|
|
|
|
মেদিনীপুর সদর ব্লক |
টাকা পড়ে, হচ্ছে না নলকূপের কাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
টাকা পড়ে আছে। পরিকল্পনাও চূড়ান্ত। কিন্তু তাও কাজ এগোচ্ছে না। কারন, কোনও ঠিকাদার সংস্থাই কাজের বরাত নিতে চাইছে না। বরং জানিয়ে দিচ্ছে, এমন এলাকায় কাজের ‘সুস্থ’ পরিবেশ নেই। শ্রমিকরা কাজ করতে চাইছেন না। এরফলে এক দিকে যেমন বিপাকে পড়েছে প্রশাসন, অন্য দিকে তেমন সমস্যায় পড়েছেন সংশ্লিষ্ট গ্রামের মানুষ। কারন, যে কাজের জন্য তাঁরা প্রশাসনের কাছে দরবার করেছে, প্রয়োজনীয় অর্থ মঞ্জুর হলেও সেই কাজ এগোচ্ছে না। ফলে সমস্যা সমাধানও অধরা! জঙ্গলমহলেই এমন সমস্যা সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রশাসনকে।
মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া ও তার আশপাশে একাধিক জল প্রকল্প রুপায়িত হওয়ার কথা। এখানে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। গ্রীষ্মে জল- সংকট আরও তীব্র হয়। সমস্যা সমাধানের বেশ কয়েকবার প্রশাসনের কাছে দরবার করেছেন গ্রামবাসীরা। পঞ্চায়েত সমিতিকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল। শেষমেশ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে জল প্রকল্পের পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। সেই পরিকল্পনা চূড়ান্তও হয়। কিন্তু এই পর্যন্তই। এরপর আর কাজ এগোয়নি এতটুকু। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, চাঁদড়ার ঢঢরাশোল, বনামচাঁটি সহ তিনটি গ্রামে গভীর নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য চলতি বছরের শুরুতে দরপত্রও আহ্বান করা হয়। জানুয়ারির মাসের ১০ তারিখ এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। কিন্তু কোনও ঠিকাদার সংস্থা কাজ করতে ইচ্ছুক হচ্ছে না- দেখে ফের ওই মাসেরই ৩১ তারিখ দ্বিতীয় বারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু এরপরও সেই একই পরিস্থিতি। চাঁদড়া ও তার আশপাশে গিয়ে জল প্রকল্পের কাজ করতে বেঁকে বসেন ঠিকাদাররা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ‘অশান্ত’ এলাকায় গিয়ে শ্রমিকরা কাজ করতে চাইছেন না। ফলে এ ক্ষেত্রে তাঁদের করনীয় কিছু নেই। মূলত নিরাপত্তার কথা ভেবেই ঠিকাদার সংস্থাগুলো বেঁকে বসে। শুধু সদর ব্লকই নয়, এক সময়ে শালবনি, গোয়ালতোড়, লালগড়ের ক্ষেত্রেও জেলা প্রশাসনকে এমন সমস্যা মুখোমুখি হতে হয়েছে। ফলে ব্যাহত হয়েছে রাস্তা তৈরি, গভীর নলকূপ খনন প্রভৃতি উন্নয়নমূলক কাজ। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ঢঢরাশোল বনামচাঁটির পাশাপাশি মেদিনীপুর সদর ব্লকে নতুন করে আরও ২১টি গভীর নলকূপ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু কে কাজ করবে, সে নিয়েই ঘোর সংশয় রয়েছে। এক সময়ে লালগড় ছাড়িয়ে সদর ব্লকেও মাওবাদীদের প্রভাব বাড়ে। তখন পিছু হটে সিপিএম। পরে এখান থেকেই শুরু হয়ে ‘ঘুরে দাঁড়ানো’র লড়াই। মাস খানেকের মধ্যেই ‘হৃত’ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় সিপিএম।
অবশ্য এখন পরিস্থিতি বদলেছে। রাজ্যে পালবদলের পর ধীরে ধীরে এই সব এলাকাতেও শান্তি ফিরে আসছে। প্রশাসনের আশা, এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে উন্নয়নমূলক কাজ এগোনো আর অসম্ভব হবে না। তাই নতুন করে ফের প্রকল্প রুপায়ণের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। মেদিনীপুর সদরের বিডিও অয়ন নাথ বলেন, “একাধিক গভীর নলকূপ তৈরির জন্য আগেই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদাররা কাজ করতে চাননি। ফলে প্রকল্পের কাজ এগোনো সম্ভব হয়নি। এ বার ফের নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।” প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামবাসীদেরও আশা, উন্নয়নমূলক কাজ এগোতে আর তেমন কোনও সমস্যা হবে না। |
|
|
|
|
|