার বাড়ির পিছন থেকে উদ্ধার হল ৬টি বোমা ও একটি হাতকামান।
অস্ত্র রয়েছে এই দাবিতে রবিবার ভোর রাত থেকেই পাঁশকুড়ার পশ্চিম প্রান্তে হাউর এলাকার মুরলীচক গ্রামের সিপিএম নেতা ভগীরথ দোলইয়ের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। খবর পেয়ে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায় এবং অস্ত্র উদ্ধার করে। তবে, সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য ভগীরথবাবুকে পাওয়া যায়নি বাড়িতে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর স্ত্রী শ্রীমতীদেবীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে গ্রামের আরও তিন সিপিএম সমর্থককে। |
|
উদ্বার হওয়া বোমা। নিজস্ব চিত্র। |
১৯৯৮ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা লাগোয়া বাক্সী খালের ধারে এই মুরলীচকেই পুলিশের গুলিতে দুই বাসিন্দার মৃত্যুকে ঘিরে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। সিপিএমের লোকেরা সন্ত্রাস চালালেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ ছিল গ্রামবাসীদের। প্রতিবাদে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখাতে গেলে গণ্ডগোল বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালালে খালের অপর প্রান্তে বসে থাকা দু’জনের মৃত্যু হয় বেঘোরে। সেই সময় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এসেছিলেন এই এলাকায়। মাঝে এতগুলো বছর কেটে গেলেও পুরনো ক্ষোভের আগুন নেভেনি। এ দিন কুমরপুর হটেশ্বর হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ভগীরথবাবুর বাড়ির পিছন থেকে অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার পরে স্থানীয় আরও কয়েকজন সিপিএম কর্মীর বাড়িতে তল্লাশির দাবি জানান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। যদিও পুলিশ সে কথায় কান দেয়নি।
এ দিকে, অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানার অভিযোগ, “ওই এলাকায় কয়েক বছর আগে সুবল দোলই নামে আমাদের এক সমর্থককে অপহরণ করেছিল সিপিএমের লোকেরা। তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি আর। ভগীরথবাবুও জড়িত ছিল ওই ঘটনায়। এত দিন ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারেনি। অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করার দাবি জানিয়েছি আমরা।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহির পাল্টা অভিযোগ, “পরিকল্পিত ভাবে ভগীরথবাবুর বাড়ির পিছনে অস্ত্র লুকিয়ে রেখে তৃণমূল নাটক করছে। আমরাও প্রকৃত ঘটনা জানতে তদন্তের দাবি জানিয়েছি পুলিশকে।” |
|